ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

আসামি ছিনতাইয়ের মামলায় দুজন রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:১৩, ৫ এপ্রিল ২০২১   আপডেট: ২১:১৬, ৫ এপ্রিল ২০২১
আসামি ছিনতাইয়ের মামলায় দুজন রিমান্ডে

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে এক আসামিকে ছিনতাইয়ের মামলায় বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লাসহ দুজনের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রিমান্ডে নেওয়া অপর আসামি সংগঠনটির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার ক্রীড়া সম্পাদক আরেফিন হোসেন। তাওহিদুল ইসলাম শিপন নামের আরেক আসামির রিমান্ড ও জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সোমবার (৫ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মইনুল ইসলাম এ আদেশ দেন।

এদিন তিনজনকে আদালতে হাজির করে পাঁচ দিন করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) রমনা জোনাল টিমের উপ-পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম খান।

আসামিপক্ষে আইনজীবী সিরাজুল ইসলাম, খাদেমুল ইসলাম ও মো. পারভেজ রিমান্ড বাতিলপূর্বক জামিন আবেদন করেন। জামিন শুনানিতে তারা বলেন, ‘বাড্ডায় ভিপি নুরের সঙ্গে একটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে উৎসুক মানুষের জমায়েত হয়। শিপনও সেখানে যান। তিনি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন শিপন। আরেফিন হোসেন এইচএসসি পাস করে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। সে ব্যক্তিগত কাজে ওই এলাকায় যায়। এই মামলার এজাহারে তাদের নাম নেই এবং ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এজাহারভুক্ত অপর আসামি বিন ইয়ামিন মোল্লা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের মেধাবী ছাত্র। তিনি আসামিকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়ার সঙ্গে জড়িত নন। ঘটনার সময় ওই এলাকায় তিনি ছিলেন না। তাই আসামিদের রিমান্ড বাতিলপূর্বক জামিন প্রার্থনা করছি।’

রাষ্ট্রপক্ষে আদালতে সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) নিজাম উদ্দিন জামিনের বিরোধিতা করেন।

উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত বিন ইয়ামিন মোল্লা ও আরেফিন হোসেনের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তাওহিদুল ইসলাম শিপনের রিমান্ড ও জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

এদিকে, গত ২৭ মার্চ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশকালে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদের কর্মীদের বিরুদ্ধে করা মামলায় রোকেয়া জাবেদ মায়া নামের এক আসামিকে দুই দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করা হয়। ডিবির রমনা জোনাল টিমের উপ-পরিদর্শক শাহজাহান মিয়া তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জামিন আবেদন করেন। জামিন শুনানিতে আইনজীবীরা বলেন, ‘এই আসামি স্নাতকোত্তর পর্বের শিক্ষার্থী ও একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৭ ধারা অনুযায়ী, একজন নারী আসামিকে জামিন অযোগ্য ধারায় জামিন দেওয়ার এখতিয়ার আদালতের আছে। তাই আমরা মানবিক বিবেচনায় নারী আসামি হিসেবে তার জামিনের প্রার্থনা করছি।’

রাষ্ট্রপক্ষে নিজাম উদ্দিন জামিনের বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, ‘রিমান্ডে আসামির কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তাই এ পর্যায়ে জামিন দেওয়া হলে তদন্তে বিঘ্ন ঘটবে।’ শুনানি শেষে আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে গত ২৫ মার্চ মতিঝিলে মিছিল করে ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদ। এ সময় পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এ সময় আবুল কালাম আজাদ নামের এক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ। ওই ব্যক্তিকে ঢাকা মেডিক‌্যাল কলেজে পুলিশ চিকিৎসা দিতে নিয়ে গেলে ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদের কর্মীরা তাকে পুলিশের কাছ থেকে নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় একই দিনে শাহবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন পল্টন মডেল থানার এসআই রায়হান করিব। মামলায় ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রাশেদ খান, যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান, ঢাবি শাখার সাবেক সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, বর্তমান সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আকতার হোসেন, ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেন, কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক মশিউর রহমান, সোহরাব, যুব অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক আতাউল্লাহসহ ১৯ জনকে আসামি করা হয়।

ঢাকা/মামুন/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়