ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

‘সরকার হেফাজতের মামলা জিইয়ে রেখেছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৫৮, ২৬ এপ্রিল ২০২১  
‘সরকার হেফাজতের মামলা জিইয়ে রেখেছে’

সরকার হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো জিয়িয়ে রেখেছে বলে অভিযোগ করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ। তিনি বলেছেন, ‘হেফাজতের সঙ্গে সরকারের যখন সম্পর্কের অবনতি হয়, তখন তাদের ধরে নিয়ে আসবে। আবার যখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় আসবে, তখন আবার তাদের ছেড়ে দেবে।’

সোমবার (২৬ এপ্রিল) আদালতে হেফাজতে ইসলামের বিরুদ্ধে রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন আসামিপক্ষের আইনজীবী।

সোমবার হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের আরও সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এর মধ্যে ২০১৩ সালে রাজধানীর মতিঝিলে হেফাজতের নেতাকর্মীদের তাণ্ডবের ঘটনায় পল্টন থানার মামলায় চার দিন এবং সম্প্রতি মোদিবিরোধী কর্মকাণ্ডের ঘটনায় মতিঝিল থানার মামলায় তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদবীর ইয়াছির আহসান চৌধুরীর আদালত এ আদেশ দেন।

একই আদালত এদিন হেফাজত নেতা মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীবের পল্টন থানার দুই মামলায় ৭ দিন আর মতিঝিল থানার এক মামলায় ৩ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। দুই মামলায় আরেক হেফাজত নেতা মাওলানা জালাল উদ্দিনের ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

ডিবি পুলিশ মামুনুল হককে দুই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোসহ ১০ দিন করে ২০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে। রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ‘মামুনুল হক, জুনায়েদ বাবুনগরীসহ অন্য নেতারা ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে সমাবেশের নামে তাণ্ডব চালায়। তারা কোরআন শরিফ পর্যন্ত পুড়িয়েছে। সেদিনের ঘটনায় সাতজন মারা যায়। ধর্ম প্রচারের নামে তারা নাশকতা করেছে। হেফাজত ইসলামের ২০১৩ সালের সমাবেশের সাথে বিএনপি-জামায়াত জড়িত। তারা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। তারা মিথ্যা প্রচার করে, হেফাজতের শত শত নেতাকর্মী মারা গেছে। কিন্তু পরে তারা এর কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি।’

তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তীতে দেশ-বিদেশের সরকারপ্রধানরা এসেছিলেন। নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আসাকে কেন্দ্র করে তারা নাশকতা চালায়। বহির্বিশ্বে সরকারকে হেয় প্রতিপন্ন করাই ছিল তাদের মূল উদ্দেশ্য। তারা বায়তুল মোকাররমে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ওপর হামলা চালায়।’

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জানান, এসব ঘটনার সঙ্গে কারা কারা জড়িত, তা উদঘাটনের লক্ষ্যে পুলিশ রিমান্ড আবেদন করে। আদালত সন্তুষ্ট হয়ে রিমান্ডের আদেশ দেন। মামুনুল হককে আরও দুই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

আসামিপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবা বলেন, ‘তিন আসামিকে যে মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হলো, তা তদন্তাধীন। আপনারা জানেন, কোনো মামলার তদন্ত শুরু হলে তা দ্রুত শেষ করতে হবে। তদন্ত রিপোর্ট আদালতে দাখিল করতে হবে। যদি কোনো তদন্ত রিপোর্ট দাখিলে দেরি হয়, তাহলে সেই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতের কাছে লিখিতভাবে অনুমতি নিয়ে বলবেন, কেন দেরি হচ্ছে। আজ সাতটা বছর মামলাগুলো তদন্ত হলো না, চার্জশিট হলো না। তাহলে এ মামলাগুলো কীভাবে রয়েছে। সরকার মামলাগুলো জিইয়ে রেখেছে। হেফাজতের সাথে সরকারের যখন সম্পর্কের অবনতি হয় তখন তাদের ধরে নিয়ে আসে। আবার যখন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে, তখন ছেড়ে দেয়। এসব মামলায় কখনো চার্জশিট হবে বলে আমার মনে হয়নি। মামলাগুলো পুরাতন। পুরাতন মামলায় আইন মেনে রিমান্ডে নেওয়া হয়নি। আসামিরা পলাতক ছিলেন না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আদালতকে বলেছি, আসামিরা আলেম ব্যক্তি। তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। পুরাতন মামলা। আসামিদের রিমান্ড নামঞ্জুরের প্রার্থনা করেছি। এরপরও আদালত রিমান্ডের আদেশ দেন।’

ঢাকা/মামুন/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়