‘৯ বছর ধরে বিটকয়েনের ব্যবসা করছেন সুমন’
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম
ছোট একটি ঘরে কম্পিউটারের দোকান। সেখানে বিক্রি শুরু হয় বাচ্চাদের খেলনা সামগ্রী। গড়ে তোলেন বিজ আউটসোর্সিং নামে মার্কেটিং প্রতিষ্ঠান।
তবে এ প্রতিষ্ঠানের আড়ালে অনলাইনে প্রায় ৯ বছর ধরে অবৈধ বিটকয়েনের ব্যবসা করে আসছিল একটি চক্র। চক্রের মূল হোতা ইসমাইল হোসেন সুমন ওরফে কয়েন সুমনকে গ্রেপ্তারের পর চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে বলে জানিয়েছেন র্যাব কর্মকর্তারা।
সোমবার (৩ মে) বিকেলে র্যাবের লিগাল অ্যান্ড মিডিয়া পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আলী মইন এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘২০১৩ সাল থেকে সুমন এ প্রতারণার ফাঁদ পাতেন। তখন ছোট্ট একটি দোকান। সেখানে কম্পিউটার টাইপ করা হতো। পরে বাচ্চাদের কাপড় ও খেলাধুলার সামগ্রিক ব্যবসা শুরু। সেখান থেকে আস্তে আস্তে গড়ে তোলেন আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের আড়ালে অনলাইনে বিটকয়েনের ব্যবসা শুরু করেন সুমন। এজন্য ভার্চুয়ালি তার বেশ কয়েকটি ওয়ালেট পাওয়া গেছে। যেসব ওয়ালেটে মজুদ রয়েছে বিপুল পরিমাণ বিটকয়েনের মাধ্যমে অর্জিত ডলার।’
কারওয়ানবাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে কমান্ডার মঈন আরও বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজ বিজ্ঞানে মাস্টার্স করেন সুমন। কিন্তু তিনি সব সময় প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। আউটসোর্সিং ওই প্রতিষ্ঠানের নামে বিটকয়েনের পাশাপাশি অন্যান্য প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার জন্য ৩২ জন ব্যক্তিকে নিয়োগ দেন। যারা সুমনের প্রতিষ্ঠানে মাসিক বেতনভুক্ত। বিভিন্ন সময় তার ভার্চুয়াল ওয়ালেটে প্রায় ১২ থেকে ১৫ লাখ ডলার লেনদেন করেছে। এভাবে সুমন রাজধানীতে বিপুল পরিমাণ স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি গড়ে তোলেন। এছাড়া বিভিন্ন দেশি-বিদেশি e-marketing সাইটে আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন দেন সুমন। যেটি ছিল তার প্রতারণার আরেকটি ফাঁদ। কেউ যদি তার পণ্য ক্রয় করতে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতেন তা হ্যাক এবং টাকা আত্মসাৎ করতেন।’
বিটকয়েন ব্যবসা এদেশে অবৈধ উল্লেখ করে র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘সম্প্রতি ভারতে এ ব্যবসার অনুমোদন দিয়েছে। সিঙ্গাপুরে দীর্ঘদিন হয়ে আসছে। যেখানে অনেক বড় মাপের জুয়াড়িরা সার্বক্ষণিক এ ব্যবসা বা লেনদেনের সঙ্গে জড়িত। তবে বিটকয়েন এদেশে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। একই সঙ্গে এ ঘটনার সঙ্গে আর কেউ যদি জড়িত থাকে তাহলে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানায়, রোববার (২ মে) দিবাগত রাতে উত্তর বাড্ডার সুমনের বিজ মার্কেটিং প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। সেখান থেকে সুমনসহ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তারা হলো— আরমান পিয়াস, রায়হান আলম সিদ্দিকী, মেহেদী হাসান, মোহাম্মদ জোবায়ের, আবুল বাশার, রুবেল, আরাফাত হোসেন, মোহাম্মদ জাকারিয়া, সোলাইমান ইসলাম, রাকিবুল ইসলাম, রাকিবুল হাসান ও মেহেদি হাসান রাহাত।
ঢাকা/মাকসুদ/সনি
আরো পড়ুন