ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

আল-জাজিরার অপপ্রচার: সামিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:১৩, ১৩ জুন ২০২১   আপডেট: ০৫:২১, ১৪ জুন ২০২১
আল-জাজিরার অপপ্রচার: সামিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

সামিউল ইসলাম খান ওরফে সামি (ফাইল ফটো)

বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধ, করোনাভাইরাস নিয়ে অপপ্রচারের অভিযোগে আল-জাজিরা টেলিভিশনে সরকার প্রধান এবং সেনা প্রধানকে নিয়ে প্রচারিত প্রতিবেদনের প্রধান চরিত্র সামিউল ইসলাম খান ওরফে সায়ের জুলকারনাইন ওরফে সামিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) উপ-পরিদর্শক (এসআই) আফছর আহমেদ গত ১০ মে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এ চার্জশিট আদালতে দাখিল করেন।

রোববার (১৩ জুন) আদালতের রমনা জেনারেল রেকডিং (জিআর) শাখা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) নিজাম উদ্দিন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

চার্জশিটের অপর আসামিরা হলেন-কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, রাষ্ট্রচিন্তার মো. দিদারুল ইসলাম, সুইডিশ-বাংলাদেশের সাংবাদিক নেত্র নিউজ সম্পাদক তাসনীম খলিল, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন, ব্লগার আশিক মোহাম্মদ ইমরান ও মো. ওয়াহিদুন্নবী।

কারাগারে থাকাবস্থায় লেখক মোস্তাক আহমেদ মারা যাওয়ায় এবং যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাংবাদিক সাহেদ আলম, ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিনদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমান না পাওয়ায় ও ফেসবুক আইডির ফিলিপ শুমাখার নাম ঠিকানা না পাওযায় তাদের অব্যাহতির আবেদন করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।

জানা যায়, কার্টুনিস্ট কিশোর তার ‘আমি কিশোর’ ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সরকারের ভূমিকা নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনামূলক কার্টুন-পোস্টার পোস্ট করতেন। মুশতাক তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে কিশোরের সেসব পোস্টের কয়েকটি শেয়ার করতেন।  আসামিরা ‘আই এম বাংলাদেশি’ নামে ফেসবুক পেজে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি বা সুনাম ক্ষুন্ন করতে বা বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশে অপপ্রচার বা গুজবসহ বিভিন্ন ধরনের পোস্ট দিয়েছে। যা জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটায়। এছাড়াও হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে তাসনিম খলিল, শায়ের জুলকারনাইন, শাহেদ আলম, আসিফ মহিউদ্দিনের সঙ্গে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক চ্যাটিংয়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় ২০২০ সালের ৫ মে র‌্যাব-৩ এর ওয়ারেন্ট অফিসার মো. আবু বকর সিদ্দিক রমনা থানায় কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, মোস্তাক আহমেদ, দিদারুল ইসলাম ভূঁইয়া, মিনহাজ মান্নানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ, মহামারি করোনাভাইরাস সম্পর্কে গুজব, রাষ্ট্র ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করতে অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি ছড়িয়ে তারা রাষ্ট্রের জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি, অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছেন মর্মে অভিযোগ আনা হয়।

মামলার পর গ্রেপ্তার হয়ে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে মিনহাজ মান্নান ও দিদারুল আলম ভূঁইয়া জামিনে মুক্তি পান। কার্টুনিস্ট কিশোর ও লেখক মোস্তাক কারাগারে ছিলেন। কারাগারে থাকা অবস্থায় গত ২৫ মে মোস্তাক কাশিমপুর কারাগারে মারা যায়।

এদিকে, গত ৪ ফেব্রুয়ারি মামলার পূর্বের তদন্ত কর্মকর্তা রমনা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মহসীন সর্দার প্রথম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। সেখানে কার্টুনিস্ট কিশোর ও রাষ্ট্রচিন্তার দিদারুল এবং লেখক মোস্তাককে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। অন্যদিকে সায়ের জুলকারনাইন ওরফে সামি ও মিনহাজ মান্নান, আশিক মোহাম্মাদ ইমরান, তাসনীম খলিল ও মো. ওয়াহিদুন্নবীসহ ৮ জনের অব্যাহতি চাওয়া হয়েছিল।

চার্জশিটে আল-জাজিরা টেলিভিশনে সরকার প্রধান এবং সেনা প্রধানকে নিয়ে প্রচারিত প্রতিবেদনে প্রধান চরিত্র হিসেবে সামিউল ইসলাম খান ওরফে সায়ের জুলকারনাইন ওরফে সামি অব্যাহতি পাওয়া নিয়ে সংবাদ পত্রে আলোচনা-সমালোচনা হওয়ায় মামলাটি পরে অধিকতর তদন্তে পাঠানো হয়। অধিকতর তদন্ত শেষে এবার ৭ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করা হলো।

আসামিদের মধ্যে সায়ের জুলকারনাইন ওরফে সামি অবসর প্রাপ্ত লে. কর্ণেল আব্দুল বাতেন খানের ছেলে।

ঢাকা/মামুন/এমএম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়