‘প্রাইভেটকারে উঠিয়ে সর্বস্ব লুট’

রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের মূল হোতাসহ ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগ (ডিবি)। 

বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) দুপুরে ডিএমপির এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিবি কর্মকর্তারা।

ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, মো. আরিফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি গত ২০ মে রাত অনুমান সাড়ে ৯টায় কুড়াতলী বিআরটিসি বাস কাউন্টারের সামনে ভুলতা গাউছিয়াগামী বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন।  তখন একটি সাদা রংয়ের প্রাইভেটকার তার সামনে এসে দাঁড়ায়। তিনি ওই প্রাইভেটকারে উঠেন। প্রাইভেটকারটি গাউছিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা করে প্রায় ২০০ মিটার যাওয়ার পর পছনের সিটের ওই ব্যক্তির দুই পাশে বসা দুজন যাত্রী তার হাত চাপ দিয়ে ধরে।  তাকে গামছা দিয়ে বেঁধে কিলঘুষি মারতে থাকে এবং গলায় ছুরি চেপে ধরে ভয় দেখায়।  আরিফুলের কাছে থাকা মোবাইল সেট, নগদ অর্থ ও ব্যবহৃত বিকাশ অ্যাকাউন্টের পিন কোড জোর পূর্বক ছিনিয়ে নেয়। সোয়া ১০টায় তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে গাজীপুর জেলার কালিগঞ্জ থানা এলাকায় চোখে স্প্রে করে নামিয়ে দেয়।

হাফিজ আক্তার বলেন, আরিফুল তখন বুঝতে পারে প্রাইভেটকারে থাকা সবাই ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য ছিল।  পরবর্তী সময়ে বাসায় গিয়ে দেখতে পান ছিনতাইকারীরা তার বিকাশ নম্বরে থাকা টাকা সেন্ড মানি করে নিয়ে নিয়েছে। এ ঘটনায় তিনি খিলক্ষেত থানায় একটি মামলা রুজু করেন।  থানা পুলিশের পাশাপাশি মামলাটি ছায়া তদন্ত  শুরু করে গোয়েন্দা বিমানবন্দর জোনাল টিম। এ মামলার ঘটনা তদন্তে সিসি ক্যামেরা ফুটেজ ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্তদের অবস্থান শনাক্ত করে গোয়েন্দা টিম। 

বুধবার (১৬ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার সিটি ফিলিং স্টেশন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।  গ্রেপ্তারকৃতরা ঢাকা মহানগরীর খিলক্ষেত, কুড়িল বিশ্বরোড এলাকা থেকে ভুলতা-গাউছিয়া ও এয়ারপোর্ট থেকে ময়মনসিংহ, শেরপুরে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে কৌশলে যাত্রী উঠায়।  পরবর্তী সময়ে যাত্রীর গলায় ইলেকট্রিক তার পেঁচিয়ে, গামছা দিয়ে চোঁখ ও হাত বেঁধে, মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে, গলায় ছুরি ধরে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে যাত্রীর সর্বস্ব লুট করে নিয়ে নির্জন স্থানে ফেলে দিয়ে চলে যায়।

ডিবি পুলিশের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ছিনতাই চক্রের প্রধান মো. মানিক মিয়া। এছাড়া মো. জাকির হোসেন, মো. আরিফ, মো. হযরত আলী ও মো. জাহিদ হোসেন। তাদের কাছ থেকে ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকার।  যার রেজিঃ নম্বর ঢাকা মেট্টো-গ-১১-৭৪৫৭, একটি মোবাইল ফোন, একটি ছুরি, একটি গামছা, একটি খাকি রংয়ের স্কচটেপ, লাল-কালো রংয়ের ইলেকট্রিক তার ও একটি স্ক্রু-ড্রাইভার উদ্ধার করা হয়।