ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

নির্যাতনের বর্ণনা সেই গৃহকর্মীর, রিমান্ডে স্বামী-স্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:১৮, ১৮ জুলাই ২০২১  
নির্যাতনের বর্ণনা সেই গৃহকর্মীর, রিমান্ডে স্বামী-স্ত্রী

ফাইল ছবি

রাজধানীর তোপখানা রোডের একটি বাসায় নির্মম নির্যাতনের স্বীকার হয় ১২ বছরের এক গৃহকর্মী সুইটি।  নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে সুইটি আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।

রোববার (১৮ জুলাই) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার এসআই (নি.) জাহাঙ্গীর হোসেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে সুইটিকে আদালতে হাজির করে তার জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন।

আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিভানা খায়ের জেসির আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর সুইটিকে তার বাবার জিম্মায় যাওয়ার আদেশ দেন আদালত।

এদিকে, গত ১২ জুলাই মামলার দুই আসামি তানভীর আহসান পাভেল ও অ্যাডভোকেট নাহিদ জাহান আখির সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালত রিমান্ড শুনানির জন্য রোববার দিন ধার্য করেন।

এদিন আসামিদের পক্ষে তাদের আইনজীবী আতিকুর রহমান রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন।  রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করা হয়। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সাঈদের ভার্চুয়াল আদালত তাদের একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

সুইটিকে নির্যাতনের ঘটনায় বাবা শহিদ মিয়া শাহবাগ থানায় তানভীর আহসান পাভেল ও নাহিদ জাহান আখিকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, অভাবের কারণে ৯ মাস আগে সুইটিকে পাভেল ও আঁখির বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে পাঠানো হয়। তার মাসিক বেতন ধার্য করা হয় ৩ হাজার টাকা। দুই মাসের বেতন নিয়ে যান শহিদ মিয়া। বাকি সাত মাসের বেতন আর দেননি আসামিরা। এমনকি সুইটির সঙ্গে দেখা করতে বা ফোনে কথা বলতে দেননি আসামিরা। ঠিকমতো কাজ না করার অজুহাতে পাভেল ও আঁখি দীর্ঘদিন ধরে সুইটির ওপর নির্যাতন করেছে। গত ১ জুলাই বেলা ১১টার দিকে লাঠি দিয়ে সুইটির হাত, পা, পিঠ ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে তারা। রাত ১০টার দিকে সুইটির পরনের কাপড় খুলে ওড়না দিয়ে হাত বেঁধে মশা মারার ইলেকট্রিক ব্যাট দিয়ে পশ্চাৎদেশের দুই পাশে শক দেওয়া হয়। এতে সুইটির নিতম্ব ঝলসে যায়।

পাভেল ও আঁখি রুটি তৈরির কাঠের বেলুন দিয়ে সুইটির বাম হাতের কনুইয়ের হাড় ভেঙে দেয়। সুইটির যৌনাঙ্গে বেলুন ঢুকিয়ে নির্যাতন করে আঁখি। চোখে-মুখে ও যৌনাঙ্গে মরিচ লাগিয়ে দেয়। সুইটি জীবন বাঁচানোর জন্য আসামিদের বাসা থেকে পালানোর চেষ্টা করলে তাকে ভাত খেতে না দিয়ে দুই দিন বাথরুমে আটকে রাখা হয়। ৩ জুলাই সুইটি বাথরুম থেকে বের হয়ে তাদের ঘরে থাকা বিস্কুট খেলে আসামিরা রাত ১টার দিকে সুইটিকে আবারও মারপিট করে। সুইটি কৌশলে আসামিদের বাসা থেকে পালিয়ে একজনের বাসায় আশ্রয় নেয়। তারা পুলিশে খবর দেয়। ৪ জুলাই পুলিশ এসে সুইটি উদ্ধার করে এবং পাভেল ও আঁখিকে আটক করে। পরের দিন ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। 

/মামুন/এসবি/

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়