ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

টিকা দিতে এসএমএস দিয়ে প্রতারণা, গ্রেপ্তার ৪

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:০১, ২ সেপ্টেম্বর ২০২১   আপডেট: ১৪:০২, ২ সেপ্টেম্বর ২০২১
টিকা দিতে এসএমএস দিয়ে প্রতারণা, গ্রেপ্তার ৪

কারওয়ানবাজার র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন

এসএমএস দিয়ে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দ্রুততম সময়ে প্রাপ্তির আশ্বাস দিয়ে প্রতারণা করে আসছে একটি প্রতারক চক্র। চক্রের ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‌্যাব কর্মকর্তারা।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারের সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, বেশকিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব জানতে পারে, কিছু প্রতারক রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালের সামনে অবস্থান করে বিদেশগামী টিকা প্রার্থীদের দ্রুত এসএমএস প্রদানের নামে প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। এ খবর বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত হলে বিষয়টি নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র‌্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও ছায়া তদন্ত শুরু করে।

এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদে র‌্যাব-৩ এর আভিযানিক দল বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় মুগদা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মো. নুরুল হক মো. সাইফুল ইসলাম ও মো. দুলাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়।  এ সময় প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৪টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

কমান্ডার মঈন বলেন, টিকাদান কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর থেকে গ্রেপ্তারকৃতরা কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের এসএমএস নিয়ে প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাতের পরিকল্পনা করে। খুদে বার্তা ছড়িয়ে প্রচারণা চালিয়ে তারা এ অর্থ আত্মসাৎ করত। দ্রুততম সময়ে টিকাদানের এসএমএস পাঠিয়ে দেওয়ার নামে টিকা প্রতি আড়াই থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছে এই চক্রটি। কেউ এসএমএস স্বাভাবিক নিয়মেই পেতো, কেউবা প্রতারিতও হয়েছে।

 চক্রের মূল হোতা নুরুল হক।  গ্রেপ্তারকৃত সাইফুল এবং ইমরান হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে থেকে লোকজনকে এসএমএম দ্রুত পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখাতো। অতঃপর প্রার্থীদের নুরুল হকের কাছে নিয়ে যাওয়া হতো।  নুরুল হক  টাকা নিয়ে দর কষাকষি করত। টাকার পরিমাণ নিয়ে কারো সাথে বোঝাপড়া হয়ে গেলে, তাকে দুলালের কাছে নিয়ে যাওয়া হত। টাকার পরিমাণের ওপর নির্ভর করে দুলাল এসএমএস প্রত্যাশী ব্যক্তিদের আশ্বস্ত করত, কতদিনের মধ্যে এসএমএস পাওয়া যাবে।

তিনি আরও বলেন, বিশেষত বিদেশগামী যাত্রীরাই ছিল এ চক্রের মূল টার্গেট।  চক্রটি রাজধানীর মুগদা, শাহবাগ, রমনা, শেরেবাংলা নগর মিরপুর, মহাখালী ইত্যাদি এলাকায় সক্রিয় ছিল। এভাবে চক্র দুই শতাধিক ব্যক্তিকে প্রতারিত করেছে। এছাড়াও চক্রটি সামাজিক যোগাযোগ ও এসএমএস এর মাধ্যমে একটি খুদে বার্তা প্রচার করত। যাতে লেখা ছিল ‘যারা টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন করছে কিন্তু এসএমএস পাইতেছে না তাদের ১ দিন এ টিকা নিয়ে দেওয়া যাবে।  যারা নতুন তাদের ৪ দিন এর মধ্যে রেজিষ্ট্রেশন করে টিকা নিয়ে দেওয়া যাবে।

নুরুল হক দীর্ঘদিন প্রবাসী ছিল।  ২০১৮ সালে দেশে ফেরত এসে ভিসা জটিলতায় আর যেতে পারেনি। গ্রেপ্তারকৃত ইমরান হোসেন একটি ট্র্যাভেল এজেন্সিতে চাকরি করত।  সাইফুল ইসলাম রমনা এলাকায় চা বিক্রেতা (দোকানদার)। সে একটি সরকারি সংস্থায় আউটসোর্সিং হিসেবে পরিচ্ছন্নতাকর্মী ছিল। সে সময় ফর্ম পূরণের নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে চাকরিচ্যুত হয়।  দুলাল মিয়া একটি হাসপাতালের আউটসোর্সিং চালক হিসেবে নিযুক্ত রয়েছে। 

/মাকসুদ/এসবি

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়