ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

মাসুদুলের নেতৃত্বে বিমানবন্দর কেন্দ্রিক ছিনতাই চক্র 

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:১১, ১৭ অক্টোবর ২০২১  
মাসুদুলের নেতৃত্বে বিমানবন্দর কেন্দ্রিক ছিনতাই চক্র 

গ্রেপ্তার মাসুদুল। ছবি: নিজস্ব

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কেন্দ্রিক গড়ে উঠেছে ছিনতাইকারী চক্র। যাদের প্রধান টার্গেট থাকে বিদেশ থেকে আসা প্রবাসীরা। এরকম বেশ কয়েকটি ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে চক্রের ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। 

শনিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার এ তথ‌্য জানান। 

তিনি বলেন, বিমান বন্দর কেন্দ্রিক সংঘটিত দুটি ডাকাতির ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে চক্রটির সন্ধান পাওয়া যায়। এর পরই নিশ্চিত হওয়ার পর মাসুদুল হক আপেল, আমির হোসেন হাওলাদার ও মো. শামীম’কে শনিবার রাতে হাতিরঝিল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৫টি পাসপোর্ট, দুটি এনআইডি কার্ড, এটিএম কার্ড, স্টিলের চাকু ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়।

ডিবি প্রধান আরও বলেন, গত ৭ সেপ্টেম্বর লিটন সরকার নামে এক প্রবাসী মিশর থেকে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে বাংলাদেশে আসেন। এরপর বিমানবন্দরে নেমে গোলচত্বর ফুটওভার ব্রিজের নিচে এসে বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় অজ্ঞাতনামা ৫-৬ জন লোক ধারালো চাকু দিয়ে ভয় দেখিয়ে তার সঙ্গে থাকা হ্যান্ডব্যাগ ও লাগেজ নিয়ে যায়। হ্যান্ডব্যাগে থাকা তার একটি পাসপোর্ট, মিশরের ভিসা, বিমানের টিকেট, স্বর্ণের চেইন ও নগদ ৪০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা।

একইভাবে ৫ অক্টোবর ব্রিটেন থেকে ঢাকায় আসেন ওমর শরীফ। নাটোরের বড়াইগ্রাম যাওয়ার সময় বিমানবন্দর এলাকা থেকে অপহৃত হন তিনি। তাকে ঢাকার বাইরে নামিয়ে দেওয়া হলেও তার পাসপোর্টসহ প্রয়োজনীয় সব মালামাল লুট করে নিয়ে যায় ছিনতাইকারী চক্র। 

পৃথক ঘটনায় দুটি মামলা হলে ছায়া তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা পুলিশের উত্তর বিভাগ। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ ও প্রযুক্তি সহায়তা নিয়ে এসব কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত ওই তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি বলেন, প্রবাস থেকে স্বল্প সময়ের জন্য বাংলাদেশে আসা বিদেশি ও প্রবাসীদের টার্গেট করা হয় বিমানবন্দরে নামার পরই। গাড়ির জন্য অপেক্ষায় থাকা প্রবাসীদের গাড়ি দিয়ে সহযোগিতার নামে গাড়িতে তুলে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করা হয়। আবার কখনও সখ্যতা গড়ে চক্রের সদস্যরা। টার্গেট করা প্রবাসীদের চেতনানাশক দ্রব্য খাইয়ে অজ্ঞান করে ঢাকার বাইরে ফেলে দেয়। লুট করা হয় সঙ্গে থাকা সব মালামাল।

গ্রেপ্তারকৃতরা মূলত প্রবাসীদের টার্গেট করে বিমান বন্দর কেন্দ্রিক অর্ধশতাধিক ডাকাতি ছিনতাই ও অপহরণের পর মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। দ্রুত বিদেশে যাওয়ার তাড়া থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীরা ঝামেলা মনে করে অনেকে মামলাও করেন না। প্রবাসীদের টার্গেট করে এসব স্থানে বিভিন্ন সময় বসে থাকে গ্রেপ্তারকৃতরা। সুযোগ এবং অবস্থা বুঝে টার্গেটকৃত ব্যক্তিকে প্রথমে নিজেদের জিম্মায়, এরপর কৌশলে গাড়িতে তুলে অচেতন করে সঙ্গে থাকা মালামাল নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে ফেলে রেখে যায়।

সাংবাদিকদের প্রশ্নে ডিবি প্রধান বলেন,  চক্রের সদস্যরা জিজ্ঞাসাবাদে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে বিমানবন্দর কেন্দ্রিক তারা গত এক বছরে অর্ধশতাধিক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিয়েছে। এই চক্রের মূলহোতা মাসুদুলের বিরুদ্ধে রয়েছে ৭টি মামলা।  তবে সে বিভিন্ন সময় পালিয়ে থেকে হরহামেশাই এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার পাশাপাশি চক্রটিকে নিয়ন্ত্রণ করে আসছিল।

মাকসুদ/এনএইচ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়