ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

তাসনিম ও সামিসহ ৪ জনের সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৪৬, ১৯ অক্টোবর ২০২১   আপডেট: ১৭:৫৬, ১৯ অক্টোবর ২০২১
তাসনিম ও সামিসহ ৪ জনের সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হওয়া মামলায় চার আসামির সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম শামীম এ তথ্য জানিয়েছেন। সোমবার (১৮ অক্টোবর) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন বলে জানান তিনি।

যে চার আসামির সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দেওয়া হয়েছে তারা হলেন আল-জাজিরায় সাবেক সেনাপ্রধানকে নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সঙ্গে যুক্ত জুলকারনাইন ওরফে সামি, সুইডিশ প্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক নেত্র নিউজ সম্পাদক তাসনিম খলিল, ব্লগার আশিক ইমরান ও ওয়াহিদুন নবী স্বপন।

গত ১২ সেপ্টেম্বর ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আস সামছ জগলুল হোসেনের আদালত চার আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

এ মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামি ৭ জন। তিন আসামি কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, রাষ্ট্রচিন্তার মো. দিদারুল আলম ভুঁইয়া ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন জামিনে ছিলেন। এদিন তারা ট্রাইব্যুনালে হাজির ছিলেন।

গত ১২ সেপ্টেম্বর কারাগারে মারা যাওয়া লেখক মোস্তাক আহমেদকে অব্যাহতি দেন আদালত। একইদিনে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাংবাদিক সাহেদ আলম, ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিন ও ফেসবুক আইডি ফিলিপ শুমাখারকে এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। 

গত ১০ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) উপ-পরিদর্শক (এসআই) আফছর আহমেদ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এ মামলায় চার্জশিট দাখিল করেন।

গত বছরের ৫ মে র‌্যাব-৩ সিপিসি-১ এর ওয়ারেন্ট অফিসার মো. আবু বকর সিদ্দিক বাদী হয়ে ১১ জনের নামে রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন। এছাড়া অজ্ঞাত ৫-৬ জনকে আসামি করা হয়।

জানা যায়, কার্টুনিস্ট কিশোর তার ‘আমি কিশোর’ ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সরকারের ভূমিকা নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনামূলক কার্টুন-পোস্টার পোস্ট করতেন। মুশতাক তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে কিশোরের সেসব পোস্টের কয়েকটি শেয়ার করতেন।  আসামিরা ‘আই এম বাংলাদেশি’ নামে ফেসবুক পেজে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি বা সুনাম ক্ষুণ্ন করতে বা বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশে অপপ্রচার বা গুজবসহ বিভিন্ন ধরনের পোস্ট দিয়েছে। যা জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটায়। 

এ ঘটনায় ২০২০ সালের ৫ মে র‌্যাব-৩ এর ওয়ারেন্ট অফিসার মো. আবু বকর সিদ্দিক রমনা থানায় কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, মোস্তাক আহমেদ, দিদারুল ইসলাম ভূঁইয়া, মিনহাজ মান্নানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন।  মামলায় তাদের বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ, মহামারি করোনাভাইরাস সম্পর্কে গুজব, রাষ্ট্র ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি ছড়িয়ে তারা রাষ্ট্রের জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি, অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছেন মর্মে অভিযোগ আনা হয়।

মামলার পর গ্রেপ্তার হয়ে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে মিনহাজ মান্নান ও দিদারুল আলম ভূঁইয়া জামিনে মুক্তি পান। কার্টুনিস্ট কিশোর ও লেখক মোস্তাক কারাগারে ছিলেন। কারাগারে থাকা অবস্থায় গত ২৫ মে মোস্তাক কাশিমপুর কারাগারে মারা যায়।

এদিকে, গত ৪ ফেব্রুয়ারি মামলার পূর্বের তদন্ত কর্মকর্তা রমনা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মহসীন সর্দার প্রথম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। সেখানে কার্টুনিস্ট কিশোর ও রাষ্ট্রচিন্তার দিদারুল এবং লেখক মোস্তাককে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। অন্যদিকে সায়ের জুলকারনাইন ওরফে সামি ও মিনহাজ মান্নান, আশিক মোহাম্মাদ ইমরান, তাসনিম খলিল ও মো. ওয়াহিদুন্নবীসহ ৮ জনের অব্যাহতি চাওয়া হয়েছিল।

চার্জশিটে আল-জাজিরা টেলিভিশনে সরকার প্রধান এবং সেনা প্রধানকে নিয়ে প্রচারিত প্রতিবেদনে প্রধান চরিত্র হিসেবে সামিউল ইসলাম খান ওরফে সায়ের জুলকারনাইন ওরফে সামি অব্যাহতি পাওয়া নিয়ে সংবাদপত্রে আলোচনা-সমালোচনা হওয়ায় মামলাটি পরে অধিকতর তদন্তে পাঠানো হয়। অধিকতর তদন্ত শেষে এবার ৭ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করা হলো।

মামুন/এসবি

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়