ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

আত্মসমর্পণকারী দস্যুদের মামলা তুলে নেওয়া হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

রামপাল থেকে মাকসুদুর রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:০৫, ১ নভেম্বর ২০২১   আপডেট: ১৯:২৫, ১ নভেম্বর ২০২১
আত্মসমর্পণকারী দস্যুদের মামলা তুলে নেওয়া হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, সুন্দরবনের দস্যুদের মধ‌্যে যারা আত্মসমর্পণ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে থাকা সব মামলা তুলে নেওয়া হবে। তবে, ধর্ষণ ও হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিষয়ে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।

সোমবার (১ নভেম্বর) দুপুরে বাগেরহাটের রামপালে ‘দস্যুমুক্ত সুন্দরবন: ৩য় বর্ষপূর্তি ও আত্মসমর্পণকৃতদের পুনর্বাসন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘আত্মসমর্পণকারীদের মামলাগুলো নিয়ে আমরা দাপ্তরিক কাজকর্ম অব্যাহত রেখেছি। তারই অংশ হিসেবে আমি নিশ্চিত করতে পারি, যারা আত্মসমর্পণ করেছেন, তাদের মামলাগুলো তুলে নেওয়া হবে। তারা যেন স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন, সেজন্য পুনর্বাসন কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘সুন্দরবন অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি। এখানে মাছ ও মধু আহরণ করা হয়। এগুলোকে টার্গেট করে গড়ে ওঠে জলদস্যু ও বনদস্যু বাহিনী। অবশ্য এসব দুষ্কৃতকারীকে অপরাধ করতে বাধ্য করা হতো। এর পেছনে ইন্ধনদাতারাও ছিল। এখন সুন্দরবন দস্যুমুক্ত হয়েছে, এটা ধরে রাখতে হবে। এ ধারা অব্যাহত এবং সুসংহত রাখতে র‌্যাবের একটি স্থায়ী ক্যাম্প করা হবে। এখানে আর ডাকাতি হতে দেবো না। সেটা নদী, উপকূল বা বন, যা-ই হোক। সুন্দরবনে এখন শান্তি প্রবাহমান। অথচ, এখানে আগে জেলে ও মৌয়ালদের আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায় করাসহ নানা ধরনের অপরাধ করা হতো। আত্মসমর্পণকারী দস্যু ও তাদের পরিবারের কথা চিন্তা করে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তারা যেন স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন, সেজন্য নগদ অর্থ, ঘরবাড়ি, গবাদিপশু এমনকি নৌকা ও জাল দেওয়া হয়েছে। তবে, মনে রাখতে হবে, এখানেই শেষ নয়। যাদের পুনর্বাসনের আওতায় আনা হয়েছে, তাদের বিষয়ে নিবিড় নজরদারিও থাকবে। তারা যদি পুনরায় একই ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে, সেক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেসব দস্যু আত্মসমর্পণ করেছেন, তাদের মামলাগুলো কীভাবে প্রত্যাহার করা যায়, সেজন্য পাবলিক প্রসিকিউটরসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর বা বিভাগের সঙ্গে আমরা কাজ করছি। আশা করছি, শিগগির মামলা তুলে নেওয়া বা প্রত্যাহার করা যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে যেমন সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক নির্মূলে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ঠিক তেমনই সুন্দরবনকে নিরাপদ রাখতে সব ধরনের কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখা হবে। ২০১৬ সালের ৩১ মে থেকে ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর পর্যন্ত শুধু সুন্দরবন থেকে ৩২৮ জন দস্যু আত্মসমর্পণ করেছেন। সুন্দরবন যেন পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়, সেজন্য শুধু র‌্যাব নয়, পুলিশ, কোস্টগার্ডসহ বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়ে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দেওয়া হবে।’

এর আগে ৩২টি জলদস্যু বাহিনীর আত্মসমর্পণকারী ৩২৮ সদস‌্যের কাছে ১০২টি ঘর, ৯০টি মুদি দোকান, জাল, ১২টি মাছ ধরার নৌকা এবং ২২৮টি গবাদিপশু হস্তান্তর করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

ঢাকা/মাকসুদ/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়