ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

সুবিধাবাদী চক্র সুন্দরবনে দস্যু বাহিনী গড়ে তোলে: আইজিপি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:১৫, ১ নভেম্বর ২০২১   আপডেট: ১৯:২৫, ১ নভেম্বর ২০২১
সুবিধাবাদী চক্র সুন্দরবনে দস্যু বাহিনী গড়ে তোলে: আইজিপি

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ‘সুবিধাবাদী চক্র সুন্দরবনে দস্যু বাহিনী গড়ে তোলে। তারা ফায়দা হাসিলের জন্য দস্যুদের বনে পাঠিয়ে নানা ধরনের অপরাধ করছিল।'

সোমবার (১ নভেম্বর) দুপুরে বাগেরহাটের রামপালে ‘দস্যুমুক্ত সুন্দরবন: ৩য় বর্ষপূর্তি ও আত্মসমর্পণকৃতদের পুনর্বাসন’ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

পুলিশ প্রধান বলেন, ‘অসাধু সুবিধাভোগীরা দস্যুদের বাধ্য করত সুন্দরবনে যেতে। অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য উৎসাহ দিতো। প্রভাবশালীদের ভয়ে অনেকে সুন্দরবনে পালিয়ে এসে দস‌্যুতার পেশা বেছে নেয়। তারপরও ওই সুবিধাভোগীরা বনদস্যুদের পিছু ছাড়েনি। তারা দস্যুদের কাছ থেকে মাস কিংবা বছরওয়ারি মোটা অংকের টাকা আদায় করত।’

তিনি বলেন, ‘২০১৫ সালে আমি যখন ডিএমপি কমিশনার হিসেবে কাজ করি, তখনই জলদস্যুদের বিষয়টি মাথায় আসে। এর পর র‌্যাবের ডিজি হলে বিষয়টি নিয়ে জোরালোভাবে কাজ শুরু হয়। তারই অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও সংস্থার প্রধানের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠকে বসেছি। সুন্দরবনে ২৫ হাজার মানুষের জীবিকা নির্বাহ নিশ্চিত করতে চূড়ান্ত কাজ শুরু করি। ২০১৬ সালে ওই সময় সুন্দরবনকেন্দ্রিক একাধিক অভিযান চালানো হয়। র‌্যাবের সঙ্গে দস্যুদের গোলাগুলিতে অনেকে নিহত ও আহত হয়েছেন। আনসার সদস্য কাঞ্চনকে নির্মমভাবে জীবন দিতে হয়। সুন্দরবন এলাকায় র‌্যাবের চারটি অস্থায়ী ক্যাম্প করা হয়। ঘন ঘন র‌্যাবের অভিযানে দিশেহারা হয়ে পড়ে জলদস্যুরা। এক পর্যায়ে তারা বিভিন্নভাবে বর্তমান সরকারের ডাকে সাড়া দিয়ে আত্মসমর্পণের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি নেয়। তারই অংশ হিসেবে অনেকেই আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে এ প্রক্রিয়াও বাধাগ্রস্ত হয়।'

সুন্দরবনে এখন সুবাতাস বইছে, দাবি করে অনুষ্ঠানের সভাপতি ও র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘সুন্দরবনে এখন বাঘ, হরিণ বেড়েছে। বেড়েছে বনের সৌন্দর্য। তবে, এটি এত সহজ ছিল না। অনেকে আহত ও মারা গেছেন। দস্যুরা বিভিন্ন সময় অভিযানে গেলে আমাদের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। যাদের পুনর্বাসন করা হয়েছে, তারা যদি সরকারের নির্দেশ যথাযথভাবে প্রতিপালন করেন তাহলে আর্থিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। শুধু আত্মসমর্পণকারী দস‌্যু নয়, তাদের পরিবারের জন‌্য সহায়তা অব্যাহত থাকবে। মনে রাখতে হবে, যে পথ থেকে একবার ফিরে আসা হয়েছে, সে পথে আর কোনোভাবেই যাওয়া যাবে না। তারপরও কেউ যদি এ ধরনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে আবারও জড়িয়ে পড়েন, তাকে আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে।’

ঢাকা/মাকসুদ/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়