সাভারে ৬ ছাত্র হত্যা: রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি
নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম
নিহত ছাত্রদের স্বজনরা রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানান
সাভারের আমিন বাজারে ছয় ছাত্রকে ডাকাত সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার মামলায় ১৩ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড আদালত। এই রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন নিহতদের স্বজনরা।
বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ইসমত জাহান এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন, আবদুল মালেক, সাইদ মেম্বার, আবদুর রশীদ, ইসমাইল হোসেন, জমশের আলী, মীর হোসেন, মজিবর রহমান, আনোয়ার হোসেন, রজ্জব আলী সোহাগ, আলম, রানা, আবদুল হামিদ ও আসলাম মিয়া।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, শাহীন আহমেদ, ফরিদ খান, রাজীব হোসেন, ওয়াসিম, সাত্তার, সেলিম, মনির হোসেন, আলমগীর, মোবারক হোসেন, অখিল খন্দকার, বশির, রুবেল, নুর ইসলাম, শাহাদ হোসেন, টুটুল, মাসুদ, মোকলেছ, তোতন ও সাইফুল। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় ২৫ জনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
পূর্ব নির্ধারিত রায় ঘোষণার দিন সকালেই আদালতে উপস্থিত হন নিহত ছাত্রদের পরিবারের সদস্যরা। রায় শুনে অনেকে কেঁদে ফেলেন। তবে রায় ঘোষণার পর সন্তোষ প্রকাশ করেছেন তারা। এই রায় যেন দ্রুত কার্যকর হয় সেই দাবি জানান।
নিহত ছাত্র টিপু সুলতানের মা কাজী নাজমা সুলতানা বলেন, ‘সব আসামির ফাঁসি আশা করেছিলাম। তাহলে আরও খুশি হতাম। তবে এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। এতদিন কষ্ট পেয়েছি। যতদিন বেঁচে থাকবো কষ্ট পাবো। তারপরও যে রায় হয়েছে তাতে শুকরিয়া আদায় করি।’
তিনি বলেন, ‘আমার আর কিছু বলার নেই। তবে চাই, দ্রুত যেন আসামিদের ফাঁসি কার্যকর হয়।’
নিহত পলাশের বাবা মজিবুর রহমান বলেন, ‘ন্যায়বিচার পেয়েছি। তবে রায় যেন দ্রুত কার্যকর হয়।’
ইব্রাহিম খলিলের বাবা আবু তাহের বলেন, ‘রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। দোষীদের সাজা হয়েছে। তবে আশা, রায়টা যেন দ্রুত কার্যকর করা হয়।’
গত ২২ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের এ তারিখ ঠিক করেন। ওইদিন ৪১ আসামির জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানো হয়। ১৬ আসামি পলাতক রয়েছেন। এর আগে মামলাটিতে ৫৪ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন।
২০১১ সালের ১৭ জুলাই শবে বরাতের রাতে সাভারের আমিনবাজারের বড়দেশী গ্রামের কেবলার চরে ডাকাত সন্দেহে ছয় ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
নিহতরা হলেন-ধানমন্ডির ম্যাপললিফের এ লেভেলের ছাত্র শামস রহিম, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শ্রেণির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ইব্রাহিম খলিল, বাঙলা কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তৌহিদুর রহমান পলাশ, তেজগাঁও কলেজের ব্যবস্থাপনা প্রথম বর্ষের ছাত্র টিপু সুলতান, মিরপুরের বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সিতাব জাবীর মুনিব এবং বাঙলা কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র কামরুজ্জামান কান্ত। তাদের সঙ্গে থাকা বন্ধু আল-আমিন গুরুতর আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান।
ঢাকা/মামুন/ইভা
আরো পড়ুন