ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

মাদক কারবারিদের বিষয়ে তথ্য দেওয়ায় খুন হন সায়মন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:১০, ১৭ জানুয়ারি ২০২২  
মাদক কারবারিদের বিষয়ে তথ্য দেওয়ায় খুন হন সায়মন

ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও আশপাশের এলাকায় মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করত মো. সুমন ওরফে গ্লাস সুমনসহ পাঁচজন। তাদের গ্রুপে আরও কয়েকজন সদস্য আছে। তাদের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তথ্য দেওয়ায় সায়মন নামের এক যুবককে হাত-পায়ের রগ কেটে হত্যা করা হয়।

সোমবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন বাহিনীর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি জানান, র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১০ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রোববার রাত থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে সায়মন হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা গ্লাস সুমন, মো. সোহাগ ওরফে লম্বু সোহাগ, শরীফ ওরফে গরিব, জনি ওরফে হর্স পাওয়ার জনি ও মো. হারুনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত সুইচগিয়ার চাকু ও অন্যান্য ধারালো অস্ত্র জব্দ করা হয়। গ্লাস সুমন একটি মাদক সিন্ডিকেটের প্রধান। সে দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। কেরানীগঞ্জসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় সে ‘গ্লাস কোম্পানি’ নামে একটি মাদক সিন্ডিকেট গড়ে তোলে। এই চক্রের সক্রিয় সদস্য ১২-১৫ জন।

খন্দকার আল মঈন জানান, হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে জানা যায়, সায়মন মাদক সিন্ডিকেট ‘গ্লাস কোম্পানি’র কয়েকজন সদস্য সম্পর্কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তথ্য দিয়েছিল। সে তথ্যের ভিত্তিতে ওই সিন্ডিকেটের কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়।

সুমন ও তার সহযোগীরা সায়মনকে সন্দেহ করেছিল। প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে তারা সায়মনকে হত্যা করে।

হত্যাকাণ্ডের কয়েক দিন আগে মুক্তিরবাগ বালুর মাঠ এলাকায় গ্লাস সুমন ও তার সহযোগীরা সায়মনকে হত্যার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৫ জানুয়ারি সুমন ও তার সহযোগীরা মুক্তিরবাগ বালুর মাঠ এলাকায় সায়মনকে ধরে নিয়ে আসে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার হাত- পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয় এবং এলোপাথারি কোপানো হয়। পরে স্থানীয়রা সায়মনকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

গ্লাস সুমন এ হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী। সে নিজেই সায়মনের রগ কাটে।  লম্বু সোহাগ ও শরীফও রগ কাটায় অংশ নেয়। জনি ও সুমন সায়মনকে ধরে রাখে।

সুমনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মাদক ও ছিনতাই সংক্রান্ত পাঁচটি মামলা আছে। সুমন আগে গ্লাসের দোকানে কাজ করত। বিভিন্ন সময়ে ভাঙা গ্লাস দিয়ে মানুষকে আক্রমণ ও জখম করায় এলাকায় সে গ্লাস সুমন হিসেবে পরিচিতি পায়।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার মইন জানান, নিহত সায়মনের ভাই মো. আরস আলম কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় সাত-আটজন অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

সায়মন হত্যাকাণ্ডের খবর দেশব্যাপী চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করলে র‌্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে। হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়।

মাকসুদ/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়