চার কার্যদিবসে কর্নেল শহিদের মামলার বিচার, ৩ বছর কারাদণ্ড

দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিল না করার মামলায় মাত্র চার কার্যদিবসে কর্নেল (অব.) মো. শহিদ উদ্দিন খানের বিচার শেষ হয়েছে। তাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এর পাশাপাশি তাকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত- ৯ এর বিচারক শেখ হাজিজুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডিত আসামি পলাতক। রায় ঘোষণার পর আদালত আসামির বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

দুদকের পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন প্রসিকিউটর রফিকুল হক বেনু। দুদকের আরেক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আদালত মাত্র চার কার্যদিবসে বিচার শেষ করে রায় দিয়েছেন।’

মামলাটিতে গত ৮ আগস্ট চার্জ গঠনের পর গত ২৩ আগস্ট এবং ৭ সেপ্টেম্বর ৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। এর পর মঙ্গলবার যুক্তিতর্কের পর রায় ঘোষণা করা হয়।

এর আগে ২০২০ সালের ১০ নভেম্বর অস্ত্র আইনের মামলায় কর্নেল (অব.)  শহিদ উদ্দিন খান, তার স্ত্রী ফারজানা আনজুম খানসহ চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। একই বছরের ২০ ডিসেম্বর আয়কর ফাঁকির মামলায় শহীদ উদ্দিন খানকে ৯ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

দুদকের মামলার অভিযোগে বলা হয়, রাজধানীর বারিধারায় শহিদ উদ্দিন খানের পরিবারের সদস্যদের নামে একটি ফ্ল্যাট এবং যুক্তরাজ্যের লন্ডনে দুটি বাড়ি আছে। এসবের দাম প্রায় ২৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা। তাছাড়া, শহিদ উদ্দিন খান এবং তার পরিবারের সদস্যদের নামে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন ব্যাংকে ১২টি অ্যাকাউন্ট আছে। স্ত্রী-কন্যার নামে ঢাকার প্রচ্ছায়া লিমিটেডে ৫ কোটি টাকা মূল্যের ৫ লাখ শেয়ার এবং কুমিল্লায় কোটি টাকা দামের কোল্ড স্টোরেজ আছে। লন্ডনে তাদের নামে জুমানা ইনভেস্টমেন্টস অ্যান্ড প্রোপার্টিজ লিমিটেডে বিনিয়োগ এবং সাইপ্রাসে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে। শহিদ উদ্দিন খানের ভাই মোহাম্মাদ আলী খানের নামে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে ব্যাংকে ৩০ লাখ ৩৯ হাজার দিরহাম জমা ছিল, যা  জুমানা ইনভেস্টমেন্টস অ্যান্ড প্রোপার্টিজ লিমিটেডে হস্তান্তর করা হয়েছে।

শহিদ উদ্দিন খান ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে দেশে-বিদেশে প্রায় ৩০ কোটি ৫০ লাখ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ আছে। বিদেশে তাদের নামে ১২টি ব্যাংক হিসাব আছে, যা একজন সরকারি কর্মকর্তা হিসাবে অস্বাভাবিক। অর্থাৎ তার ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ আছে বলে প্রতীয়মান হয়। সে কারণে তাকে ২০২০ সালের ১৬ আগস্ট সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ ইস্যু করা হয়। কিন্তু, আসামি সম্পদের হিসাব দাখিল না করায় ২০২১ সালের ২৪ জানুয়ারি দুদকের উপ-পরিচালক জামাল উদ্দিন আহমেদ মামলা করেন। মামলাটি একই কর্মকর্তা তদন্ত করে গত বছর ১৪ নভেম্বর চার্জশিট দাখিল করেন।