ঢাকা     বুধবার   ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ১৯ ১৪৩১

আইন করে কুইক রেন্টালের দায়মুক্তি অবৈধ: হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৫৯, ১৪ নভেম্বর ২০২৪   আপডেট: ১২:৫৩, ১৪ নভেম্বর ২০২৪
আইন করে কুইক রেন্টালের দায়মুক্তি অবৈধ: হাইকোর্ট

কুইক রেন্টালসংক্রান্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ এর ৯ ধারায় দায়মুক্তি অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

রায়ে আদালত বলেন, দায়মুক্তি দিয়ে করা আইন অবৈধ এবং ক্রয় সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো ব্যক্তির একক ক্ষমতা গণতান্ত্রিক দেশে থাকতে পারে না। এটি সংবিধানের পরিপন্থি।

এ সময় আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন  ড. শাহদীন মালিক। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার সিনথিয়া ফরিদ।

আইনজীবীরা জানান, হাইকোর্ট  আইনের এই ধারা অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করার ফলে ক্রয় সংক্রান্ত বিষয়ে মন্ত্রীর একক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রহিত হলো। এখন সরকার চাইলে ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর সঙ্গে চুক্তি পুনর্বিবেচনা করতে পারবে।

গত ২ সেপ্টেম্বর কুইক রেন্টাল সংক্রান্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০-এর ৯ ধারায় দায়মুক্তি কেন অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

এর আগে কুইক রেন্টাল সংক্রান্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০-এর ৯ ধারায় দায়মুক্তি এবং ক্রয় সংক্রান্ত ৬ (২) ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন-২০১০'- এর ৯ ও ৬ (২) ধারা অনুযায়ী, রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কোনো কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন বা মামলা করা যাবে না। এই ধারা দুটি চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের ওপর প্রাথমিক শুনানি শেষে গত ২ সেপ্টেম্বর বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের হাইকোর্টে বেঞ্চ সোমবার রুল জারি করেন। এই রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি করে আজ হাইকোর্ট রায় দেন।

রিটে বলা হয়, রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে অস্বাভাবিক খরচ আর অনিয়মের কারণেই বারবার বিদ্যুতের দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে সরকার। অথচ সেই অনিয়মকে বৈধতা দেওয়ার জন্য আইন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এসব অনিয়মের কোনো বিচারও চাওয়া যাবে না—এটা জনস্বার্থবিরোধী ও সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

রুল জারির পর ড. শাহদীন মালিক সাংবাদিকদের বলেন, 'বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন-২০১০ সাধারণত কুইক রেন্টাল আইন নামে পরিচিত। আইনটির ৬-এর (২) উপধারা ও ৯ নম্বর ধারার সাংবিধানিক বৈধতা চ্যালেঞ্জ করেছি।'

৬-এর ধারায় বলা আছে, জ্বালানিমন্ত্রী তার একক বিবেচনায় কোনো একক ব্যক্তি বা কোম্পানির সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে তার সঙ্গে বিদ্যুৎ উৎপাদনের চুক্তি সই করতে পারবেন। এখানে মন্ত্রীর একক বিবেচনায় যাকে ইচ্ছা, যত টাকায় ইচ্ছা চুক্তি করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

আর আইনটির ৯ নম্বর ধারায় বলা আছে, কাকে চুক্তি দেওয়া হয়েছে, কত টাকার চুক্তি করা হচ্ছে, এসব ব্যাপারে প্রশ্ন তুলে আদালতে শরণাপন্ন হওয়া যাবে না।

দুটি ধারাই সংবিধানের লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করে এই আইনজীবী অভিযোগ করেন, ধারা দুটির অপব্যবহারের ফলে বিগত সরকারের আমলে কুইক রেন্টালের পাওয়ার প্ল্যান্টের নামে রাষ্ট্রের হাজার হাজার কোটি টাকা নষ্ট হয়েছে।

ঢাকা/মামুন/ইভা 


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়