ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

ইন্টারভিউয়ে কমন কিছু প্রশ্নের জবাব দেবেন যেভাবে (শেষ পর্ব)

সাখাওয়াত মিশু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৫৬, ১ অক্টোবর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ইন্টারভিউয়ে কমন কিছু প্রশ্নের জবাব দেবেন যেভাবে (শেষ পর্ব)

ইন্টারভিউয়ে আপনাকে যেসব প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে, সেগুলোর জবাব যদি আগে থেকেই জানা থাকে তবে কেমন হয়?

ইন্টারভিউয়ে কী ধরনের প্রশ্নের মুখোমুখী হতে হবে তা অনুমান করা যায় না। তারপরও আমরা আপনাকে ইন্টারভিউয়ে কমন ৩১টি প্রশ্ন, যেগুলো সবচেয়ে বেশি জিজ্ঞাসা করা হয়, সেগুলোর জবাব সম্পর্কে ধারণা রাখতে সহায়তা করবো। ইন্টারভিউয়ের প্রশ্নের জবাব নিয়ে তিন পর্বের প্রতিবেদনের আজ থাকছে শেষ পর্ব।

আপনার চাকরিতে গ্যাপ পড়ার কারণ কী?

যদি আপনি কিছু দিন চাকরিহীন থাকেন তবে এ ধরনের প্রশ্নের মুখোমুখী হতে পারেন। এমন প্রশ্নে অবশ্যই আপনাকে কৌশলী জবাব দিতে হবে। সুতরাং আকর্ষণীয়ভাবে জবাব দিন এবং বলুন, আপনি কিছু দিন বিরতি চেয়েছিলেন। এখন আপনি এই প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে পুরোপুরি প্রস্তুত।

ক্যারিয়ার পথ পরিবর্তনের কারণ ব্যাখ্যা করবেন কী?

এমন প্রশ্ন শুনে থমকে যাবেন না। বড় করে একটি নিঃশ্বাস নিয়ে ক্যারিয়ার পথ পরিবর্তনের কারণ ব্যাখ্যা করুন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো, আগের পেশা বা কর্মের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে নতুন কর্মে বা নতুন কাজে যুক্ত হওয়ার কয়েকটি যুক্তি তুলে ধরুন। এই প্রশ্নের জবাব যদি সন্তোষজনকভাবে দিতে পারেন, তবে আশা করা যায় তা আপনার চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে বেশ কাজে দেবে।

কিভাবে আপনি কাজের চাপ সামলান?

এই প্রশ্নটি আপনার কাজের দক্ষতার সঙ্গে সম্পর্কিত। এই প্রশ্নের জবাব দেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই এমন একটি উদাহরণ তুলে ধরবেন যাতে আপনি শান্ত, সুচিন্তিত ও গুছালোভাবে চাপ সামলে কাজ সম্পন্ন করার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে। তারপর বিষয়টিকে সহজভাবে নিতে পারেন বলে বর্ণনা করুন।

প্রথম ৩০, ৬০ ও ৯০ দিনে এই পদে আপনার ভূমিকা কী হবে?

কিভাবে আপনি কি করতে চাচ্ছেন তা বলার মাধ্যমে জবাবটি শুরু করুন। জবাবে অবশ্যই আপনি সেই সব তথ্য রাখবেন যা আপনার মাঝে কোম্পানি দেখতে চায়, যা আপনার কর্মক্ষমতা প্রকাশ করে, আপনাকে কোম্পানির সামনে তুলে ধরে। তারপর আপনি নির্দিষ্ট কিছু তথ্য দিন যার মাধ্যমে কোম্পানিতে উল্লেখ্যযোগ্য পরিবর্তন দেখাতে চান। এক্ষেত্রে আপনি চাকরিটি যদি পেয়ে থাকেন তবে কীভাবে, কোন প্রজেক্ট দিয়ে কাজ শুরু করতে চান তাও বলতে পারেন।

কেমন বেতন প্রত্যাশা করেন?

এই প্রশ্নের জবাবটি আপনি নিজের গবেষণা ও পে স্কেল অনুযায়ী দেবেন। তবে পরামর্শ থাকবে আপনার অভিজ্ঞতা, যোগ্যতা ও শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী বেতন প্রত্যাশা করবেন। এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার পদের বেতনের রেঞ্জটিও বিবেচনায় রাখবেন।

চাকরির পাশাপাশি আর কী করতে পছন্দ করেন?

চাকরিদাতারা আপনাকে ব্যক্তিগত প্রশ্ন করার মাধমেও যাচাই করতে পারেন এবং আপনার ব্যক্তিত্ব যাচাই করতে পারেন। কখনো কখনো আপনি কতটা সংস্কৃতিপ্রেমী তাও দেখতে চাইতে পারেন। অনেক সময় চাকরিদাতারা আপনার অবসরের কাজ সম্পর্কেও জানতে চাইতে পারেন। সুতরাং এসব বিষয়েও আপনি নিজেকে প্রস্তুত রাখবেন।

আপনি যদি কোনো প্রাণী হতেন তবে কি হতে চাইতেন?

চাকরিদাতারা আপনাকে এ ধরনের প্রশ্ন করে আপনাকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করতে পারেন। তাই এ ধরনের প্রশ্ন শুনে ঘাবড়ে যাবেন না। বরং ভালো একটি জবাব দেওয়ার চেষ্টা করুন। তা আপনার জন্য বাড়তি সুযোগ বয়ে আনতে পারে।

কতগুলো টেনিস বল আপনি লিমোজিনে ফেলতে পারবেন?

এই প্রশ্নটি কোনো সংখ্যা জানতে নয়, বরং আপনার জবাব দেওয়ার পদ্ধতি এবং যৌক্তিকতা যাচাইয়ে করে থাকতে পারেন। সুতরাং এমন প্রশ্নের জবাব দেওয়ার আগে বড় করে নিঃশ্বাস নিয়ে একটু ভাবুন।

আপনি কি বাবা হওয়ার পরিকল্পনা করছেন?

চাকরিদাতারা আপনার পরিবার ও আপনার সামনের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে এ ধরনের প্রশ্ন করতে পারেন। এছাড়া জাত, ধর্ম, বর্ণ ইত্যাদি নিয়ে আপনার মনোভাব জানতেও তারা কৌশলে বিভিন্ন প্রশ্ন করতে পারেন। সুতরাং এ ধরনের প্রশ্নের সম্মুখীন হতে নিজেকে প্রস্তুত রাখবেন। জবাবে কিছুটা কৌশলী হবেন। বলবেন, আপনারা বুঝতেই পারছেন আমি এই মুহূর্তে বাবা হতে প্রস্তুত নই। আমি এখন ক্যারিয়ার নিয়ে বেশি চিন্তিত। আমার এখন একটাই লক্ষ্য পেশাগত জায়গায় সফল হওয়া।

আমরা ভালো এবং ভিন্ন কিছু করতে পারবো বলে আপনার মনে হয় কী?

এ প্রশ্নের মাধ্যমে চাকরিদাতারা আপনার কাছ থেকে কোম্পানির বর্তমান অবস্থা নিয়ে মন্তব্য জানার চেষ্টা করবেন। তারা আপনার মাঝে থেকে কোম্পানির জন্য কল্যাণকর এমন কোনো পরিকল্পনা বের করে আনার চেষ্টা করবেন। তাই এ ধরনের প্রশ্নের জবাবে প্রতিষ্ঠানের জন্য আপনার দু একটি পরিকল্পনা তুলে ধরবেন। আর অবশ্যই বলবেন, কোম্পানির বর্তমান কর্মকাণ্ড অবশ্যই প্রসংশনীয়। কাজের সুযোগ পেলে কোম্পানিকে আরো এগিয়ে নিতে সচেষ্ট হবেন। এ ধরনের জবাব চাকরিদাতার মাঝে আপনার জন্য ভরসার জায়গা তৈরি করবে। 

আমাদের কাছে আপনার কোনো প্রশ্ন আছে?

এ ধরনের প্রশ্ন করে চাকরিদাতা আপনার মনোভাব যাচাই করতে পারেন। এমন প্রশ্নের জবাবে ভুলেও ‘আমি কি চাকরিটি পাবো’ ধরনের প্রশ্ন করবেন না। বরং কোম্পানি সামনে কি পণ্য বাজারে নিয়ে আসছে অথবা কোম্পানিকে এগিয়ে নিতে তারা নতুন কি উদ্যোগ নিচ্ছে তা জানতে পারেন। এসব প্রশ্ন আপনার পেশাদারী মনোভাবই সবচেয়ে বেশি প্রকাশ করবে।

তথ্যসূত্র: দ্য মিউস

পড়ুন :


ঢাকা/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়