যে দেশে এইডস রোগী সবচেয়ে বেশি
লাইফস্টাইল ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম
হিউম্যান ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস (এইচআইভি) হচ্ছে, এমন ধরনের ভাইরাস যা মানুষের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল করে এইডস রোগ সৃষ্টি করে। প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে এইচআইভিকে এইডস এর চূড়ান্ত পর্যায়ে যাওয়া থেকে রোধ করা যায়।
এইচআইভি ভাইরাস প্রধানত মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার প্রধান কোষগুলো যেমন সিডি৪+ কোষগুলোকে আক্রমণ করে। যথাযথ রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা এবং সঠিক চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা এইডস নিয়ন্ত্রণে অপরিহার্য। তবে এই রোগ সম্পূর্ণ দূর করে এখনো সম্ভব নয়।
এইচআইভি প্রধাণত যৌনবাহিত রোগ হলেও, এই ভাইরাস রক্তদান এবং জন্ম বা স্তন্যপান করানোর সময়ও পরিবাহিত হতে পারে। এছাড়া আরো কয়েকটি উপায়ে ছড়াতে পারে।
দক্ষিণ আফ্রিকার দেশ সোয়াজিল্যান্ডে এইচআইভি/এইডস সংক্রমণের হার বিশ্বে সর্বোচ্চ। দেশটির মোট জনসংখ্যার ২৭.২০ শতাংশ এই রোগ নিয়ে জীবনযাপন করছে। সোয়াজিল্যান্ডে এই ভাইরাস সংক্রমণের বেশিরভাগ কারণ যৌনমিলনে কনডম কম ব্যবহার, অর্থ বা উপহারের বিনিময়ে যৌন সম্পর্ক এবং যৌন সহিংসতা। এই মহামারীতে নারীরা সবচেয়ে বেশি সংক্রমিত, ৩১ শতাংশের বেশি নারী এইচআইভি পজেটিভ, পুরুষের মধ্যে ২০ শতাংশ এইচআইভি পজেটিভ। নারীর প্রতি উচ্চ মাত্রায় লিঙ্গ সহিংসতা, বহুবিবাহ এবং বয়স্ক পুরুষদের সঙ্গে বাল্যবিবাহের ঘটনা এই উচ্চ হার বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে।
ওয়ার্ল্ড অ্যাটলাস চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বিশ্বে কোন দেশের জনসংখ্যার কত শতাংশ এইচআইভি/এইডস রোগে আক্রান্ত, তার ওপর ভিত্তি করে ৫০টি দেশের র্যাংকিং তুলে ধরা হয়েছে।
১. সোয়াজিল্যান্ড- ২৭.২০ শতাংশ
২. লেসোথো- ২৫.০০ শতাংশ
৩. বোটসওয়ানা- ২১.৯০ শতাংশ
৪. সাউথ আফ্রিকা- ১৮.৯০ শতাংশ
৫. নামিবিয়া- ১৩.৮০ শতাংশ
৬. জিম্বাবুয়ে- ১৩.৫০ শতাংশ
৭. জাম্বিয়া- ১২.৪০ শতাংশ
৮. মোজাম্বিক- ১২.৩০ শতাংশ
৯. মালাউই- ৯.২০ শতাংশ
১০. উগান্ডা- ৬.৫০ শতাংশ
১১. ইকুটোরিয়াল গিনি- ৬.২০ শতাংশ
১২. কেনিয়া- ৫.৪০ শতাংশ
১৩. তাঞ্জানিয়া- ৪.৭০ শতাংশ
১৪. সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক- ৪.০০ শতাংশ
১৫. ক্যামেরুন- ৩.৮০ শতাংশ
১৬ গ্যাবন- ৩.৬০ শতাংশ
১৭. বাহামা- ৩.৩০ শতাংশ
১৮. রুয়ান্ডা- ৩.১০ শতাংশ
১৯. কঙ্গো রিপাবলিক- ৩.১০ শতাংশ
২০. গিনি-বিসাউ- ৩.১০ শতাংশ
২১. নাইজেরিয়া- ২.৯০ শতাংশ
২২. কোত দিভোয়ার- ২.৭০ শতাংশ
২৩. সাউথ সুদান- ২.৭০ শতাংশ
২৪. ইউএসএ- ২.৪০ শতাংশ
২৫. হাইতি- ২.১০ শতাংশ
২৬. টোগো- ২.১০ শতাংশ
২৭. অ্যাঙ্গোলা- ১.৯০ শতাংশ
২৮. বেলিজ- ১.৮০ শতাংশ
২৯. সিয়েরা লিওন- ১.৭০ শতাংশ
৩০ গাম্বিয়া- ১.৭০ শতাংশ
৩১. জ্যামাইকা- ১.৭০ শতাংশ
৩২. লাইবেরিয়া- ১.৬০ শতাংশ
৩৩. গায়ানা- ১.৬০ শতাংশ
৩৪. ঘানা-১.৬০ শতাংশ
৩৫. গিনি- ১.৫০ শতাংশ
৩৬. সুরিনাম- ১.৪০ শতাংশ
৩৭. বার্বাডোজ- ১.৩০ শতাংশ
৩৮. জিবুতি- ১.৩০ শতাংশ
৩৯. চাদ- ১.৩০ শতাংশ
৪০. ত্রিনিদাদ ও টোবাগো- ১.২০ শতাংশ
৪১. থাইল্যান্ড- ১.১০ শতাংশ
৪২. ইথিওপিয়া- ১.১০ শতাংশ
৪৩. বুরুন্ডি- ১.১০ শতাংশ
৪৪. বেনিন- ১.০০ শতাংশ
৪৫. মালি- ১.০০ শতাংশ
৪৬. ডোমিনিকান রিপাবলিক- ১.০০ শতাংশ
৪৭. ইউক্রেইন- ০.৯০ শতাংশ
৪৮. পাপুয়া নিউ গিনি- ০.৯০ শতাংশ
৪৯. কাবো ভার্দে- ০.৮০ শতাংশ
৫০. পানামা- ০.৮০ শতাংশ
ওয়ার্ল্ড অ্যাটলাসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এইচআইভি সংক্রমণের সর্বোচ্চ হারের সব দেশই জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংক্রমণের হার কমিয়ে আনার লক্ষে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এর মধ্যে কিছু পদক্ষেপ হচ্ছে- এইচআইভি/এইডস সম্পর্কে গণশিক্ষা অন্তর্ভুক্ত, সংক্রমিত ব্যক্তিদের জন্য অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপি, লিঙ্গ বৈষম্য কমাতে লিঙ্গ সমতা নীতি প্রবর্তন এবং সংক্রমিত মায়ের মাধ্যমে শিশুর সংক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য প্রয়োজনীয় সতর্কতায় সচেতনতা বৃদ্ধি কার্যক্রম।
ঢাকা/ফিরোজ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন