ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

কসাইয়ের কেরামতি (ভিডিও)

মো. রায়হান কবির || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৪৫, ১ আগস্ট ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০

তারুণ্যের  জয়গান গাওয়া হলে উপমা হিসেবে আমরা বলে থাকি, তরুণ তুর্কি। যার কথা বলা হচ্ছে সেও একজন তুর্কি এবং তরুণ। কিন্তু এই তরুণ তুর্কি বিশ্বজুড়ে খ্যাতি অর্জন করেছেন মাংসের ওপর তার দখল ও দক্ষতা দেখিয়ে। তার আসল নাম নুসরেত গোক্সে।

কিন্তু একটি বিশেষ দক্ষতা বা স্পেশালিটির জন্য দুনিয়াজোড়া মানুষ এখন তাকে চেনে ‘সল্ট বাই’ নামে। আর মাংসের এই কারিগর বিশ্বের বড় বড় শহরে তার চেইন রেস্টুরেন্ট খুলেছেন, যার নামও তার মূল নাম থেকেই নেয়া হয়েছে, নুসরে-ইট। নুসরে-ইট রেস্টুরেন্টের মূল খাবার স্টেক। বিশ্বের অনেক সেলেব্রেটি সল্ট বাইয়ের রেস্টুরেন্টে একবার হলেও ঢু মারেন, আর সল্ট বাইয়ের রেস্টুরেন্টে গিয়েছেন অথচ সল্ট বাইয়ের ট্রেডমার্ক সল্ট বা লবণ ছিটিয়ে দেননি এমন সেলেব্রিটি নেই একজনও।

ম্যারাডোনা থেকে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো কিংবা নেইমার কে যায়নি সল্ট বাইয়ের স্টেক খেতে? নুসরেত বা সল্ট বাইয়ের ফুটবলের প্রতিও আগ্রহ অনেক। তাই তার রেস্টুরেন্টে বিশ্ব ফুটবলের প্রায় সকল বর্তমান এবং সাবেক তারকারা ঢু মেরেছেন, লবণ ছিটিয়েছেন স্টেকের ওপর। তবে তিনি কিন্তু একটিমাত্র ভিডিও দিয়েই আজকের সল্ট বাই। ২০১৭ সালের ৭ জানুয়ারি সল্ট বাই তার স্টাইলিশ মাংস কাটার ভিডিও আপলোড করেন। সেখানে তার মাংস কাটার ধরন এবং শৈল্পিকতা মানুষকে মুগ্ধ করে। সেই ভিডিও দেখা হয়, এক কোটি বার! এই একটি ভিডিও তাকে নিয়ে যায় খ্যাতির চূড়ায়। মাংস কাটা যার কাছে ছেলে খেলা।

সল্ট বাইয়ের স্টেক প্রিপারেশন সত্যিই একটি দেখার মতো ব্যাপার। মানুষ মন্ত্রমুগ্ধের মতো দেখতে থাকে কিভাবে ছুরিকে তুলি আর মাংসকে ক্যানভাস বানিয়ে চলে তার শিল্পচর্চা! প্রায় সব সময় গোলাকার কালো রোদচশমা পরা সল্ট বাইকে বেশিরভাগ সময়ই দেখা যায় সাদা টি-শার্ট পরিহিত অবস্থায়।

ইউটিউবে তার ভিডিওগুলো ব্যাপক জনপ্রিয়। তবে শুধু মাংস কাটার ভিডিওই তিনি আপলোড করেন না, দেখান তার ফুটবল দক্ষতাও। তবে তার ভিডিওর আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে স্টেক তৈরি শেষে তার ওপর কিংফু স্টাইলে লবণ ছেটানো। হাতকে কুংফুর মতো স্টাইল করে, আঙুল থেকে লবণ পুরো হাতের বাহু দিয়ে স্টেকে ছিটিয়ে দেন তিনি। আর একারণেই তিনি ভাইরাল হয়েছেন সল্ট বাই নামে।

আজকে কোরবানির দিনে হয়তো আপনার কোরাবানিতে সাহায্য করতে যারা এসেছেন তাদেরকে নিছক কসাই ভেবেই ছোট করছেন কেউ কেউ। অথচ এই তরুণ তুর্কীর নাম গুগলে সার্চ দিলেই নামের সাথে লেখা আসে তার্কিস বুচার বা তুরস্কের কসাই! অর্থাৎ কসাই বলেই তিনি আজ দুনিয়াজোড়া খ্যাতি কুড়িয়েছেন, কসাইকে ছোট পেশা না ভেবে এটাকে ভালোবেসে নিয়ে গেছেন শিল্পের পর্যায়ে।

তাই যেকোনো পেশা বা কাজকে ভালোবাসলে সেই কাজ বা পেশা আপনার জন্যও বয়ে আনবে অর্থ এবং যশ। আর কাজকে কাজ ভাবলেই সেটা আপনার জন্য হবে নিদারুণ কষ্টের। আজকের এই ত্যাগের দিনে যারা আপনার পাশে থেকে সাহায্য করছে তাদেরই হয়তো কসাই বলে অবহেলা করছেন, অথচ সল্ট বাই নিজেকে কসাই পরিচয় দিতেই গর্ববোধ করেন। তাই যে যার কাজকে ভালোবাসুন দেখবেন সে কাজ করতে আপনি যেমন আনন্দ পাবেন, তেমনি সেটা আপনাকে এনে দেবে সাফল্য।

ঢাকা/ফিরোজ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়