ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

নবযুগ পত্রিকার ৯৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

হাকিম মাহি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:১৯, ১২ জুলাই ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নবযুগ পত্রিকার ৯৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

হাকিম মাহি : ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের মুখপত্র নবযুগ পত্রিকার ৯৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ শুক্রবার।  ১৭৫৭ সাল থেকে একচেটিয়া শাসন ও শোষণ করে আসা ইংরেজ বেনিয়াদের বিরুদ্ধে কেউ যখন মাথা তুলে দাঁড়াতে সাহস পেত না, সেই সময় এই পত্রিকা প্রকাশের দুঃসাহস দেখান বাংলার তিনজন শ্রেষ্ঠ সন্তান। তারা হলেন শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক, কবি কাজী নজরুল ইসলাম এবং কমরেড মুজফ্ফর আহমেদ।

নবযুগ কলকাতা থেকে প্রকাশিত এক পাতার সান্ধ্য দৈনিক। ১৯২০ সালের ১২ জুলাই, কলকাতার ৬নং টার্ন স্ট্রিট থেকে আজকের এই দিনে প্রথম প্রকাশিত। সেই হিসাবে আজ নবযুগ পত্রিকার ৯৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এর মূল্য ছিল এক পয়সা। এর মালিক ও পরিচালক ছিলেন শের-ই- বাংলা  এ কে ফজলুল হক এবং যুগ্ম সম্পাদক কাজী নজরুল ইসলাম ও কমরেড মুজফ্ফর আহমেদ। পত্রিকায় পরিচালকের নাম মুদ্রিত হতো, কিন্তু সম্পাদকের নাম থাকত না।  সেই সময় মানুষের কাছে স্বাধীনচেতা, অসাম্প্রদায়িক ও গণমুখী পত্রিকা হিসেবে এর পরিচিত ছিল।

বিটিশদের অত্যাচারের শেষ কামড় তখন। ইংরেজদের ভারতীয় উপমহাদেশ ত্যাগ ও দেশ ভাগ হওয়ার গুঞ্জন, সেই সময় শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক কৃষক প্রজা পার্টি গঠনের লক্ষ্যে একটি পত্রিকা প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেন। একই সময়ে নজরুল ইসলাম, মুজফ্ফর আহমেদ ও কিছু সমমনা ব্যক্তি ব্রিটিশবিরোধী গণজাগরণের লক্ষ্যে একটি দৈনিক পত্রিকা প্রকাশেরও চিন্তাভাবনা করছিলেন। এ ব্যাপারে ফজলুল হকের বাসভবনে একাধিকবার সভা হয় এবং তাতে পত্রিকার নামসহ অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে আলোচনা হয়। শেষ পর্যন্ত কবি নজরুলের প্রস্তাব অনুযায়ী পত্রিকার নামকরণ করা হয় ‘নবযুগ’।

প্রথম থেকেই ইংরেজ সরকারের বিরুদ্ধে এ পত্রিকায় নজরুলের আবেগী ও বলিষ্ঠ ভাষায় ব্রিটিশবিরোধী সম্পাদকীয় ও কবিতা ছাপা হতো। এগুলো ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সকল শ্রেণির মানুষকে দারুণভাবে উদ্বুদ্ধ করে। এক পর্যায়ে ব্রিটিশ সরকার এ পত্রিকার জামানত বাজেয়াপ্ত করে ও পত্রিকাটি বন্ধ হয়ে যায়। শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুক হকের চেষ্টায় কিছুদিন পর পত্রিকাটি আবার প্রকাশিত হয়। কিন্তু পরে ফজলুল হকের সঙ্গে মতবিরোধের কারণে নজরুল ও মুজফ্ফর আহমেদ সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করলে পত্রিকাটি আবার বন্ধ হয়ে যায়।

এরপর ১৯৪২ সালে ফজলুল হক বাংলার প্রধানমন্ত্রী হলে তার উদ্যোগে এবং নজরুলের সম্পাদনায় পুনরায় পত্রিকাটি প্রকাশিত হয়। এ সময় কাজী নজরুল ইসলাম অসুস্থ হয়ে পড়লে মাওলানা আহমদ আলী সম্পাদনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। কিন্তু দুই বছর পত্রিকাটি চালু থাকার পর চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়।

১৯২২ সালে নবযুগ পত্রিকায় প্রকাশিত কিছু সম্পাদকীয় ও প্রবন্ধ নিয়ে কাজী নজরুলের ইসলামের যুগবাণী গ্রন্থটি প্রকাশিত হলে ব্রিটিশ সরকার সেটি বাজেয়াপ্ত করে। পরে অবশ্য যুগবাণীর কয়েকটি সংস্করণ প্রকাশিত হয়।


রাইজিংবিডি/ঢাকা/১২ জুলাই ২০১৯/হাকিম মাহি/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়