ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

রোজিনা মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে: ডিআরইউ

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:০৩, ২১ মে ২০২১   আপডেট: ১৮:০৪, ২১ মে ২০২১
রোজিনা মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে: ডিআরইউ

সরকারি নথি সরানোর অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাাগরে থাকা প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের রোববার জামিন না হলে আন্দোলন অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)।

শুক্রবার (২১ মে) ডিআরইউ প্রাঙ্গণে রোজিনা ইসলামকে নির্যাতন ও গ্রেপ্তারের ঘটনায় প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে এ কথা জানান সহ-সভাপতি ওসমান গণি বাবুল।  এ সময় অন্যান্য সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।  এদিন ছিল প্রতিবাদ সমাবেশের চতুর্থ দিন।

সাংবাদিক নেতারা বলেন, স্বাস্থ্য খাত নিয়ে একের পর এক দুর্নীতির বিষয়ে রিপোর্ট করায় রোজিনা ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যায়ভাবে তাকে কারাগারে আটকে রাখার দীর্ঘ প্রক্রিয়া চলছে। জনগণকে পক্ষে লিখতে গিয়েই সুপরিকল্পিতভাবে তাকে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তার এ পরিণতি হয়েছে।

তারা বলেন, যারা জনগণের টাকা চুরি করছে তাদের কিছু হচ্ছে না।  আর যে চুরির বিষয়ে লিখলো তাকে কারাবরণ করতে হচ্ছে।  তারা (আমলারা) গুন্ডামি, মাস্তানি করছে।  এ ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তাদের দিয়েই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে যা হাস্যকর।  নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি দিয়ে এর তদন্ত করতে হবে।

ওসমান গণি বাবুল বলেন, রোজিনা ইসলামের বিষয়ে মন্ত্রীরা যে আশ্বাস দিয়েছিলেন তার বাস্তবায়ন হয়নি। তাকে জামিন দেওয়া হয়নি।  আমরা সরকারকে আরও দুই দিন সময় দিয়েছি। রোববার রোজিনার আদেশ যদি আমাদের পক্ষে না আসে, যদি তার জামিন না হয় তাহলে আমরা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবো।  পিছপা হবো না। মাঠে আছি, মাঠেই থাকবো।

ডিআইইউয়ের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান খান বলেন, রোজিনার মুক্তির আন্দোলনকে বিঘ্নিত করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিক্ষিপ্ত, বিভ্রান্ত তথ্য ছড়ানো হচ্ছে।  শুধু জামিন নয়, মামলা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। রোজিনাকে যারা নির্যাতন করেছে তাদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় এক তরফাভাবে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।  নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানান তিনি।

মশিউর রহমান খান বলেন, ডিআরইউ তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রকৃত সত্য প্রকাশ করবে।  আমরা রোজিনার পরিবারের সাথে মামলা করার বিষয়ে যোগাযোগ করেছি।  তার পরিবার যদি মামলা না করে তাহলে ডিআরইউ মামলা করবে।

তিনি বলেন, আন্দোলনে কে থাকুক বা না থাকুক। ডিআরইউ পাশে আছে, থাকবে। যৌক্তিক সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

সাংবাদিক নেতা দ্বীপ আজাদ বলেন, তিন জন মন্ত্রী রোজিনার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছিলেন তা নিয়ে সন্দিহান। জামিনযোগ্য ধারার মামলায় জামিন না দিয়ে তাকে কারাগারে থাকতে হচ্ছে। প্রথম দিনেই মামলাটি খারিজ করে দেওয়া উচিত ছিল। তারপরও আইনের প্রতি আস্থা আছে। দেখি রোববার কি হয়। সাংবাদিক সংগঠনগুলো বৈঠকে যাচ্ছে। রোববার রোজিনার জামিন না হলে লাগাতার কর্মসূচি চলবে।

তিনি বলেন, সাংবাদিক সমাজ ঐক্যবদ্ধ।  তারা ভেবেছিল প্রথম আলোর সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা দিলে কিছু হবে না।  এটা ভুল।  দুর্নীতিবাজরা প্রশ্রয় পাবেন।  যিনি দুর্নীতি নিয়ে রিপোর্ট করলো তিনি কারাগারে থাকবেন।

কিছুদিন আগে কারামুক্ত হওয়া সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল বলেন, রোজিনা মানুষের উপকার করতে গিয়েই কারাগারে গেছেন।  এখন দীর্ঘ অপেক্ষা মুক্তি কবে হবে।

তিনি বলেন, আমরা যে কেউ যেকোনো সময় এমন ঘটনার শিকার হতে পারি।  তা হতে পারে ভিন্ন কৌশলে।  আমরা আন্দোলনে থাকি দেখি রোববার কি হয়।

২৪ ঘণ্টার মধ্যে রোজিনা ইসলামের বিষয়ে সমাধান না হলে অনেকে স্বেচ্ছায় কারাবরণের কথা জানান। একে মুক্ত গণমাধ্যমের জন্য আন্দোলন বলেন অনেকে। তারা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগও দাবি করেন।
 

মামুন/সাইফ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়