ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

দু’দিনের ব্যবধানে মা-বাবাকে হারালেন সাংবাদিক দুই ভাই

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:২৫, ১১ জুলাই ২০২১  
দু’দিনের ব্যবধানে মা-বাবাকে হারালেন সাংবাদিক দুই ভাই

সাজেদা বেগম ও তোফাজ্জল হক

শনিবার (১০ জুলাই) রেজোয়ানুল হক রাজা ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘মা এখন নীল আকাশের তারা হয়ে গেছেন। ৮২ বছরের জীবনের অর্ধেকই তার কেটেছে নানা রোগে ভুগে। শেষেও অনেক কষ্ট পেলেন। সন্তানদের চোখের পানি, অগণিত মানুষের প্রার্থনার পরও স্রষ্টা আমাদের পরিবারের প্রাণ ভোমরাকে ফিরিয়ে না দিয়ে নিজের কাছে নিয়ে গেছেন। তাই মিনতি করি, যথেষ্ট হয়েছে, ওপারে মায়ের যেন কোনো কষ্ট না হয়, তিনি যেন বেহেশতের বাগানে ফুল হয়ে থাকতে পারেন।‘

‘মায়ের জন্য যারা দোয়া করেছিলেন, তার বিদায়ে শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন তাদের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা। যাদের ফোন ধরতে পারিনি তারা ক্ষমা করে দেবেন। আমাদের জন্য দোয়া জারি রাখতে আপনাদের অনুরোধ করব। কারণ আব্বা এখনও হাসপাতালের আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন, যিনি এখনও জানেন না কখনও চোখ মেলতে পারলেও জীবন সঙ্গীকে আর দেখতে পাবেন না। আল্লাহর কাছে আরেকটি মিনতি আছে, আর কোনো পরিবারকে যেন দুঃসহ এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে এবং এত কঠিন পরীক্ষা দিতে না হয়।’

মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা প্রধান রেজোয়ানুল হক রাজা এবং নিউজ টোয়েন্টিফোরের জ্যেষ্ঠ বার্তা সম্পাদক বোরহানুল হক সম্রাট। তারা সহোদর। মাকে হারান বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) রাত পৌনে ১১টায়। করোনায় আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মা সাজেদা বেগম মৃত্যুবরণ করেন।

নিয়তির নিষ্ঠুর পরিহাস। মায়ের মৃত্যুর দুই দিন পর বাবা তোফাজ্জল হককেও হারালেন তারা। করোনায় আক্রান্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের আইসিইউ-তে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার (১১ জুলাই) সকাল ৭টার দিকে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

রেজোয়ানুল হক রাজা ও বোরহানুল হক সম্রাটের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তাদের মা মারা যাওয়ার পরে বাবার জীবনও সংকটাপন্ন থাকায় পরিবারের পক্ষ থেকে সবার কাছে দোয়া চাওয়া হয়েছিল। এমন দুঃসহ পরিস্থিতির মুখোমুখি যাতে আর কোনো পরিবারকে হতে না হয়, আল্লাহর কাছে সে মিনতি করেছিলেন সাংবাদিক রেজোয়ানুল হক রাজা।

করোনায় আক্রান্ত তোফাজ্জল হক জানতেন না তার স্ত্রীর মৃত্যুর কথা। তার শরীর খারাপের কারণে সন্তানরা বাবাকে জানাননি, তাদের মায়ের মৃত্যুর কথা। সেই কথা আর কোনোদিন জানানোর সুযোগও নেই। স্ত্রীর চলে যাওয়া পথ ধরে সন্তানদের এতিম করে তিনিও চলে গেলেন না ফেরার দেশে, অন্য জগতে।

মেসবাহ/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়