রাইজিংবিডির মামুন পেলেন বজলুর রহমান স্মৃতি পদক
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
‘বজলুর রহমান স্মৃতিপদক-২০২০’ নিচ্ছেন মো. মামুন চৌধুরী
মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রতিবেদনের জন্য ‘বজলুর রহমান স্মৃতি পদক-২০২০’ পেয়েছেন মো. মামুন চৌধুরী।
রোববার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে মামুন চৌধুরীর হাতে এই পদক ও সম্মাননার চেক তুলে দেওয়া হয়। এর আগে মামুন চৌধুরীর সাংবাদিকতা সম্পর্কে সংক্ষেপে তুলে ধরেন জুরিবোর্ডের সদস্য নওয়াজেশ আলী খান।
তিনি বলেন, মো. মামুন চৌধুরী ২০০০ সালে সাপ্তাহিক মুক্তপথ পত্রিকার মাধ্যমে সাংবাদিকতা শুরু করেন। সর্বশেষ তিনি রাইজিংবিডি ডটকম ও জনকণ্ঠের হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও দৈনিক সংবাদের সম্পাদক বজলুর রহমানের মৃত্যুর পর ২০০৮ সালে তার নামে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সাংবাদিকতার জন্য এই পদক চালু করে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
মো. মামুন চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধে হবিগঞ্জ অঞ্চলে নানা ইতিহাস ও অজানা তথ্য নিয়ে প্রতিবেদন লিখেছেন। যা গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত জাতীয় দৈনিক কালবেলায় ধারাবাহিক প্রকাশিত হয়।
মামুন চৌধুরী ছাড়াও বিজয়ী হয়েছেন সাংবাদিক রাজন ভট্টাচার্য এবং সাংবাদিক শাহনাজ শারমিন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সাংবাদিকতায় যারা কাজ করছেন, তারা জাতীয় জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দিতে সাংবাদিকদের উদ্বুদ্ধ করতে বজলুর রহমান স্মৃতিপদক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ সময় প্রয়াত সাংবাদিক বজলুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান স্পিকার।
অনুষ্ঠানে স্পিকার বলেন, সাংবাদিক বজলুর রহমান একজন দেশশ্রেমিক, মুক্তিযোদ্ধা, নিরহংকারী মানুষ ছিলেন। তিনি অজ্ঞতা, অন্যায় ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে গেছেন। সুস্থ ও সচেতন সমাজ বিনির্মাণে সাংবাদিকতাকে কীভাবে কাজে লাগানো যায়, তিনি তা শিক্ষা দিয়ে গেছেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে তিনি ছিলেন সদা সোচ্চার। তার জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা চর্চা করতে হবে।
শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে সপরিবারে হত্যার পর এ দেশের স্বাধীনতার ইতিহাসকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপপ্রয়াস চালানো হয়। তাই স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাসকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা সবার কর্তব্য। সংবাদকর্মীরা নিয়মিতভাবে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দীর্ঘ সংগ্রামী জীবন, মহান শহীদদের আত্মত্যাগ এবং স্বাধীনতার চেতনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে নিবিড় গবেষণার মাধ্যমে প্রতিবেদন তৈরি করছেন, যা বর্তমান ও আগামী প্রজন্মকে স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে অবহিত করে চলেছে।
স্পিকার বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন ও দায়িত্বশীল গণমাধ্যমের কথা বলে গেছেন। বর্তমান সরকার সবসময়ই দায়িত্বশীল ও জনকল্যাণকর সাংবাদিকতার পক্ষে। গণমাধ্যম এখন স্বাধীনভাবে কাজ করছে। বস্তুনিষ্ঠ সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে গণমাধ্যম গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে তোলে। গণমাধ্যম মানুষকে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাহায্য করে। তাই গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পাশাপাশি দায়িত্বশীলতার বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও জুরিবোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী। জুরিবোর্ডের দুই সদস্য রোবায়েত ফেরদৌস ও নওয়াজেশ আলী খান পদকপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করেন। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ও সদস্য সচিব সারা যাকের। এ সময় প্রয়াত বজলুর রহমানের স্ত্রী ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
/এসবি/
আরো পড়ুন