ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

শেরপুরে জমজমাট ভোটের মাঠ

তারিকুল ইসলাম, শেরপুর  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৩৭, ২২ অক্টোবর ২০২১  
শেরপুরে জমজমাট ভোটের মাঠ

আগামী ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপে শেরপুর সদর উপজেলায় ১৪টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন হবে। এতে চেয়ারম্যান পদে ৫৯ জন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১৯৯ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ৫৬৫ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।

প্রথমবারের মতো এবার সর্বোচ্চ ৩ জন নারী চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। তারা হলেন- ভাতশালা ইউনিয়নের নাজমুল নাহার, কামারিয়া ইউনিয়নের মোছা. সান্ত্বনা ইয়াছমিন ও ধলা ইউনিয়নের মোছা. জেসমিন আক্তার। এর মধ্যে নাজমুন নাহার ভাতশালা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী।  অন্য দুজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।

বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না।শেরপুর সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার ১৪ ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকে চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন- কামারেরচর ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান মো. হাবিবুর রহমান, চরশেরপুরে মো. রফিকুল ইসলাম, বাজিতখিলায় মুহাম্মদ আলী, গাজীরখামারে বর্তমান চেয়ারম্যান আওলাদুল ইসলাম, ধলায় বর্তমান চেয়ারম্যান মো. রহিজ উদ্দিন, পাকুড়িয়ায় বর্তমান চেয়ারম্যান মো. হায়দার আলী, ভাতশালায় বর্তমান চেয়ারম্যান নাজমুন নাহার, লছমনপুরে মো. আব্দুল হাই, চরমোচারিয়ায় মিজানুর রহমান বাবুল, বলাইয়েরচরে মো. মনিরুল আলম, কামারিয়ায় মো. সরোয়ার জাহান, রৌহায় মো. সাইফুজ্জামান সোহেল, বেতমারী ঘুঘুরাকান্দিতে মো. আব্দুল মজিদ ও চরপক্ষীমারী ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান আকবর আলী। এই ১৪ জনের মধ্যে ৭ জন বর্তমান চেয়ারম্যান, ২ জন সাবেক চেয়ারম্যান এবং ৫ জন নতুন মুখ মনোনয়ন পেয়েছেন।

ইতোমধ্যে প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে দাখিল করেছেন। তবে, মোট ১৪ টি ইউনিয়নের মধ্যে ১ নম্বর কামারেরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী টানা তিনবারের মতো নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান হাবিব। তার ইউনিয়ন থেকে একমাত্র তিনিই চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। তার কোনো প্রতিদ্বন্দ্বি না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হচ্ছেন। তবে বাকি ১৩টি ইউনিয়নে নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে।

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সমন্বয়ক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, মোট ১৪ জনের মধ্যে ১ নম্বর কামারের চর ইউনিয়ন থেকে একজন মাত্র মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। তিনি বিনা ভোটে নির্বাচিত হবেন আর বাকি সবাইকে নির্বাচনে অংশ নিতে হবে।

এদিকে, আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে সদর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের সবগুলোতে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে নির্বাচিত করার জন্য জেলার আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে মতবিনিময় সভা করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। গত ১৩ অক্টোবর বুধবার দুপুরে শহরের জিকে পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের হলরুমে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের একাধিক ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ নির্বাচনী প্রচারণায় মাঠে আছেন। কেউ পালন করছেন প্রতিবাদ কর্মসূচি।বিদ্রোহী হিসেবে ইতোমধ্যে জাতীয় সংসদের হুইপ ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আতিউর রহমানের ভাই মো. ইসমাইল হোসেন, পৌর যুবলীগের সদস্য এস এম সাব্বির আহম্মেদ, রৌহা ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মিজু, লছমনপুর ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান মো. সেলিম মিয়া, বলাইয়েরচর ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান ইয়াকুব আলী, চরমোচারিয়া ইউনিয়ন থেকে ইসমাইল হোসেন ও বেতমারী-ঘুঘুরাকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে বেতমারী-ঘুঘুরাকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ইতোমধ্যে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। গত ১২ অক্টোবর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চরখারচর এলাকায় নিজে উপস্থিত থেকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সাথে নিয়ে এ সমাবেশ করে। এতে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এবং স্থানীয় বেতমারী-ঘুঘুরাকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল আলম শেহের প্রমুখ।

মনোনয়ন বঞ্চিতদের মধ্যে পৌর যুবলীগের সদস্য এস এম সাব্বির আহম্মেদ বলেন, আমি দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলাম।  কিন্তু আমি মনোনয়ন না পাওয়ায় বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছি।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চন্দন কুমার পাল বলেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের একটি বড় রাজনৈতিক দল। এখানে দু-একজন মনোনয়নবঞ্চিত ব্যক্তি প্রার্থী হতেই পারেন। এতে দলীয় প্রার্থীর বিজয়ে কোনো প্রভাব পড়বে না। জনগণ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ।

তারিকুল/এসবি

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়