ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন প্রিয়া সাহা

মাকসুদুর রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৫৫, ২১ জুলাই ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন প্রিয়া সাহা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : অবশেষে মুখ খুলেছেন প্রিয়া সাহা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কাছে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের যে অভিযোগ করেছেন সে বিষয়ে একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি।

প্রিয়া সাহার দাবি, যে তথ্য তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দিয়েছেন,তা সরকারি পরিসংখ্যান থেকেই নেওয়া। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল বারকাত ওই পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে ২০১১ সালে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেন, যা সে সময় গণমাধ্যমেও আসে।

যুক্তরাষ্ট্রে একজন সাংবাদিককে প্রিয়ার সাক্ষাৎকার দেয়ার একটি ভিডিও রোববার তার এনজিও শারির ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করা হয়। ৩৫ মিনিটের ওই ভিডিওতে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে তিনি নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন তিনি।

সাংবাদিকের প্রশ্নে প্রিয়া সাহা বলেন, ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে অভিন্ন অবস্থানে থাকা বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র সরকার যাতে একসঙ্গে কাজ করতে পারে- সেজন্যই তিনি হোয়াইট হাউজে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সহযোগিতা চেয়েছেন। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা তার উদ্দেশ্য ছিল না।

ভিডিওতে প্রিয়া সাহা বলেন, সরকারের আদমশুমারি প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী দেশভাগের সময় বাংলাদেশের জনসংখ্যার ২৯ দশমিক ৭ শতাংশ ছিল ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নাগরিক। ওই হার এখন নেমে এসেছে ৯ দশমিক ৭ শতাংশে।

‘এখন দেশের মোট জনসংখ্যা প্রায় ১৮০ মিলিয়ন। সংখ্যালঘু জনসংখ্যা যদি একই হারে বৃদ্ধি পেত, তাহলে অবশ্যই যে জনসংখ্যা আছে, এবং যে জনসংখ্যার কথা আমি বলেছি ক্রমাগত হারিয়ে গেছে, সেই তথ্যটা মিলে যায়।’

‘সরকারের ওই পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করেই অধ্যাপক আবুল বারকাত ২০১১ সালে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলেন, যেখানে বলা হয়েছিল, প্রতিদিন ৬৩২ জন হিন্দু দেশ ছাড়ছেন। ২০১১ সালে আমি স্যারের সাথে সরাসরি কাজ করেছিলাম, যে কারণে আমি বিষয়টা সম্পর্কে অবহিত।’

সাক্ষাৎকারে প্রিয়া সাহা পিরোজপুর জেলায় তার নিজের গ্রামের এবং পরিবারের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, তার গ্রামে ২০০৪ সালেও ৪০টি হিন্দু পরিবার ছিল যা কমতে কমতে ১৩টিতে দাঁড়িয়েছে। কোথায় গেছে তারা- সাংবাদিকের এই প্রশ্নে প্রিয়া সাহা বলেন, ‘আপনাদেরই তা দেখার কথা, রাষ্ট্রের দেখার কথা।’

তিনি বলেন, মুসলমান হিন্দুদের শত্রু না, মুসলমান সম্প্রদায়ের ৯৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ মানুষই অসাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাস করে একসঙ্গে থাকে। কিন্তু কিছু দুষ্টু লোক আছে যারা এ ঘটনা ঘটায়।’

যুক্তরাষ্ট্রে তিনি কিভাবে গিয়েছেন সাংবাদিকের এ প্রশ্নে প্রিয়া বলেন, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিনিধি হয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে যাননি। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের আমন্ত্রণে খুব অল্প সময়ের প্রস্তুতিতে তিনি সংখ্যালঘুদের অধিকার সম্পর্কিত একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আমেরিকায় যান। ওই অনুষ্ঠানের মাঝে হঠাৎ করেই আয়োজকদের পক্ষ থেকে হোয়াইট হাউজে যাওয়ার কথা বলা হলে সেখানে যান তিনি।

প্রসঙ্গত, গত ১৭ জুলাই হোয়াইট হাউজে যান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে প্রিয়া সাহা বলেন, বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। প্রায় ৩ কোটি ৭০ লাখ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান নিখোঁজ হয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, প্লিজ আমাদের সাহায্য করুন। আমরা আমাদের দেশে থাকতে চাই। এখনও সেখানে ১ কোটি ৮০ লাখ সংখ্যালঘু মানুষ আছে। আমার অনুরোধ, আমাদের সাহায্য করুন। আমরা দেশ ছাড়তে চাই না। তারা আমার বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে, আমার জমি কেড়ে নিয়েছে। কিন্তু বিচার হয়নি।।

তার ওই বক্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় দেশব্যাপী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/২১ জুলাই ২০১৯/মাকসুদ/এনএ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়