মুক্তিযুদ্ধে বিতর্কিতরা বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে থাকতে পারবে না
মহান বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে স্বাধীনতা যুদ্ধে বিতর্কিত, যুদ্ধাপরাধী কেউ থাকতে পারবে না, তাদেরকে আমন্ত্রণ না জানাতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে বুধবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সার্বিক আইন শৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
মন্ত্রী বলেন, ‘মহান বিজয় দিবসের কোন অনুষ্ঠানে যুদ্ধাপরাধী ও স্বাধীনতা যুদ্ধে বিতর্কিতরা অংশ নিতে পারবেন না। কোন যুদ্ধাপরাধী বা যুদ্ধে বিতর্কিত কাউকে যেন আমন্ত্রণ জানানো না হয়, সে বিষয়ে প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। আজকের বৈঠকেও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
তিনি বলেন, বিজয় দিবসের দিন স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পনের জন্য রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ সবার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। স্মৃতিসৌধ এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে। ওই এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হবে। বিদেশিদের জন্যও বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। ঢাকা-সাভার রোডে সিসি ক্যামেরা থাকবে, যাতে কোনোভাবে কেউ কোন ধরনের নাশকতা ঘটাতে না পারে। ঢাকা থেকে সাভার পর্যন্ত কোন তোরণ করতে দেয়া হবে না। মেট্রোপলিটন, জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রয়োজন অনুসারে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’
মলিন পতাকা উড়ানো যাবে না
জাতীয় পতাকা উত্তোলনের নিয়ম মানতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বৈঠকে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মন্ত্রী পরিষদের নির্দেশক্রমে ১৬ ডিসম্বের সকল ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলনে যথাযথ নিয়ম মেনে চলতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি, বিভিন্ন জায়গায় যারা পতাকা উড়ান, তার রং ও সাইজ যথেষ্ট মলিন হয়েছে, সেগুলো উত্তোলন করে দেন। কিন্তু আমাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৬ ডিসেম্বর যেসব পতাকা উঠানো হবে, তার সঠিক মাপ, ফ্রেস রং থাকতে হবে। পুরানো ছিঁড়ে যাওয়া কিংবা মলিন পতাকা কেউ উড়াতে পারবে না। বিজয় উদযাপনে অনেকে পতাকা উত্তোলন করেন, কিন্তু পরে আর নির্ধারিত সময়ে নামানো হয় না। নিয়ম অনুযায়ী নির্ধারিত টাইমে সম্মানের সঙ্গে পতাকা নামাতে হবে।’
আলোকসজ্জাসহ কয়েকটি নতুন নির্দেশনা
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ‘বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান দেখানোর জন্য বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বড় পর্দার টিভির ব্যবস্থা করা হবে। সেখানে প্যারেডের দৃশ্য দেখা যাবে। আর্মি, পুলিশ, সিটি করপোরেশন পৃথকভাবে সে ব্যবস্থা করবে। যেহেতু অনুষ্ঠানস্থলে অতিরিক্ত মানুষের চাপ এড়াতে এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সংস্কৃতি অনুষ্ঠানও সেখানে দেখানো হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসকে মাথায় রেখে ১৪ তারিখে কোন আলোকসজ্জা হবে না। সারাদেশে কেউ যেন আলোকসজ্জা করতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ১৬ ডিসেম্বর উপলক্ষে ১৪ ডিসেম্বরের পর আলোকসজ্জা করা যাবে। কিন্তু দিবসটিকে কেন্দ্র করে অনেকেই আগ থেকেই অনেক স্থানেই আলোকসজ্জা করে থাকেন, সেটা করতে পারবে না।’
বিজয় দিবস উপলক্ষে দেশের জেলখানা, হাসপাতাল, এতিমখানায় উন্নত খাবার পরিবেশন করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাজেদ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন