তাজরিন ট্র্যাজেডি : ক্ষতিপূরণ ও দোষীদের শাস্তি দাবি
তাজরিন ফ্যাশন লিমিটেডের কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে হতাহতদের ক্ষতিপূরণ দেয়া ও পুনর্বাসন করা এবং ওই দুর্ঘটনার জন্য দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে জাগো বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন।
বুধবার রাজধানীর তোপখানা রোডে নির্মল সেন মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন এসব দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে শ্রমিকদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জাগো বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের আহ্বায়ক মো. বাহারানে সুলতান বাহার।
মো. বাহারানে সুলতান বাহার বলেন, ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর তাজরিন ফ্যাশন লিমিটেডের কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত হয়েছিলেন ১১৩ জন শ্রমিক-কর্মচারী। আহত হয়েছিলেন দুই শতাধিক শ্রমিক। সে সময় অনেক সংগঠন, দেশি-বিদেশি সংস্থা, ব্যাংক-বীমা, শ্রম মন্ত্রণালয়, বিজিএমইএর আশ্বাসে আমাদের বুক ভরে গিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, আমাদেরকে সাহায্য করবেন এবং অতি দ্রুত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনবেন। আমরা অতি দুঃখের মাঝেও সুখের হাসি হেসেছিলাম। কিন্তু দুঃখের বিষয়, প্রধানমন্ত্রী শুধু কয়েকজন শ্রমিককে মাত্র ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দিয়েছিলেন এবং দোষীরা আজও বহাল তবিয়তে আছে।
তিনি বলেন, আমরা দুই শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারী বিভিন্নভাবে পঙ্গুত্ববরণ করে মানবেতর জীবনযাপন করছি। কোনো প্রকার ক্ষতিপূরণ বা সাহায্য-সহযোগিতা আমরা পাইনি। তাই আজ নিজেদের জীবন রক্ষার্থে আপনাদের সামনে এসে উপস্থিত হয়েছি। আপনাদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি, আমাদের এ দুঃখ-দুর্দশার কথা মানবিক দৃষ্টিতে বিবেচনা করুন। আমরা যারা এখন কাজ করতে অক্ষম তাদের পুনর্বাসন ও প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) ১৭৩ জন শ্রমিককে আর্থিক সহায়তা করেছিল। ২০১৬ সালের জুন মাস থেকে এ আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। বিলস এবং সিআরপির আশুলিয়া শাখায় চিকিৎসাসেবা দেয়া হয় নিবন্ধিত ১৭৩ জন শ্রমিককে। প্রথম দিকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে এই চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়। পরবর্তীতে তা সিআরপির আশুলিয়া শাখা তত্ত্বাবধান করে।
সংবাদ সম্মেলনে কিছু কর্মসূচির কথা জানায় সংগঠনটি। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- ২৪ নভেম্বর রোববার সকাল সাড়ে ৭টায় সাভারের নিশ্চিন্তপুরে তাজরিন গার্মেন্টসে অগ্নিকাণ্ডে নিহত শ্রমিকদের স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন। সকাল ৯টায় জুরাইন কবরস্থানে নিহত শ্রমিকদের কবর জিয়ারত ও শ্রদ্ধা নিবেদন। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দাবি আদায়ে অবস্থান ধর্মঘট।
সংবাদ সম্মেলনের উপস্থিত ছিলেন- সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য মোহাম্মদ মোস্তফা, তাজরিন লিমিটেডে অগ্নিকাণ্ডে আহত শ্রমিক মো. মিরাজ, মো. সোলেমান, জরিনা, রোখসানা, রেহেনা, নাসিমা প্রমুখ।
ঢাকা/হাসিবুল/রফিক
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন