দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক কমিউনিটি স্বাস্থ্যকর্মী সম্মেলন শুরু
কমিউনিটি ক্লিনিক কর্মীদের অবদান এবং ভবিষ্যৎ করণীয় সম্পর্কে তুলে ধরতে ঢাকায় শুরু হয়েছে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক কমিউনিটি স্বাস্থ্যকর্মী সম্মেলন।
শুক্রবার ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আইসিডিডিআরবি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ব্র্যাক, জেমস পি. গ্র্যান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথ (জেপিজিএসপিএইচ) এবং সেভ দ্য চিলড্রেন বাংলাদেশের সহযোগিতায় এ সম্মেলন শুরু হয়েছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন কমিউনিটি ক্লিনিক হেলথ সাপোর্ট ট্রাস্টের সভাপতি অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাসসের আলী বলেন, ‘বাংলাদেশে টিকাদান, অপরিহার্য স্বাস্থ্যসেবা প্রদান এবং পরিবার পরিকল্পনা প্রসারে কমিউনিটি স্বাস্থ্যকর্মীদের অবদান অনস্বীকার্য। স্বাস্থ্য খাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রায় ৫ কোটি মানুষের দোরগোড়ায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়া, যা অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের জন্য দৃষ্টান্ত স্বরূপ।’
এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য হলো সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা অর্জনে অসংক্রামক ব্যাধির নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে কমিউনিটি স্বাস্থ্যকর্মীদের সম্ভাবনা।
এছাড়া, স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে কমিউনিটি স্বাস্থ্যকর্মীদের কর্মসূচি, কমিউনিটি স্বাস্থ্যকর্মী ও সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা, শহরাঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান, দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং মানবিক পরিস্থিতির মতো বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে কমিউনিটি স্বাস্থ্যকর্মীদের ভূমিকা এবং কমিউনিটি স্বাস্থ্যকর্মীদের কর্মসূচি এবং অসংক্রামক ব্যাধির প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ বিষয়েও সম্মলনে আলোচনা হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আইসিডিডিআরবির হেলথ সিস্টেমস অ্যান্ড পপুলেশন স্টাডিজ ডিভিশনের সায়েন্টিস্ট ও শেয়ার প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. ইকবাল আনোয়ার, উগান্ডার হেলথ সিস্টেমস গ্লোবাল থেমাটিক ওয়ার্কিং গ্রুপের সহ-সভাপতি ড. ডেভিড মুসোক, আইসিডিডিআরবির নির্বাহী পরিচালক ড. জন ডি ক্লেমেন্স, জেপিজিএসপিএইচ-এর ডিন অধ্যাপক ড. সাবিনা ফায়েজ রশিদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) ড. নাসিমা সুলতানা, ইথিওপিয়ার স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ড. সেহারলা আবদুলাহি।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, ৩৫টি দেশ থেকে প্রায় ৫০০ নীতি-নির্ধারক, স্বাস্থ্য পেশাজীবী, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এবং গবেষকরা সম্মেলনে নিবন্ধন করেছেন।
সম্মেলনে সর্বমোট ২৩২টি গবেষণা সারসংক্ষেপ (অ্যাবস্ট্র্যাক্ট) জমা পড়েছে, যার মধ্যে থেকে ১৪১টি মৌখিক ও পোস্টার উপস্থাপনার জন্য নির্বাচিত হয়েছে। স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশ থেকে ২০ জন নবীন অংশগ্রহণকারী তাঁদের অ্যাবস্ট্র্যাক্টের গুণগত মানের ভিত্তিতে বৃত্তির জন্য মনোনীত হয়েছেন। ঢাকায় অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনটি অংশগ্রহণকারীদের জন্য বিভিন্ন দেশের কমিউনিটি স্বাস্থ্যকর্মীদের কার্যক্রমের সাফল্য ও চ্যালেঞ্জসমূহ সম্পর্কে আলোচনা করার জন্য একটি অনন্য সুযোগ সৃষ্টি করেছে।
এ সম্মেলন কমিউনিটি স্বাস্থ্যকর্মীদের সহায়তায় গ্রামীণ জনগোষ্ঠী কীভাবে অসংক্রামক রোগের মোকাবেলা করতে পারে সেই উদ্দেশ্যে একটি কৌশলপত্র প্রণয়নের সুপারিশমালা উপস্থাপন করবে। এই উদ্যোগ সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা করবে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে উগান্ডার কাম্পালায় ‘প্রথম আন্তর্জাতিক কমিউনিটি স্বাস্থ্যকর্মী সম্মেলন’ অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকা/নূর/হাকিম মাহি
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন