‘অংশীদারিত্ব’ এগিয়ে নিতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত সুন্দরবনে
যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান অংশীদারিত্বকে এগিয়ে নেওয়ার অংশ হিসেবে মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার সুন্দরবন ভ্রমণ করেছেন। বাংলাদেশে ইউএসএআইডি মিশনের পরিচালক ডেরিক ব্রাউন এসময় তার সঙ্গে ছিলেন।
মঙ্গলবার ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে উল্লেখ করা হয়, বাস্তুসংস্থান সংরক্ষণ ও একটি সহিষ্ণু বাংলাদেশকে উৎসাহিত করতে রাষ্ট্রদূত মিলার গত ২৬ থেকে ২৮ জানুয়ারি সুন্দরবন সফর করেছেন।
দূতাবাস বলছে, আগামী ২ ফেব্রয়ারি বিশ্ব জলাভূমি দিবসের প্রাক্কালে বিশ্বের বৃহত্তম এ ম্যানগ্রোভ অরণ্যে রাষ্ট্রদূত মিলারের সফর সুন্দরবন এবং এর বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরে। একটি সহিষ্ণু বাংলাদেশের জন্য স্বাস্থ্যকর বাস্তুসংস্থান এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে সুরক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
সুন্দরবন সফরে রাষ্ট্রদূত মিলার হারবেড়িয়ায় বাংলাদেশ বন বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। এছাড়া তিনি সুন্দরবন ও এর জীববৈচিত্র্যের সুরক্ষায় অবদান রাখা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সহায়তাপুষ্ট কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।
সুন্দরবনে গবেষণা এবং যৌথ অংশীদারিত্ব কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে রাষ্ট্রদূত মিলার ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং বন বিভাগের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও সাক্ষাত করেন।
মিলার যুক্তরাষ্ট্রের ডেলাওয়্যার বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ডক্টরেট শিক্ষার্থীর সঙ্গে কটকা পরিদর্শন করেন। ওই শিক্ষার্থীর বাঘ সংরক্ষণ বিষয়ক গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্রের ফিশ অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ সার্ভিস অর্থায়ন করেছে। তারা জনপ্রিয় কটকা ট্রেইল ধরে কিছু অংশে হাইকিং করেন এবং সুন্দরবনে পর্যটনের ভূমিকা ও এর প্রভাব সম্পর্কে অবগত হন।
সফরের শেষ দিনে রাষ্ট্রদূত মিলার স্থানীয় নাগরিক সংস্থা ওয়াইল্ড টিম লিমিটেডের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। তিনি তাদের কাছ থেকে জানতে পারেন, ২০১৮ সালে শেষ হওয়া ইউএসএআইডির দেড় কোটি ডলার ব্যয়সাপেক্ষ ‘বেঙ্গল টাইগার কনজারভেশন অ্যাক্টিভিটি (বাঘ)’ কর্মসূচির পর কীভাবে বাঘ সংরক্ষণ কার্যক্রম চলছে। বাংলাদেশ বন বিভাগ এবং ইউএসএআইডি গত বছরের ২২ মে ঘোষণা করে, ইউএসএআইডির ‘বাঘ’ কর্মসূচি ও সুন্দরবন রক্ষার সমন্বিত প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ এ বনে বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা স্থিতিশীল হয়েছে এবং সামান্য হলেও বেড়েছে। ২০১৫ সালের আনুমানিক ১০৬টি থেকে বেড়ে ২০১৮ সালে তা আনুমানিক ১১৪টি হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত মিলার কমিউনিটি স্বেচ্ছাসেবীদের সঙ্গেও সাক্ষাত করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে দূতাবাস বলছে, যুক্তরাষ্ট্র সরকার প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সহনশীলতা বৃদ্ধিতে সহায়তা অব্যাহত রাখা এবং উভয় দেশের অগ্রাধিকারমূলক বিষয়গুলোকে এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিশ্ব জলাভূমি দিবস বিশ্বজুড়ে জলাভূমিগুলো পরিবেশ সংরক্ষণে যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে তা তুলে ধরে। বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ বাস্তুসংস্থানগুলোর সুরক্ষা এগিয়ে নিতে জলাভূমিগুলো কেন গুরুত্বপূর্ণ এ দিবস তা জোর দিয়ে প্রকাশ করে।
সুন্দরবন বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন। এটি জলাভূমির গুরুত্ব প্রদর্শনের জন্য এক উপযুক্ত স্থান। গুরুত্বপূর্ণ এ অঞ্চলটি ঘূর্ণিঝড়ের মতো বিপদ থেকে সুরক্ষা দিতে প্রাকৃতিক বাধা হিসেবে কাজ করে। এছাড়া সুন্দরবন বেঙ্গল টাইগার, মাস্কড ফিনফুট, ইরাবতী ডলফিন, নোনা পানির কুমির এবং আরও অনেক বিপন্ন বা ঝুঁকির মধ্যে থাকা প্রাণীর আবাসস্থল।
ঢাকা/হাসান/সাজেদ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন