করোনা আক্রান্তের লাশ হৃদরোগী বলে দাফন, বাড়ি লকডাউন
করোনাভাইরাস সংক্রমণ সন্দেহে মুফতি আব্দুল্লাহ নামে এক রোগী মারা গেলে হাসপাতাল থেকে তার লাশ গোপনে সেখান থেকে নিয়ে দাফন করা হয়েছে। পরে কোভিড-১৯ পরীক্ষার পর তার দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেলে নড়েচড়ে বসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ঢাকা ও তার গ্রামে বেশ কয়েকটি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, এ ধরনের কোনো ঘটনা সম্পর্কে তারা জানে না।
জানা গেছে, গত বুধবার (৮ এপ্রিল) দুপুর ১টার দিকে মুফতি আব্দুল্লাহকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। পেট ব্যাথা বলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কয়েক ঘণ্টা পরে তার শারিরীক লক্ষণ দেখে কোভিড-১৯ আক্রান্ত বলে সন্দেহ করেন দায়িত্বরত ঢামেক হাসপাতালের আবাসিক সার্জন। তিনি তাকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর রাতে মুফতী আব্দুল্লাহ মারা যান। পরে তার নমুনা সংগ্রহ করে পরদিন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট। এর মধ্যে রাতে মুফতী আব্দুল্লাহর পরিবার হাসপাতাল থেকে গোপনে লাশ বের করে গেণ্ডারিয়ায় বাসভবনে নিয়ে যায়। পরে বৃহস্পতিবার সকালে তারা মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান থানা এলাকায় নিয়ে জানাজা পড়ে মুফতি আব্দুল্লার দফন সম্পন্ন করে।
পুলিশ জানিয়েছে, আব্দুল্লাহ গেন্ডারিয়া থানা এলাকার বাসিন্দা। তার গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের সিরাজদি খানের ইসাপুরা ইউনিয়নের পশ্চিম শিয়ালদি গ্রামে।
গেন্ডারিয়া থানার ওসি মো. সাজু মিয়া বলেন, গতকাল (বৃহস্পতিবার) মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে তার লাশ দাফন হয়েছে। তিনি করোনা আক্রান্ত শুনে তার বাড়িটি লকডাউন করা হয়েছে।
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান থানার ওসি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দীন বলেন, আব্দুল্লাহ গত বুধবার সন্ধ্যা বা রাতে কুর্মিটোলা হাসপাতালে মারা যায়। সেখান থেকে তার পরিবার লাশ গেণ্ডারিয়ায় নিয়ে এসে গোসল করিয়ে কফিনে করে সিরাজদিখানে তার স্থায়ী বাড়িতে নিয়ে আসে। হৃদরোগে মারা গেছেন বলে এলাকায় বলা হয়েছে। যেহেতু স্বাভাবিক মৃত্যু সেহেতু বৃহস্পতিবার সকালে এখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে জানাজা করে দাফন করা হয়। পরে বৃহস্পতিবার রাতে জানা যায়, তিনি কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত। এটা জানার পর তার দাফন কাফনে জড়িত ছিল এমন ৮টি বাড়ি আমরা লকডাউন করেছি।
এ বিষয়ে জানতে শুক্রবার বিকেলে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিলের নাম্বারে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। বক্তব্য জানতে চেয়ে এসএমএস করলেও তিনি উত্তর দেননি।
বিষয়টির সত্যতা জানতে চাইলে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক সুজয় সরকার বলেন, সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করে দেখতে পারেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল) আমিনুল হাসান লাশ লুকিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে তিনি জানেন না। এমনকি করোনা সন্দেহে একজন রোগী মারা যাওয়ার পরও তার লাশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী কেন দাফন হয়নি সে বিষয়েও জানেন না বলে জানান তিনি।
নূর/সাইফ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন