ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

‘ঈদ খরচের আশায় ঝুঁকি নিয়ে কাজে এসেছি’

নুরুজ্জামান তানিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:০৯, ২৪ মে ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
‘ঈদ খরচের আশায় ঝুঁকি নিয়ে কাজে এসেছি’

করোনার কারণে কাজ-কর্ম নেই অনেকের। তাই আয়-রোজগারও নেই। আগের জমানো টাকা খরচের পর ঋণের টাকাও শেষ। কষ্টে দিন কাটছে খেটে খাওয়া মানুষের।

ঠিক এমনই কষ্টে আছেন খিলগাঁও এলাকার বাসিন্দা রং মিস্ত্রি মো. নাসির উদ্দিন। ২৭ বছর ধরে এ পেশায় আছেন তিনি। দুই ছেলে, এক মেয়ে ও স্বামী-স্ত্রীসহ মোট পাঁচ সদস্যের পরিবার। করোনাভাইরাস সংক্রমণের আগে তার জীবন অনেকটাই সচ্ছল ছিল। খেয়ে-পরে দিন কেটে যেত। প্রতিদিন কাজে যেতেন। দিন শেষে নগদ টাকা হাতে করে ফিরতেন। ফলে সংসার চালাতে কোনো অসুবিধা হতো না।

বর্তমানে করোনার কারণে কোনো কাজ পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে জীবিকার পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এ কারণে নাসির উদ্দিনের সচ্ছল পরিবার এখন ঋণগ্রস্ত। এদিকে, ঋণের টাকাও শেষের পথে। পাশাপাশি বকেয়া পড়েছে বাসাভাড়া, দুই ছেলের টিউশন ফি। এ মুহূর্তে অর্থকষ্টে অর্ধাহারে-অনাহারে দিনাতিপাত করছে নাসির উদ্দিনের পরিবার।

তবে ঈদের আগে একটি ছোট দোকানে রং করার কাজ পেয়ে কিছুটা আশার আলো দেখছেন নাসির উদ্দিন। দোকানের মালিক শর্ত দিয়েছেন, ঈদের আগেই কাজটি শেষ করতে হবে। এ কাজের বিনিমেয়ে তিনি প্রত্যাশা অনুযায়ী পারিশ্রমিকও পাবেন। ফলে করেনার ঝুঁকি উপেক্ষা করেই রোববার (২৪ মে) সকালে তিনি রাজধানীর দক্ষিণ বনশ্রীতে রং করার কাজে আসেন।

কাজের এক ফাঁকে কথা হয় মো. নাসির উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘প্রায় দুই মাস ধরে কোনো কাজ-কর্ম নেই। এ সময়ের মধ্যে বিগত বছরের জমানো কিছু টাকা খরচ করার পরও ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। এমনকি টাকার অভাবে গত দুই মাসের বাড়িভাড়া বাকি পড়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে বাচ্চাদের নিয়ে তিনবেলা খাবার জোটানো কঠিন হয়ে পড়েছে। কারো কাছে লজ্জায় হাত পাততে পারি নাই।’

তিনি বলেন, ‘ঈদে আগে কাজ পেয়ে অনেকটা মানসিক চাপ থাকে রক্ষা পেয়েছি। টাকা পেয়ে ঈদের বাজার করব, ছেলেদের ভালো কিছু খাওয়াব, এই আশায় করোনার ঝুঁকি উপেক্ষা করে রং করার কাজে এসেছি।’


ঢাকা/এনটি/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়