ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

করোনা ঝুঁকি নিয়েও চাকরি বাঁচাতে ঢাকামুখী মানুষের ঢল

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৫১, ২৯ মে ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
করোনা ঝুঁকি নিয়েও চাকরি বাঁচাতে ঢাকামুখী মানুষের ঢল

ঢাকায় বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন শামীম ওসমান।  থাকেন একাই।  ইট-পাথরের এ শহরে কখনো ঈদ উদযাপন করেননি।  তাই নাড়ির টানে শেষ মুহূর্তে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে গ্রামের বাড়ি ফেনী যান।  এর মধ‌্যে শনিবার (৩১ মে) থেকে অফিস খুলছে।  তাই জীবিকার তাগিদে ঢাকায় ফিরছেন।

এদিকে গণপরিবহন বন্ধ।  অফিসও খুলছে, তাই বাধ্য হয়ে ঢাকা অভিমুখী হয়েছেন। শামীমের মতো আরও অনেকেই এভাবে জীবিকার তাগিদে করোনাভাইরাসের মধ্যে ঝুঁকি নিয়েই ঢাকা ফিরছেন।

শুক্রবার (২৯ মে) রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে ঢাকামুখী মানুষের চাপ লক্ষ্য করা গেছে।

গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও রাস্তায় ব্যক্তিগত গাড়ি, মাইক্রোবাস, ছোট পিকআপ, অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশার আধিক্য দেখা গেছে। যাতে করে কর্মস্থলে যোগ দিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকা ফিরছেন তারা।  এক্ষেত্রে তাদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার প্রবণতা লক্ষ‌্য করা যায়নি। ফলে করোনা ঝুঁকি নিয়েই ঢাকা ফিরছেন তারা।

যাত্রীরা বলছেন, চাকরি বাঁচাতে করোনা ঝুঁকি নিয়েই তারা ঢাকায় যাচ্ছেন। সড়কে গণপরিবহন না থাকায় নানা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। আর গুনতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়াও।

শামীম ওসমান বলেন, বাড়ি যাওয়াটাই ভুল হয়েছে। এত কষ্ট করে ঈদ করতে বাড়িতে গেলাম। এবারের ঈদে কোনো আনন্দই নেই। উল্টো আসার সময় যে ঝামেলায় পড়লাম।  কষ্টও হলো আবার ভাড়াও কয়েকগুন বেশি নিলো। আর করোনার ঝুঁকিতো থেকেই গেলো।

ব্যাগ তৈরি কারখানায় চাকরি করেন রাজীব হোসেন। মার্চ মাস থেকে শুরু হওয়া সাধারণ ছুটির সময় বাড়ি যান তিনি। কারখানা থেকে ফোন দিয়েছে ঢাকা আসতে। তাই বাধ্য হয়েই ঢাকা ফিরেছেন।

রাজীব হোসেন বলেন, যাতায়াতে এত কষ্ট আগে কখনও হয়নি। সেই ভোরে গোপালগঞ্জ থেকে রওনা দিয়েছি। বিকেল তিনটায় যাত্রাবাড়ী পৌঁছেছি। যেতে হবে টঙ্গী।  গাড়ি যা পাওয়া যায় তাও ভাড়া নিচ্ছে কয়েকগুন বেশি। তারপরও উপায় নেই। কর্মস্থলে যেতেই হবে। না হলে যে চাকরিটাই চলে যাবে। তাই ঝুঁকি নিয়েই রওনা দিয়েছি।

ঢাকাগামী যাত্রীরা করোনাভাইরাসের ঝুঁকির চেয়ে কর্মস্থলে পৌঁছানোর বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। যে করেই হোক কর্মস্থলে পৌঁছাতে হবে। এক্ষেত্রে তাদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব মানার প্রবণতা খুবই কম।

বাবুল হোসেন নামে এক ব‌্যক্তি বলেন, গরিব মানুষ। কাম করে খেতে হয়। অফিস থেকে ফোন দিছে আসার জন্য। তাই বাধ্য হয়ে এসেছি।  চাকরি না থাকলে যে না খেয়েই পরিবার নিয়ে মরতে হবে। সামাজিক দূরত্বের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, মাস্ক তো ব্যবহার করছি। বাকিটা আল্লাহ দেখবেন।

এদিকে যাত্রীরা যে পরিবহনে করে আসছেন সেখানে সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না। প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাসে, সিএনজিচালিত অটোরিকশা দেখা গেছে যাত্রীরা একজন আরেকজনের শরীর ঘেঁষে বসেছেন।

অটোরিকশা চালক ইসমাঈল হোসেন বলেন, যাত্রীদের গাড়িতে ওঠানোর আগে হাতে স্যানিটাইজার দিচ্ছি। তাদের মাস্কও পড়তে বলি। সামাজিক দূরত্বের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, একটু ভাড়া কমের আশায় এক সঙ্গে কয়েকজন ওঠে। সেক্ষেত্রে আমাদের কি করার আছে।


ঢাকা/মামুন খান/জেডআর

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়