ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

সড়ক পরিবহন আইন পুনর্বিবেচনা করা দরকার: আবুল মকসুদ

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫০, ১৪ নভেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সড়ক পরিবহন আইন পুনর্বিবেচনা করা দরকার: আবুল মকসুদ

সম্প্রতি কার্যকর হওয়া সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এ পরিবহন শ্রমিকদের হেয় করা হয়েছে উল্লেখ করে গবেষক ও কলামিস্ট আবুল মকসুদ বলেছেন, সড়কে শৃঙ্খলা, যাত্রীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও পরিবহন চালকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আইনটি পুনর্বিবেচনা করা দরকার।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের এক আলোচনা সভায় আবুল মকসুদ এ কথা বলেন।

‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ ও সড়কে শৃঙ্খলা, যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং শ্রমিকদের সুরক্ষা’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট।

আবুল মকসুদ বলেন, ‘ছাত্রদের আন্দোলনের ফলে সরকার তাড়াহুড়ো করে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ ঘোষণা করে। এ কারণে আইনের ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়ে গেছে। বিধিমালাও এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি। এ কারণে এখানে পরিবহন শ্রমিকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো উহ্য রয়ে গেছে। শ্রমিকদের হেয় করা হয়েছে। তাই আমি মনে করি এই আইনটি পুনর্বিবেচনা করা দরকার।’

দেশের অর্থনীতিতে পরিবহন খাতের গুরুত্ব তুলে ধরে আবুল মকসুদ বলেন, উত্তরবঙ্গ থেকে কাঁচামাল ঢাকায় আনুন বা দেশের পণ্য বিদেশে রপ্তানি করতে পোর্টে নিয়ে যান- সব জায়গায় পরিবহনের বিকল্প নেই। দেশের অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রেখেছে এই পরিবহন খাত। তাই আইনের ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো সংশোধন করা দরকার।’

সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট্রের সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, ‘আমরা একটি গণতান্ত্রিক সড়ক পরিবহন আইন চাই, যেখানে শুধু সড়কে শৃঙ্খলা ও যাত্রীর নিরাপত্তা নয়, শ্রমিকদেরও আইনি সুরক্ষা দেবে। পাশাপাশি আইনে বিআরটিএসহ সরকারি প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি, পুলিশের হয়রানি, মালিকদের বেআইনি কার্যকলাপ ও শ্রম আইন না মানা, পথচারি ও যাত্রীদের আইন না মানা এবং শ্রমিকদের দায়িত্বসহ সব কিছুই বিবেচনায় আনা হবে।’

কার্যকর হওয়া সড়ক পরিবহন আইন শ্রমিকদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে উল্লেখ করে রাজেকুজ্জামান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সড়ক-মহাসড়ক ব্যবহারের নীতিমালা, বিজ্ঞানসম্মত সড়ক নির্মাণ, দুর্নীতিমুক্ত বিআরটিএ প্রতিষ্ঠা, চালকদের জন্য প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নির্মাণ, পরিবহন শ্রমিকদের শ্রমঘণ্টা, বিশ্রাম, নিয়োগপত্র-পরিচয়পত্র, মজুরি ও দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণসহ বিভিন্ন বিষয়ে আন্দোলন ও নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে আলোচনা হয়ে আসছে। ফলে আমরা একটি গণতান্ত্রিক পরিবহন আইনের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু যেটি কার্যকর হওয়া শুরু হয়েছে, সেটি স্বস্তির পরিবর্তে পরিবহন শ্রমিকদের উদ্বেগ বাড়িয়েছে।’

আলোচনা সভা থেকে শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় বেশ কয়েকটি প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে জেলায় জেলায় সরকারি উদ্যোগে প্রশিক্ষণ ইনিস্টিটিউট স্থাপন। নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র, কর্মঘন্টা, ছুটি, অবসরসহ শ্রম আইনের অধিকারগুলো শ্রমিকদের প্রাপ্তি নিশ্চিত করা। পরিবহন শ্রমিকদের কাজে স্বীকৃতি এবং সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ তে শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী ধারাগুলো সংশোধন করা।

আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব বুলবুল, শ্রমিকনেতা খালেকুজ্জামান লিপন প্রমুখ।


ঢাকা/নূর/সাজেদ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়