করোনায় থমকে গেছে মশানিধন কর্মসূচি
ফাইল ফটো
বর্ষা এলেই রাজধানীতে মশার উপদ্রব বাড়ে। বাড়ে মশাবাহিত রোগের সংক্রমণও। প্রতিবছর মশার মৌসুম সামনে রেখে সিটি করপোরেশন মশানিধন কার্যক্রম চালায়। কিন্তু এবারের চিত্র ভিন্ন। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মহামারি করোনা মোকাবিলায় সাধারণ নাগরিকদের মতো সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদেরও অনেকে বাসা-বাড়িতে ‘গৃহবন্দি’ দিন কাটাচ্ছেন। ফলে মশানিধন কর্মসূচি থমকে গেছে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)-সূত্রে জানা গেছে, আপাতত চিহ্নিত হটস্পটগুলোতে মশার ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। ‘লোকবল সংকটের’ কারণে মশানিধন ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম মনিটিরং করা যাচ্ছে না বলেও সূত্র দাবি করে।
ডিএসসিসি এলাকার শনির আখড়ার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সন্ধ্যা নামলেই মশা বেড়ে যায়। তাদের অভিযোগ, গত ১ মাসেও ওই এলাকায় মশনিধনকর্মী দেখেননি তারা।
ডিএনসিসি এলাকার ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর ও শ্যামলী এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেও এমন চিত্র উঠে এসেছে। তবে মিরপুর ১ নম্বর, ২ নম্বর এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ১০ থেকে ১৫ দিন পর পর মশানিধনকর্মীরা ওষুধ ছিটিয়ে যান।
ধানমণ্ডির বাসিন্দা আলী আজম বলেন, ‘গত এক মাস ধরে মশার ওষুধ ছিটাতে দেখিনি। কয়েকদিন আগে বৃষ্টি হয়েছিল। এরপর থেকে মশা বেড়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে বাসায় থাকতে হচ্ছে। কিন্তু মশার জন্য টেকা দায়। ‘
শ্যামলী এলাকার বাসিন্দা মোক্তাদা আহমেদ বলেন, ‘যেভাবে মশার উপদ্রব বেড়েছে,গত বছরের পরিস্থিতির মতো হয় কী না ভয় পাচ্ছি।’
মিরপুর এলাকার বাসিন্দা ফাতেমা তুজ জোহরা বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে মশার উপদ্রব বেড়েছে। আগে মশার ওষুধ ছিটানো হলেও এখন দেখা যায় না।’
শনির আখড়া এলাকার বাসিন্দা আহসান হাবিব বলেন, ‘সন্ধ্যার পর মৌমাছির মতো মশা ঘুরে বেড়ায়। ঘরে-বাইরে মশার জন্য থাকা যায় না। কয়েল জ্বালালে এর ওপরে মশা বসে থাকছে। মশারি টাঙালেও ভেতরে মশা চলে আসে। গত ৩ মাসেও এই এলাকায় মশকনিধনকর্মী দেখিনি।’
শান্তিনগর এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান, গত তিন চার দিন ধরে মশার উপদ্রব বেড়েছে। ইলেক্ট্রিক মশার কয়েলেও কাজ করছে না। সিটি করপোরেশন থেকেও ওষুধ ছিটাতে দেখা যায়নি।
এসব অভিযোগের জবাবে ডিএনসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা এ এস এম মামুন বলেন, ‘করোনার সংক্রমণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্লিচিং পাওডার মেশানো পানি সড়ক ও বিভিন্ন স্থাপনায় ছিটানো হচ্ছে। এ কার্যক্রম অব্যাহত আছে।’
এদিকে, মশার উপদ্রব বাড়ার বিষয়টি স্বীকার করে ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. জেনা. মো. মোমিনুর রহমান মামুন বলেন, ‘এমন অভিযোগ আমরা পাচ্ছি। তবে করোনার কারণে মশকনিধন কার্যক্রম কিছুটা ধীরগতিতে চলছে। শিগগিরই আগের মতো কার্যক্রম চালানো হবে।’ এই কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে মাঠপর্যায়ের কর্মীদের মাস্ক, গ্লাভস, প্রটেকটিভ পোশাকের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
এই বিষয়ে জানতে ডিএসসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রি. জেনারেল (ডা.) শরীফ আহমেদের নাম্বারে ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
ঢাকা/নূর/এনই
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন