ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

‘পেট তো মানে না স্যার’

মাকসুদুর রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৫২, ২১ মে ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
‘পেট তো মানে না স্যার’

দুপুর (বৃহস্পতিবার, ২১ মে)।  কবি সুফিয়া কামাল হলের সামনে ছোট্ট শিশু এবং মা মানুষের কাছে সাহায্য চাচ্ছিলেন।  শারীরিক অক্ষমতার কারণে মা ফুটপাতে, আর শিশু খুশি রাস্তায় দাঁড়িয়ে বলছিল, ‘পেট তো মানে না স্যার, স্যার আমাগো কিছু দিয়ে যান।’

কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করা মাত্র ৬ বছর বয়সী খুশি বলে, ‘স্যার আমারে কিছু দেবেন? আবার বাবা নাই।  মা অসুস্থ।  ঘরে খাওয়ন নাই।  রাস্তায় ভিক্ষা করছি।  সারাদিন যে টাকা পাই তা দিয়ে অসুস্থ মাকে নিয়ে খাই’।

নাম-পরিচয় জিজ্ঞাসা জানতে চাইলে শিশুটির মা কাপড় দিয়ে লজ্জায় মুখ ঢেকে ফেলেন।  বলছিলেন, ‘রাস্তায় মেয়েকে নিয়ে এভাবে হাত পাততে হবে ভাবতেও পারিনি।  ৬ মাস হলো স্বামী ফেলে চলে গেছে। বাসা বাড়িতে কাজ করতাম।  করোনার কারণে কাজ বন্ধ হয়ে গেছে।

কোথায় থাকেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবাজার রেলওয়ে কলোনির বস্তিতে থাকি।  সবাই খুশির মা নামে জানে।  ২ হাজার টাকা বাসা ভাড়া। তাও আবার গত দুমাস হলো দিতে পারি না। কেউ আমাদের ত্রাণও দেয়নি।  কি করে বাঁচবো।  ছোট মেয়েটিকে কি খাওয়াবো। এসব চিন্তায় নিজে অসুস্থ থেকে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছি। ’

বঙ্গবাজারের স্থানীয় বাসিন্দা হযরত মিয়া বলেন, ‘খুশির মতো আরও অনেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ভিক্ষায় নতুন নেমেছে। বিশেষ করে করোনার কারণে তারা এ পেশায়।  অথচ কিছুদিন আগেও এসব মুখ দেখিনি।’

শাহবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল হাসান রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘এই এলাকায় (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) ছিন্নমূল, ভাসমান মানুষকে প্রতিদিন রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে।  আবার সবাইকে তো দেওয়া সম্ভব হয় না।’


মাকসুদ/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়