‘স্বাস্থ্যবিধি একা একা মেনে কী হবে’
স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না লঞ্চের যাত্রীরা। ছবি- শাহীন ভূইঁয়া
‘করোনাভাইরাস আর বৃষ্টির কথা চিন্তা করলে হবে নাকি? বাড়ি যাওয়া লাগবে। যা হওয়ার হবে। ঢাকায় থেকে কী করবো। কাজ কাম নাই, তাই বাড়ি যাচ্ছি। আর স্বাস্থ্যবিধি সবাই যদি না মানে তাহলে একা একা মেনে কী হবে।’
ঢাকা থেকে পটুয়াখালী যাওয়ার জন্য সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে আসা শারমিন আক্তারের প্রতিক্রিয়া এমন।
সরকার লঞ্চ, ট্রেনসহ সব ধরনের গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেওয়ার পর এসব যানবাহনে করে করোনা ঝুঁকি নিয়েই ঢাকা ছাড়ছেন নগরবাসীরা। তাতে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো চিত্র দেখা যাচ্ছে না।
বৃহস্পতিবার (০৪ জুন) সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার জন্য হাজার হাজার যাত্রী ঘাটে এসেছেন। যাত্রীদের বেশিরভাগই মাস্ক পরিহিত নন। লঞ্চে ওঠার পর ডেকে বসে মালামাল নিয়ে যাত্রীরা গাদাগাদি করে বসেছেন। যার মাধ্যমে মূলত তারা সরকারের স্বাস্থ্য নির্দেশন্ মানছেন না।
যাত্রী শারমিন আক্তার বলেন, করোনার কারণে গত তিন মাসের মতো স্বামীর ব্যবসা ভালো যাচ্ছে না। চায়ের দোকানে বেচাবিক্রি নেই। ঢাকায় থাকার জন্য এখন যে টাকা লাগবে সেটা রোজগার করা খুব কঠিন। আর স্বাস্থ্যবিধি মেনে কী হবে। আমি একা স্বাস্থ্যবিধি মানলেতো আর হবে না। সবাইকেই মানতে হবে।
আসাদুল ইসলাম নামে অপর এক যাত্রী বলেন, করোনার কারণে সরকার যে স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য বলেছেন সেটা আসলে মানা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ বাসের ভাড়া অনেক বেশি। সেই তুলনায় লঞ্চের ভাড়া কম। তাই সবাই লঞ্চে করেই বাড়ি যাওয়ার জন্য আসছে। তাতে লঞ্চে গাদাগাদি হচ্ছে।
সদরঘাটে দেখা যায়, পন্টুনে কিছু সময় পরপর বিআইডব্লিউটিএ'র কর্মীরা মাইকিং করে যাত্রীদের সচেতন করছেন। আবার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। কিন্তু সিট পাওয়া যাবে কিনা এই ভেবে যাত্রীরা যে যার মতো লঞ্চে উঠছেন।
এমভি ফারহান-৯ এর কর্মী ইলিয়াস হোসেন বলেন, ঢাকায় করোনা রোগী বাড়ার কারণে অনেকেই আতঙ্কিত। তাই বাড়ি চলে যাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। আমরা লঞ্চ মালিকদের পক্ষ থেকে যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি। বিআইডব্লিউটিএ’র পাঠানো সব নির্দেশনা সঠিকভাবে পালন করা হচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, যাত্রীদের নিরাপদ রাখার জন্য লঞ্চ ঘাটে আসার সঙ্গে সঙ্গে জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করা হচ্ছে। প্রত্যেক যাত্রীর হাতে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক (বন্দর ও পরিবহন) কাজী ওয়াকিল নওয়াজ বলেন, যাত্রীরা যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সেজন্য আমরা আমাদের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা চাই সবাই যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে।
ঢাকা/ হাসিবুল/জেডআর
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন