ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ভুতুড়ে বিদ‌্যুৎবিল, সমাধান কত দূর?

হাসান মাহামুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৪৭, ১২ আগস্ট ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
ভুতুড়ে বিদ‌্যুৎবিল, সমাধান কত দূর?

চলতি বছরের এপ্রিল থেকে ভুতুড়ে বিদ‌্যুৎবিলের অভিযোগ উঠতে থাকে। এই অভিযোগের পর প্রাথমিকভাবে কয়েক জনকে চিহ্নিত করে প্রকৃত দোষীদের ধরতে কয়েকটি কমিটিও করা হয়। কমিটি গঠনের পর ৪ মাস হতে চললো, তবু প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ—তদন্তের নামে কালক্ষেপণ করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ভুতুড়ে বিলের ঘোরতর অভিযোগ আসার পর মে মাসে বিদ্যুৎ বিভাগসহ প্রায় সব বিতরণ সংস্থা আলাদাভাবে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরে। তখন বিতরণ কোম্পানিগুলোকে আলাদা তদন্তের জন্য কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয় বিদ্যুৎ বিভাগ।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)-এর পক্ষ থেকেও টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। এই টাস্কফোর্স থেকে প্রাথমিক প্রতিবেদন এরই মধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগে জমা দেওয়া হয়েছে।  ওই প্রতিবেদনে বিদ‌্যুৎসেবার মান-উন্নয়নের বিষয়ে সুপারিশ ও ভুতুড়ে বিলের জন্য দায়ীদের চিহ্নিত করার বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করছেন, প্রথম থেকেই বিদ্যুৎ বিভাগ ও সবকটি বিতরণ কোম্পানি ঘোষণা দিয়েছে, এ ঘটনায় দায়ীদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। শাস্তিরও ব্যবস্থা করবে।  কিন্তু তদন্তে দীর্ঘসময় লাগায় এখন পর্যন্ত প্রাথমিক পর্যায়ে নেওয়া পদক্ষেপের মধ্যেই যাবতীয় বিষয় সীমাবদ্ধ রয়েছে।

ভুতুড়ে বিদ্যুৎবিল নিয়ে গঠিত টাস্কফোর্স তাদের তদন্তে ৬২ হাজার ৯৬ জন গ্রাহকের বিলে অসঙ্গতি পেয়েছে। এরমধ্যে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোডের্র (আরইবি) ৩৪ হাজার ৬১১ জন গ্রাহক, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) ১৫ হাজার ২৬৬ জন, ঢাকা ইলেট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) ৫ হাজার ৬৫৭ জন, নর্দার্ন ইলেট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো) দুই হাজার ৫২৪ জন, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) ৫৫৬ জন, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) দুই হাজার ৫৮২ জন অতিরিক্ত বিলের শিকার হন।  

তখন ডিপিডিসি তদন্ত করে একজন নির্বাহী প্রকৌশলীসহ চার জনকে সাময়িক বরখাস্ত, ৩৬ জন নির্বাহী প্রকৌশলীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়৷ এছাড়া, আরও ১৩ জন মিটার রিডার ও ডাটা অ্যান্ট্রি অপারেটরসহ মোট ১৪ জনকে চুক্তিভিত্তিক কাজ থেকে অব্যাহতি দেয়৷

জানতে চাইলে ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান বলেন, ‘এই বিষয়ে আমাদের পক্ষ থেকে একাধিক কমিটি হয়েছে। সর্বশেষ গঠিত তদন্ত কমিটি কাজ করছে। তাদের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।’

তবে কবে নাগাদ কমিটি প্রতিবেদন জমা দেবে—সে বিষয়ে বিকাশ দেওয়ান বলেন, ‘এটি চলমান প্রক্রিয়া।  তাদের কাজ শেষ হলেই প্রতিবেদন দাখিল হবে।’

এদিকে বিদ্যুৎ বিভাগ গঠিত কমিটির সদস্য (পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক) মোহাম্মদ হোসেইন বলেন, ‘প্রকৃত কারণ জানার জন‌্য কমিটির কাজ চলছে। এরই মধ্যে ছয়টি বিতরণ কোম্পানির সঙ্গে কথা হয়েছে। ১৭ আগস্ট পর্যন্ত এই কার্যক্রম চলবে। এরপর সব বিষয় খতিয়ে দেখে, আগের কমিটিগুলোর প্রতিবেদন দেখা হবে।’  সব যাচাই-বাছাই করেই প্রতিবেদন দেবেন বলেও তিনি জানান।

হাসান/এনই

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়