আবের পদত্যাগে কূটনৈতিক সম্পর্কে প্রভাব নিয়ে ভাবছে না বাংলাদেশ
হাসান মাহামুদ || রাইজিংবিডি.কম
জাপান বাংলাদেশের বন্ধুরাষ্ট্র হিসেবেই পরিচিত। নানা দুর্যোগ-দুর্বিপাকে সবসময় বাংলাদেশের পাশে থেকেছে শিল্পোন্নত দেশটি। অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য স্বার্থসহ দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক খুবই সুদৃঢ়। সম্প্রতি জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের অসুস্থতার কারণে পদত্যাগ করায় সেই সর্ম্পকে কতটুকু প্রভাব পড়বে তা নিয়ে ভাবছেন বিশ্লেকরা। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যক্তি আবের সঙ্গে বাংলাদেশের যে সর্ম্পক ছিল, তার অভাব অনুভব করবে বাংলাদেশ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সর্ম্পক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, জাপান বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ উন্নয়ন সহযোগী। জাপান ভবিষ্যতেও বাংলাদেশের স্থিতিশীল উন্নয়নের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে সহযোগিতা করে যাবে। বিশেষ করে, জ্বালানি খাতসহ অন্য যেসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বর্তমানে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে রয়েছে, সেই সব ক্ষেত্রে জাপান সহযোগিতা জোরদার করার আশা রাখে।
তিনি বলেন, দেশটির গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা এমন একটি ভীতের ওপর প্রতিষ্ঠিত যে তারা দ্বিপক্ষীয় কিংবা কূটনৈতিক সর্ম্পকগুলোর অনেক বেশি যত্নবান। দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করায় প্রধানমন্ত্রী আবের সঙ্গে বাংলাদেশের একটি গভীর সর্ম্পক রয়েছে। এ সম্পর্কের একটি রেশও আগামীদিনে থাকবে আশা করা যায়।
কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জাপানিদের ভৌগোলিক অভিজ্ঞানে বর্তমান বাংলাদেশ হচ্ছে তাদের নিজেদের নৃতাত্ত্বিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অর্থনীতির বলয়ভুক্ত দেশগুলোর সীমান্ত। দুই দেশের সম্পর্কের গভীরতা ও গতিপ্রকৃতিতে অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং বাংলাদেশ-জাপান দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের উত্থান-পতন বিশেষ নির্দেশক হিসেবে কাজ করেছে। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের একটি বড় অনুষঙ্গ হলো গত ৪৭ বছরে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও বাণিজ্যিক আদান-প্রদানের প্রসারতা।
এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাণিজ্যিক সর্ম্পক জোরদার এবং বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষে নিয়মিত দু'দেশের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি অর্থনৈতিক সংলাপে বসার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় গত বছরের শেষদিকে।
সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, এ ধারা অব্যাহত থাকবে। জাপান প্রতি পাঁচবছর সমুদ্র নীতির পরিকল্পনা করে থাকে।২০১৮সালের দিকে তৃতীয় সমুদ্র নীতি প্রণয়ন করে দেশটি। প্রণীত নীতির মাধ্যমে জাপান সমুদ্র তীরবর্তী প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে চায় তারা। বাংলাদেশ সামুদ্রিক অর্থনীতিতে অনেক এগিয়েছে। ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিবেশী দেশগুলোর আঞ্চলিক যোগাযোগও অনেক বেড়েছে। এ দৃষ্টিকোণ থেকেও আগামী দিনে দেশটির সঙ্গে মসৃণ সর্ম্পক আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেন, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য চলে মুক্ত বাজার নীতিতে এবং গ্যাট ও অধুনা ডব্লিউটিও নিয়ন্ত্রিত অনুশাসন অনুসারে। বাংলাদেশের পণ্য জাপানের বাজারে প্রবেশে ৩৮টি স্বল্পোন্নত দেশের মতো জিএসপি সুবিধা পেয়ে থাকে। জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেট্রো) জাপানে বাংলাদেশি পণ্যের বাজার সৃষ্টিতে নানা টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স দিয়ে থাকে। আমরা আশা করছি এ সর্ম্পক আরও উত্তরোত্তর সমৃদ্ধ হবে।
ঢাকা/হাসান/এসএম
আরো পড়ুন