ডিটিসিএ শুধু সমীক্ষার মধ্যে ঘুরপাক খায়: কাদের

ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) শুধু সমীক্ষা আর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের মধ্যে ঘুরপাক খায় বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ডিটিসিএর কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ মন্তব‌্য করেন তিনি। জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় অবস্থিত সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ‌্যমে মতবিনিময় সভায় যুক্ত হন সড়ক পরিবহনমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘যে কাজই দেওয়া হয়, শুধু সমীক্ষা আর সমীক্ষা। কাজ হতে দেখি না। র‌্যাপিড পাস আর ক্লিয়ারিং হাউসের কাজের দ্বিতীয় পর্যায়ও একই বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে। দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই।’

সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, ‘বলতে গেলে, এ নগরীতে ফুটপাথ নেই। পথচারীদের হাঁটার জন্য যে ফুটপাথ, সেটা বেদখলে। ঢাকা সিটি কলেজ থেকে সাত মসজিদ রোড হয়ে ধানমন্ডি ২৭ নম্বর মোড় পর্যন্ত পথচারীবান্ধব ফুটপাথ নির্মাণের উদ্যোগ এখনো সমীক্ষা কার্যক্রমে সীমাবদ্ধ। কবে শেষ হবে সমীক্ষা? কখন প্রকল্প নেওয়া হবে, আর কখন কাজ হবে, জানি না। ডিটিসিএ শুধু সমীক্ষা আর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের মধ্যে ঘুরপাক খায়।’

তিনি বলেন, ‘র‌্যাপিড পাস উদ্বোধন করেছিলাম, কিন্তু কার্যকারিতা দেখছি না। তখন তো বলা হয়েছিল, সবাই এ কার্ড ব্যবহার করবে। তাহলে এখন করছে না কেন? নিশ্চয়ই আপনাদের পরিকল্পনা জনবান্ধব ও যাত্রীবান্ধব ছিল না, যতটা প্রত্যাশা ছিল।’

জনবহুল এবং ক্রমবর্ধমান ঢাকা মহানগরীর যানবাহন ব্যবস্থাপনায় ডিটিসিএর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘ইতোমধ্যে এ প্রতিষ্ঠানে জনবল বাড়ানো হয়েছে। আমি প্রথমেই সমন্বয়ের কথা বলতে চাই। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ঢাকা মহানগরী এবং পাশ্ববর্তী এলাকায় সড়ক উন্নয়ন ও ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে প্রতিটি প্রকল্প যেন আমাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা আরএসটিপির সঙ্গে সমন্বয় করে করা হয়। কোনো একটি প্রকল্প যদি আরএসটিপি সঙ্গে সমন্বিত না হয়, তাহলে নগরবাসীর উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হবে।’

তিনি বলেন, ‘ঢাকা মহানগরীর যানজট ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ইস্যু। দীর্ঘদিন থেকে ডিটিসিএ কাজ করছে রুট রেশনালাইজেশনের জন্য। বাসগুলোকে কোম্পানিতে রূপান্তরের মাধ্যমে পরিচালনার আলোচনা শুরু হয় মরহুম মেয়র আনিসুল হকের সময়। এরপর দায়িত্ব দেওয়া হয় সাঈদ খোকন সাহেবকে। কিন্তু কতদূর এগুলো? নগরবাসী তো এখনো কিছু দেখতে পেলো না। কয়টি সভা হলো, সেটা বিষয় নয়, বিষয় হচ্ছে উদ্যোগকে দৃশ্যমান করা।’

আইন পাশ করে ডিটিসিএর ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে, এ তথ‌্য জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘সেটি কাজে লাগানো হচ্ছে কি না, আপনারাই ভালো জানেন। বহুতল ভবনের ট্রাফিক ক্লিয়ারেন্স পেতেও ভোগান্তি আছে বলে আমার কাছে অভিযোগ আছে। এসব সভা আপনারা নিয়মিত করবেন। মানুষের ভোগান্তি যেন না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।’

১ সেপ্টেম্বর থেকে গণপরিবহন করোনাকালের জন্য সমন্বয় করা ভাড়ার পরিবর্তে আগের ভাড়ায় ফিরছে বলেও জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।
সারা দেশে পরিবহন সংশ্লিষ্ট সবাইকে জনস্বার্থে স্বাস্থ‌্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের। একই সঙ্গে প্রতিটি বাসে সরকার অনুমোদিত ভাড়ার তালিকা প্রদর্শনের আহ্বান জানান তিনি।