ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

আসছে ‘পানিসম্পদ অধিদপ্তর’, জটিলতা নিরসনে বৈঠক বুধবার

হাসান মাহামুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৫০, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০   আপডেট: ২২:৫১, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০
আসছে ‘পানিসম্পদ অধিদপ্তর’, জটিলতা নিরসনে বৈঠক বুধবার

স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বিলুপ্ত করে ‘বাংলাদেশ পানিসম্পদ অধিদপ্তর’-এর রূপান্তরিত করতে যাচ্ছে সরকার। এজন্য ‘বাংলাদেশ পানিসম্পদ অধিদপ্তর আইন-২০২০’ নামে প্রণয়ন করা হচ্ছে নতুন আইন।  খসড়া আইনে প্রস্তাবিত ক্যাডার নিয়ে এরই মধ্যে বোর্ডের কর্মকর্তাদের মধ্যে মতবিরোধের কারণে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।  আর এই জটিলতা নিরসনে জরুরি ভিত্তিতে বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সংশ্লিষ্টরা বৈঠকে বসছেন।

সংশ্লিষ্টসূত্রে জানা গেছে,  পাউবোতে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা বা নবম গ্রেডে দুভাবে নিয়োগ হয়।  একটি সহকারী প্রকৌশলী পদে, অন্যটি সহকারী পরিচালক পদে। পদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় (৪৬৩ পদ) বোর্ডে সহকারী প্রকৌশলীরা শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। অন্যদিকে, সহকারী পরিচালক বা (সাধারণ পেশা) পদের সংখ্যা কম থাকায় (২০৯) তাদের অবস্থান দুর্বল।  জটিলতা দেখা দিয়েছে খসড়া ‘বাংলাদেশ পানিসম্পদ অধিদপ্তর আইনের ২৪-এর-ঘ’ ধারা নিয়ে।

এতে বলা হয়েছে, পানি উন্নয়ন বোর্ডে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে সহকারী প্রকৌশলী পদে যারা নিয়োগ পেয়েছেন, তারা অধিদপ্তরে পানিসম্পদ প্রকৌশলী হিসেবে সাবক্যাডারের সদস্য হবেন।  তবে, সহকারী পরিচালকদের বিষয়ে সুস্পষ্ট কিছু বলা নেই।  ফলে বোর্ডে সহকারী পরিচালক পদে কর্মরতরা আশঙ্কা করছেন, পাউবো বিলুপ্ত হলে তাদের পদ ব্লকড হয়ে যেতে পারে।  ভবিষ্যতে তাদের পদোন্নতির সুযোগ থাকবে না।  আর সেই আশঙ্কা থেকেই তারা বিষয়টির উল্লেখ করে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন।

মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব রোকন উদ দৌলা বলেন, ‘বিষয়টি চলমান প্রক্রিয়া।  যেকোনো বিষয়ে অভিমত থাকবে, পরিবর্তন-পরিবর্ধন হবে।  তবে, আশা করছি, দ্রুত পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে যাবে।’

পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রস্তাবিত আইনের খসড়া ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে মন্ত্রণালয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এতে মন্ত্রণালয় ও বোর্ডের কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।

জানতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার বলেন, ‘‘যুগের চাহিদার আলোকেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।  নতুন করে গঠন করা হচ্ছে ‘বাংলাদেশ পানিসম্পদ অধিদপ্তর’।  একইসঙ্গে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে আগের আইনটিও।  নতুন আইনে পরিচালিত হবে অধিদপ্তর। এজন্য প্রণয়ন করা হচ্ছে ‘বাংলাদেশ পানিসম্পদ অধিদপ্তর আইন-২০২০’ নামে নতুন আইন।  এই আইন প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে। আরও কিছু কাজ বাকি আছে। এই কাজ শেষ হলেই মন্ত্রিসভার অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং শেষে জাতীয় সংসদে পাসের জন্য পাঠানো হবে। জাতীয় সংসদে আইনটি পাসের মধ্য দিয়ে বোর্ড বিলুপ্ত হয়ে অধিদপ্তর গঠন করা হবে।’’

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড চলে নিজস্ব নিয়মনীতির মাধ্যমে।  অধিদপ্তর হলে সরকারি নীতিমালার আলোকে চলবে। এখানে সহকারী প্রকৌশলী পদে যারা ঢোকেন, তাদের অনেকে দুই-এক বছরের মধ্যেই দেশের বাইরে চলে যান।  অধিদপ্তর হলে এখানে সুযোগ-সুবিধা বাড়বে, ফলে কাজে গতি আসবে।

আইনের খসড়া পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, অধিদপ্তরে একজন মহাপরিচালক থাকবেন।  এর প্রধান কার্যালয় থাকবে ঢাকায়। সংস্থার কাজ সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের স্বার্থে সরকার দেশের যেকোনো স্থানে এর শাখা খুলতে পারবে।  প্রতিষ্ঠান দেশের সব নদ-নদী, জলাধার, ভূগর্ভস্থ ও ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবস্থাপনা করবে। বন্যা ব্যবস্থাপনা, পানি নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পগুলো পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণও করবে। 

খসড়ায় বলা হয়েছে, পানি উন্নয়ন বোর্ডে কর্মরত সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অধিদপ্তরেও একই পদে বদলি ও পদায়ন করা হবে।  অধিদপ্তর গঠনের পর সহকারী প্রকৌশলী ও সহকারী পরিচালক পদ ছাড়াও অন্যান্য সমমানের পদ  নিয়ে ‘বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস’ পানিসম্পদ ক্যাডারের অধীনে সাব ক্যাডার গঠিত হবে।

হাসান/এনই

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়