ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ডিসি সম্মেলনের বিকল্প ভাবছে সরকার 

হাসান মাহামুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৫৫, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০   আপডেট: ১৭:৪৪, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০
ডিসি সম্মেলনের বিকল্প ভাবছে সরকার 

করোনার কারণে এবার  জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) সম্মেলন না হলেও বিকল্প ভাবছে সরকার।  তবে, এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত না নিলেও ডিসি সম্মেলন নিয়ে মন্ত্রণালয়ভিত্তিক সমন্বয় সভা করছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নির্দিষ্ট সময়ে সম্মেলন না হওয়ার আশঙ্কায় জুন থেকে ডিসিদের কাছে প্রস্তাবনা চেয়ে পাঠানো হয়।  এরই মধ্যে ডিসিরা তাদের প্রস্তাব পাঠিয়ে দিয়েছেন।  মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এসব প্রস্তাব যাচাই-বাছাই করে মন্ত্রণালয়ভিত্তিক সমন্বয় বৈঠক করছে।  এসব বৈঠকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় প্রস্তাবগুলো যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত করছে। 

প্রস্তাবনা চূড়ান্ত হলে অন্তত একদিন হলেও ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্মেলন করা যায় কি না—তা নিয়েও আলোচনা চলছে। তবে,  মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘ডিজিটাল পদ্ধতিতেও সম্মেলন হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।  কারণ এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো প্রস্তুতি নেওয়া হয়নি।’

জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (জেলা ও মাঠ প্রশাসন অনুবিভাগ) শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ডিসিদের কাছ থেকে আসা প্রস্তাবনা নিয়ে কাজ চলছে  ডিসি সম্মেলনে মন্ত্রণালয়ভিত্তিক যে সমন্বয় বৈঠক হয়, এখন সে কাজগুলোই করছি।  এবার অন‌্যান‌্য বছরের মতো ডিসি সম্মেলন  না-ও হতে পারে। ’ তবে তিনি এ-ও বলেন, ‘এখনো বলা যাবে না—ডিসি সম্মেলনের সম্ভাবনা নেই।’

প্রসঙ্গত, মার্চে শুরু হওয়া করোনা পরিস্থিতি মে মাসেও স্বাভাবিক না হওয়ায়  সময়মতো ডিসি সম্মেলন অনুষ্ঠান নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়।  জুনের শেষ দিকে  ডিসি সম্মেলন না করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এরপর নভেম্বর-ডিসেম্বরের দিকে ডিসি সম্মেলন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় এখন পর্যন্ত কোনো প্রস্তুতি নেওয়া হয়নি।

কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘সম্মেলনের মূল বৈঠক হয় সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মন্ত্রিসভা কক্ষে।  এতে প্রতি সেশনে সবাইকে গা-ঘেঁষে বসতে হয়।  তাই করোনাকালে এখানে সম্মেলন অনুষ্ঠান সম্ভব নয়।  অন্যদিকে সচিবালয়ের পার্শ্ববর্তী এমএজি ওসমানী মিলনায়তনে সম্মেলন আয়োজনের আলোচনাও ছিল।  কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এত কর্মকর্তাকে একযোগে ঢাকায় এনে রাখার জন্য এই সময়কে উপযুক্ত মনে করছেন না তারা। 

ডিসিদের বার্ষিক সম্মেলন জাতীয় পঞ্জিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্ব। প্রতিবছরের জুলাইয়ে প্রত‌্যেক মন্ত্রণালয় ও বিভাগের চাহিদা অনুযায়ী এ সময় বেশকিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।  পরবর্তী সম্মেলনের আগে সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। রীতি অনুযায়ী প্রতিবছর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এই সম্মেলন উদ্বোধন করা হয়। এরপর মুক্ত আলোচনায় মাঠ প্রশাসন সংক্রান্ত জনস্বার্থবিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে ডিসিদের কথা শোনেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় তিনি  ডিসিদের গুরুত্বপূর্ণ দিক-নির্দেশনাও দেন।

এছাড়া, সম্মেলনে বঙ্গভবনের দরবার হলে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে দিক-নির্দেশনা নেন ডিসিরা। সম্মেলন চলার সময় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব, সচিব বিভিন্ন অধিবেশনে উপস্থিত থেকে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের দিক-নির্দেশনা দেন। 

কর্ম অধিবেশনগুলো হয় সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে।  অধিবেশনগুলোয় সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধি হিসেবে মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব ও সচিবরা উপস্থিত থাকেন।  জেলা প্রশাসন সম্মেলন উপলক্ষে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনাররা লিখিতভাবে মাঠ প্রশাসনের সমস্যাগুলো নিয়ে প্রস্তাব দেন। অধিবেশনের সময় এগুলো ছাড়াও ডিসিরা তাৎক্ষণিক বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন। বিগত বছরগুলোতে তিন দিনব্যাপী ডিসি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলেও গতবছরের সম্মেলন হয়েছে পাঁচ দিনব্যাপী।  আর ২০১৮ সালে হয়েছিল চার দিনব্যাপী।

ঢাকা/এনই

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়