ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

আইন না মানলে বেসরকারি মেডিক্যালের অনুমোদন বাতিল

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৫১, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০   আপডেট: ১৯:৩২, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০
আইন না মানলে বেসরকারি মেডিক্যালের অনুমোদন বাতিল

মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম (ফাইল ছবি)

আইন লঙ্ঘন করলে দণ্ডাদেশ-জরিমানাসহ বেসরকারি মেডিক্যালের অনুমোদন বাতিল করা হবে। 

এছাড়া বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ২৫ শতাংশের বেশি খণ্ডকলীন (পার্টটাইম) শিক্ষক রাখা যাবে না বরং ৭৫ শতাংশ স্থায়ী শিক্ষক রাখতে হবে; এমন বিধান রেখেই ‘বেসরকারি মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কলেজ আইন, ২০২০’ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠকে এর অনুমোদন দেওয়া হয়।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী এবং সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রিসভার সদস্যরা বৈঠকে যোগ দেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, খসড়া আইন অনুযায়ী, মেট্রোপলিটন এলাকায় মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজ স্থাপনে দুই একর ও অন্যান্য এলাকায় চার একর জমি থাকতে হবে। রিজার্ভ ফান্ড হিসেবে মেডিক্যাল কলেজগুলোতে তিন কোটি ও ডেন্টাল কলেজগুলোকে দুই কোটি টাকা রাখতে হবে।

খসড়া আইনে আইন ভঙ্গ করলে শাস্তির কথা বলা হয়েছে জানিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘আইন না মানলে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেওয়া যেতে পারে। শর্তপূরণ না করলে মেডিক্যালের অনুমোদন বাতিল হবে বলেও বলা হয়েছে।’

দেশে বর্তমানে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের সংখ্যা ৭০টি, ডেন্টাল কলেজ ২৬টি, সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ৩৬টি এবং একটি ডেন্টাল কলেজ রয়েছে জানিয়ে সচিব বলেন, এতদিন বেসরকারি মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজগুলো চলতো দুটি নীতিমালার মাধ্যমে। এখন দেখা যাচ্ছে নীতিমালা দিয়ে সবকিছু সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। এজন্য একটা আইন প্রয়োজন, এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যশিক্ষা বিভাগ থেকে এ খসড়া আইন নিয়ে আসা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের একাডেমিক অনুমোদন, একাডেমিক অনুমোদন নবায়ন, শিক্ষা কার্যক্রম, কতগুলো ছাত্র থাকবে, সেজন্য কী ফ্যাসিলিটিজ থাকতে হবে, ছাত্র-শিক্ষকের অনুপাত কী হবে, শিক্ষকদের কী যোগ্যতা থাকবে, কলেজগুলো কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকবে, আর্থিক ব্যবস্থাপনা কী হবে, কী ফ্যাসিলিটিজ থাকবে- এ বিষয়গুলো খসড়া আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’

প্রত্যেক বিভাগের শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের অনুপাত হবে ১:১০, অর্থাৎ প্রত্যেক ১০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষকের ব্যবস্থা থাকতে হবে।  মিনিমাম ছাত্র হতে হবে ৫০ জন।  ২৫ ভাগের বেশি খণ্ডকালীন শিক্ষক রাখা যাবে না, ৭৫ শতাংশ স্থায়ী শিক্ষক থাকতে হবে, জানান সচিব।

বর্তমান নীতিমালায় অনেক কিছু স্পষ্ট না থাকায় অনেক বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ পার্টটাইম শিক্ষক দিয়ে চালানো হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকটি বিষয়ে কমপক্ষে পাঁচজন শিক্ষক থাকতে হবে, সেখানে ৫০ জন শিক্ষার্থী থাকবে।’

সচিব বলেন, ‘মেডিক্যাল চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার একটি ব্যবস্থা রাখতে হবে। চিকিৎসা বর্জ্যগুলো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, নরমাল যে ডাম্পিং গ্রাউন্ড সেখানে ফেললে হবে না। সেখানে থেকে ভাইরাস বা রোগ-জীবাণুর ব্যাপক প্রসার হতে পারে। এজন্য মেডিক্যাল কলেজগুলোকে মেডিকেল বর্জ্য ডিসপোজালের ব্যবস্থা রাখতে হবে।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘মেডিক্যাল কলেজের ১০ শতাংশ শয্যা গরিব রোগীদের জন্য বিনা পয়সায় চিকিৎসার জন্য সংরক্ষিত রাখতে হবে। কলেজগুলোতে কমপক্ষে ২৫০ শয্যার হাসপাতাল ও ডেন্টালে ৫০ শয্যার হাসপাতাল থাকতে হবে।’

এছাড়া সভায় দেশের দরিদ্র্য আরও ১০ উপজেলায় ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি সম্প্রসারণ করার লক্ষ্যে ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি অষ্টম পর্ব সম্প্রসারণের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সচিব জানান, ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি অষ্টম পর্ব সম্প্রসারণের জন্য ৪৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা প্রয়োজন। অর্থ বিভাগ এরইমধ্যে বরাদ্দও দিয়েছে।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/জেডআর

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়