ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

পার্ক থেকে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ ৩ অক্টোবর থেকে

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৪২, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০   আপডেট: ০৭:০২, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০
পার্ক থেকে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ ৩ অক্টোবর থেকে

ঢাকার উত্তরে অবৈধভাবে দখলে রাখা পার্কগুলোতে ৩ অক্টোবর থেকে উচ্ছেদ অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। 

সোমবার গুলশানে বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ পার্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মেয়র এ কথা বলেন।

মেয়র বলেন, ‘অবৈধভাবে দখল করে রাখা পার্কগুলোতে আগামী মাসের তিন তারিখ থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে, উচ্ছেদ করে জনগণের পার্ক জনগণের হাতে তুলে দেওয়া হবে। এটাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিনের অঙ্গীকার।’ 

আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘যারা রাস্তা, ফুটপাত দখল করে আছেন, তারা এই অবৈধ মনোভাব ছেড়ে দিন। বঙ্গবন্ধু দেশকে ভালোবেসেছেন, দেশের মানুষকে ভালোবেসেছেন। লাল-সবুজের পতাকার জন্য তিনি সারাজীবন জেলে ছিলেন। জাতির জনকের সেই চিন্তা-ভাবনা যদি ধরে রাখতে পারতাম, তাহলে আমাদেরকে বুলডোজার দিয়ে অবৈধ স্থাপনা গুড়িয়ে দিতে হতো না। ফুটপাতে রড সিমেন্ট রেখে অট্টালিকা করছেন, বাড়ি করছেন। কিন্তু একবারও কি খেয়াল করলেন না, রাস্তায়, ফুটপাতে নির্মাণসামগ্রী রেখে দেওয়ায় জনগণের অসুবিধা হচ্ছে।’

মেয়র আরও বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষ্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন যে কর্মসূচি হাতে নিয়েছে, এতে কোনো আড়ম্বর নাই, কেক কাটা নাই। বরং সাদামাটা, অনাড়ম্বর অথচ তাৎপর্যময় এই কর্মসূচি। ডিএনসিসির ৫৪টি ওয়ার্ডেও অনুরূপ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।’

ডিএনসিসি কর্তৃক চালু করা দুইটি ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি ‘পরম্পরা’ সম্পর্কেও কথা বলেন মেয়র। বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে এ জাতি-রাষ্ট্রের জন্ম। তাঁর স্বপ্ন ছিল সোনার বাংলা গড়ার। শেখ হাসিনার হাতে এর উন্নয়ন ও বিকাশ। সোনার বাংলা অর্জণে আমরা অনেক কিছুতেই সফল। বঙ্গবন্ধু থেকে শেখ হাসিনা, এই পরম্পরাই বাঙ্গালি জাতির পরম্পরা। মুক্তিযুদ্ধ থেকে উন্নয়নের পরম্পরা। আমাদের নতুন প্রজন্মকে এই পরম্পরা জানতে হবে। এ লক্ষ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আয়োজন “পড়ি পরম্পরা, জানি নেতৃত্ব”। এই পরম্পরার মাধ্যমে স্বাধীনতা সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা সম্পর্কে বর্তমান প্রজন্মকে জানানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ দুইটি গ্রন্থাগারের মাধ্যমে স্বাধীনতা সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবার এবং শেখ হাসিনা সম্পর্কে প্রকাশিত বই ঘরে-ঘরে পৌঁছে দেওয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষ্যে চিত্রাঙ্কনের আয়োজন করা হয়েছে। এই চিত্রাঙ্কনে অংশ নিচ্ছে আমাদেরই অর্থাৎ ডিএনসিসি পরিবারের ৭৪ জন শিশু-কিশোররা। এই শিশু-কিশোরদের বাবা-মায়েরা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে কর্মরত। এই পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা ভোর হওয়ার আগেই শহরকে ঝকঝকে তকতকে করে রাখে। আমরা শহরকে নোংরা করি, আর তারা আমাদের ফেলে দেওয়া ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করে শহরকে বাসযোগ্য করে তোলে। এখানে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুরাও ছবি আঁকবে। সবাইকে নিয়ে একটি অন্তর্ভূক্তিমূলক শহর ‘সবার জন্য সবার ঢাকা’ গড়ে তোলা আমাদের লক্ষ্য। শিশু-কিশোরদের সঙ্গে সঙ্গে ছবি আঁকবেন দেশের বরেণ্য চিত্রশিল্পীগণ। তাঁদের কাছে শিশুরা ছবি আঁকা দেখবেন, শিখবেন। এ যেন গুরু-শিষ্যেরও এক পরম্পরা।’

উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে অতিথিরা দুইটি ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি পরম্পরা উদ্বোধন করেন এবং শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন দেখেন। পরে শান্তির প্রতীক কবুতর মুক্ত করা হয়। সবশেষে কবিতা আবৃত্তি ও গান পরিবেশন করা হয়। এতে অংশ নেন আসাদুজ্জামান নূর, আহকাম উল্লাহ, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাসহ বিশিষ্ট ব‌্যক্তিরা।  

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, বিশেষ অতিথি জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ, সংসদ সদস্য শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, আসাদুজ্জামান নূর, এ কে এম রহমত উল্লাহ, সুবর্ণা মোস্তফা, নাহিদ ইজাহার খান, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়া, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তফা ওসমান তুরান, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজাসহ বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/সাওন/সাজেদ 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়