ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথে আস্থাহীনতা বাধা’

নিউজ ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:১২, ১ অক্টোবর ২০২০   আপডেট: ২১:১৬, ১ অক্টোবর ২০২০
‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথে আস্থাহীনতা বাধা’

রাষ্ট্র ও নাগরিক সমাজের মধ্যে আস্থাহীনতা কোভিড পরবর্তী বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাধাগ্রস্ত করবে।

বৃহস্পতিবার (০১ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত একটি ‘ভবিষ্যৎ পুনর্গঠনে মহামারি পরবর্তী বিশ্বে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশের ভূমিকা’ শীর্ষক একটি ওয়েবিনারে বক্তারা এমন অভিমত ব্যক্ত করেন। 

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পিস স্টাডিস ও অস্ট্রেলিয়ার সানসাইন কোস্ট বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে ওয়েবিনারের আয়োজন করে। সেন্টার ফর পিস স্টাডিস এর পরামর্শক ড. ক্যাথরিন লি এর বক্তব্যের মাধ্যমে ওয়েবিনারের সূচনা হয়। 

ড. ক্যাথরিন লি তার বক্তব্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাকে পরবর্তী পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বাংলাদেশকে রোল মডেল হিসেবে চিহ্নিত করেন। কোভিড পরবর্তী বিশ্বে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ও বহুপাক্ষিক সহযোগিতার প্রয়োজন আরও বেশি বলে তিনি মনে করেন।

অনুষ্ঠানে বক্তারা নতুন করে বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন ও সংস্কারের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাকে জাতীয় পরিকল্পনার একটি অংশ হিসেবে বিবেচনা করে কোভিড পরবর্তী অবস্থায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেন। 

সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ’র ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ও সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘আমাদের সামগ্রিক সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে এবং প্রবৃদ্ধি ঠিক রেখেই কোভিড পরবর্তী সমস্যাগুলো টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার আলোকে পরিকল্পনা হাতে নিতে হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি সমাজের সবার ভাগ্য উন্নয়নের জন্য একযোগে সমন্বিত প্রচেষ্টা নেওয়ার কথা বলেন।’

ইউএনডিপির বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি সামাজিক সুরক্ষার ওপর জোর দিয়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করতে বলেন। তিনি আরও বলেন, কোভিড পরবর্তী সময়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে উন্নয়ন কার্যক্রম হতে হবে পরিবেশবান্ধব, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পক্ষপাতশূন্য।’

কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার ক্ষেত্রে গ্রিফিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. তপন সরকার বলেন, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় বাংলাদেশকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি ও সহযোগিতাভিত্তিক পদক্ষেপ নিতে হবে, যেন স্বাস্থ্যখাতের পাশাপাশি দারিদ্র্য, অসমতা ও শিক্ষাখাতের চ্যালেঞ্জগুলো সঠিকভাবে মোকাবিলা করতে পারে। 

এ প্রসঙ্গে এস আই পি জি এর পরামর্শক অধ্যাপক সালাহউদ্দিন এম আমিনুজ্জামান বলেন, কোভিড-১৯ আমাদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া বিভিন্ন সংস্থার ওপর জনমনের ভরসার অভাবকে প্রকটভাবে ফুটিয়ে তুলেছে। যে কারণে কোভিড পরবর্তী বাংলাদেশের জন্য টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে স্বাস্থ্যখাতকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর বিকল্প নেই।

অস্ট্রেলিয়ার সানসাইন কোস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো ড. শরীফ আহমেদ মুকুল বলেন, কোভিড পরবর্তী বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কাজ করার সময় পরিবেশবান্ধব কার্যক্রমের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। 

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গর্ভনেন্সের (এস আই পিজি) জ্যেষ্ঠ ফেলো শহীদুল হক বলেন, জনগণের দাবি ও স্বার্থকে সামনে রেখে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাকে নতুনভাবে বিবেচনায় আনতে হবে। প্রয়োজনে নতুন করে বৈশ্বিক ডায়ালগ তৈরির প্রচেষ্টা হাতে নিতে হবে। 

সমাপনি বক্তব্যে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম বলেন, কোভিড-১৯ বিভিন্ন রকম সমস্যা নিয়ে আসছে। একজন শিক্ষাবিদ হিসেবে তিনি একটি বিশাল অংশের ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা বিষয়ক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত হওয়ার প্রতি জোর দেন। তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের নৈতিক শিক্ষার ওপরও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেন। 

ড. বুলবুল সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গর্ভনেন্সের পরিচালক অধ্যাপক শেখ তৌফিক এম হক, সিপিএ’র সমন্বয়ক ড. এম জসিম উদ্দিনসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, পেশাজীবী ও বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থায় কর্মরত আমন্ত্রিত অতিথিরা।

ঢাকা/জেডআর

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়