ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

৭ মার্চের ভাষণের ইউনেস্কোর স্বীকৃতি স্মরণে স্মারক ডাকটিকিট

কূটনৈতিক প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৩৪, ৩০ অক্টোবর ২০২০  
৭ মার্চের ভাষণের ইউনেস্কোর স্বীকৃতি স্মরণে স্মারক ডাকটিকিট

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর ইউনেস্কো ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্যে’র অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এ উপলক্ষে ডাক অধিদপ্তর প্রতিটি দশ টাকা মূল্যমানের দুটি স্মারক ডাকটিকিট সমন্বয়ে ত্রিশ টাকা মূল্যমানের একটি স্যুভেনির সিট অবমুক্ত করেছে। এছাড়া এ উপলক্ষে দশ টাকা মূল্যমানের একটি উদ্বোধনী খাম, পাঁচ টাকা মূল্যমানের একটি ডাটা কার্ড প্রকাশ করেছে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) ঢাকায় তার দপ্তর থেকে স্মারক ডাকটিকিট সমন্বয়ে স্যুভেনির ও উদ্বোধনী খাম অবমুক্ত এবং ও ডাটা কার্ড প্রকাশ করেন। এই উপলক্ষে একটি বিশেষ সীলমোহর ব্যবহার করা হয়।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে ইউনেস্কো ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’র অংশ হিসেবে স্বীকৃতি উপলক্ষে এক বিবৃতিতে বলেন, জাতির হাজার বছরের পরাধীনতা থেকে মুক্তির ইতিহাসের চূড়ান্ত অভিযাত্রায় ঘটনাবহুল ১৮ মিনিটের ৭ মার্চের ভাষণটি ছিল ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়- মুক্তির ঐতিহাসিক সোপান। এই ভাষণটি ছিল বঙ্গবন্ধুর উপস্থিত ভাষণ, এটির কোনো লিখিত পাণ্ডুলিপি ছিল না। বাঙালি জাতির পরাধীনতা থেকে মুক্তির আকাঙ্ক্ষা, বঞ্চনার হাহাকার, অত্যাচার, শোষণ, লাঞ্ছনা আর ক্ষোভ- হতাশার দীর্ঘশ্বাস, অধিকার হরণ ও মর্ম বেদনার অস্ফুট কান্নার সুদীর্ঘ কাহিনি পরম্পরা বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা, বাংলাদেশ রাষ্ট্র নামক মহাকাব্যের মহাকবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হৃদয়ের অন্তস্থল থেকে স্বতস্ফুর্তভাবে স্ফূরণ ঘটেছে এই ভাষণে। এই ভাষণ ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামের পরিপূর্ণ এক দিক-নির্দেশনা- ঐতিহাসিক ঘোষণা। যেখানে তিনি বলেছেন: “.... সাত কোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না। ..... প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল।  তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে.... মনে রাখবা, রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেব, এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম”। ইতিহাসের ঘটনাবহুল ভাষণটি বাঙালি জাতির মুক্তি সংগ্রামের অমর মহাকাব্যে পরিণত হয়েছে।  এ ভাষণটি বাঙালি জাতির গণ্ডি পেরিয়ে এখন বৈশ্বিক সম্পদে রূপান্তর লাভ করেছে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ‘মেমোরি অফ দ্য ওয়ার্ল্ডস ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টার’-এ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।  ‘মেমোরি অফ দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টার’ ইউনেস্কো কর্তৃক পরিচালিত বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণিক ঐতিহ্যের একটি তালিকা।  ইউনেস্কোর স্বীকৃতি শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকেই সম্মান এনে দেয়নি, সমগ্র দেশ ও জাতিকেও সম্মান এনে দিয়েছে। ভাষণটি সম্পর্কে ইউনেস্কো তার ভূমিকাতে লিখেছে: ‘ভাষণটি কার্যকর ভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিল।  উত্তর-ঔপনিবেশিক সাম্প্রদায়িক (অনেক কিছু বা সব কিছু সমেত) গণতান্ত্রিক সমাজ পূর্ণতর করতে পারার ব্যর্থতা কিভাবে তাদের দেশে বসবাসরত জনসমষ্টির অংশ স্বরূপ হওয়া পৃথক (ভিন্নতর) নৃতাত্ত্বিক, সাংস্কৃতিক, ভাষা অথবা ধর্মীয় গোষ্ঠী (দল, উপদল, শ্রেণি, শাখা) কে বিরূপ ও বৈরী করে ভাষণটি সেটির বিশ্বস্ত উপস্হাপন করে যাচ্ছে” বলে তিনি উল্লেখ করেন।

স্মারক ডাকটিকিট সমন্বয়ে স্যুভেনির ও উদ্বোধনী খাম ৩০ অক্টোবর শুক্রবার ঢাকা জিপিও এর ফিলাটেলিক ব্যুরো থেকে বিক্রি করা হবে। পরবর্তীতে অন্যান্য জিপিও ও প্রধান ডাকঘরসহ দেশের সব ডাকঘর থেকে এ স্মারক ডাকটিকিট ডাটা কার্ড বিক্রি করা হবে।  উদ্বোধনী খামে ব্যবহারের জন্য চারটি জিপিওতে বিশেষ সিলমোহরের ব্যবস্থা আছে। 

হাসান/সাইফ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়