ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

স্বাস্থ্যবিধি না মানাই করোনার সেকেন্ড ওয়েভের কারণ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৫৫, ২৯ নভেম্বর ২০২০   আপডেট: ২৩:১২, ২৯ নভেম্বর ২০২০
স্বাস্থ্যবিধি না মানাই করোনার সেকেন্ড ওয়েভের কারণ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, করোনার সেকেন্ড ওয়েভের (দ্বিতীয় ঢেউ) কারণ হলো আমরা স্বাস্থ্যবিধি মানছি না। আমরা একটু বেপরোয়া হয়ে চলছি। মাস্ক ব্যবহার করছি না, অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হয়ে গেছি।

রোববার (২৯ নভেম্বর) হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএমসি) উদ্যোগে 'করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা ও ভ্যাকসিন বিষয়ক' আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও কিছুটা সংক্রমণ বেড়েছে এবং গত দশ-পনেরো দিন ধরে মৃত্যুহারও বৃদ্ধি পেয়েছে। শীতকালে বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয়, মানুষ পিকনিকে যায়। কিছুদিন আগে দেখেছি কক্সবাজারে সমুদ্রের পাড়ে লাখ মানুষ ঘোরাফেরা করছে। সেখানেই মানুষ সংক্রমিত হচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, শীতকালে অনেক অনুষ্ঠান হয়। এ সময় অন্যান্য রোগও বেশি হয়। আমাদেরও সেকেন্ড ওয়েভের আশঙ্কা রয়েছে, যেটা প্রধানমন্ত্রী বলেছেন। কিন্তু আপনারা স্বাস্থবিধি মানছেন না। বিভিন্ন জায়গায় মাস্ক না পরার কারণে জরিমানা করা হচ্ছে। মানুষকে জরিমানা করা আসলে কষ্ট দেওয়ার জন্য নয়, সচেতন করতে।

বেসরকারি মেডিক্যালগুলোর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা আপনাদের বিভিন্ন হাসপাতালের কথা বলেছেন, প্রস্তুতির কথাও বলেছেন। সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতাল মিলে ইনশাআল্লাহ আমরা সেকেন্ড ওয়েভ মোকাবিলা করতে পারবো। বরাবরই প্রাইভেট মেডিক্যাল হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনোস্টিক সেন্টারগুলো আমাদের সহযোগিতা করে আসছে। আশা করি আগামীতেও তারা আমাদের বেশি বেশি সহযোগিতা করবে এবং আমরাও তাদের সব প্রয়োজনে পাশে থাকবো।

করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশের অবস্থা অন্য দেশের থেকে অনেক ভালো উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ইউরোপ-আমেরিকা এবং পাশের দেশ ভারতে দেখুন- তারা অনেক উন্নত দেশ, টেকনোলজির দিক থেকে আমাদের থেকে বেশ এগিয়ে। তারপরেও তাদের বেহাল অবস্থা। তাদের মৃত্যুহারও অনেক বেশি। আমরা সীমিত সম্পদ সীমিত ব্যবস্থা নিয়েই অনেক ভালো করেছি। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড এখন আমাদের ভালো চলছে। প্রধানমন্ত্রী সব সেক্টরে প্রণোদনা দিয়েছেন। শুধু শিক্ষা কার্যক্রম আমরা সম্পূর্ণরূপে শুরু করতে পারিনি, ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের কথা ভেবে। তবে অনলাইনে ক্লাস হয়েছে।

জাহিদ মালেক বলেন, ডব্লিউএইচও অনেক বার চিকিৎসা পদ্ধতি পরিবর্তন করেছে। করোনার শুরুর দিকে এটা মোকাবিলায় ব্যবহৃত অনেক কিছুই আমাদের ছিল না এটা দোষের কিছু নয়। প্রথমে আমরা জানতাম না আসলে কি কি লাগবে। শুরুতে আমরা ভাবতাম বেশি বেশি ভেন্টিলেটর লাগবে। কিন্তু আসলেই প্রয়োজন ছিল সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেমের, নেজল ক্যানোলা, বেড বাড়ানো, পিপিই ও ল্যাবের প্রয়োজন। এই বিষয়গুলো আমরা আস্তে আস্তে শিখেছি। অন্যান্য দেশ থেকে এবং ডব্লিউএইচও থেকে। কিন্তু আমরা দেরি করিনি, তড়িৎ গতিতে শেষ করেছি।

ভ্যাকসিনের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, সরকার ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করছে। এখনও কোনো ভ্যাকসিন বাজারে সেভাবে আসেনি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউ এইচও) অনুমোদন দিলে প্রথম ধাপেই আমরা ভ্যাকসিন পেয়ে যাবো।

দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় প্রস্তুতির বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আইসিইউ-বেড বাড়াতে হবে। করোনা রোগীদের পাশাপাশি যাতে অন্যান্য রোগীদেরও ভালো সেবা দেওয়া যায়। এরই মধ্যে সব সরকারি হাসপাতালগুলোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আপনারাও (বেসরকারি হাসপাতাল) সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখেন।

বিটিএমসির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন চিকিৎসা শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আলী নূর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এ বি এম খুরশিদ আলম, বিপিএমসিএ’র সভাপতি এম এ মুবিন খান প্রমুখ।

ঢাকা/সাইফুল/এসএম

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়