ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

বিপ্লব বসত করে যেখানে (পর্ব-১)

তিতাস আনন্দ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৪৫, ২ ডিসেম্বর ২০২০   আপডেট: ০৮:৪৭, ২ ডিসেম্বর ২০২০

মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর, বে-টার্মিনাল ও কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ এখন স্বপ্ন নয়। সাগরের নোনা জলের প্রশস্ত ঢেউয়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বঙ্গোপসাগরে উড়ছে উন্নয়নের শঙ্খচিল। আর মাত্র বছর পাঁচেক পরই বাংলাদেশ হয়ে উঠবে ‘দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম অর্থনৈতিক হাব‘।

সিঙ্গাপুরের চেয়ে কম দূরত্বে থাকায় মাতারবাড়ি ব্যবহার করে সাশ্রয়ী মূল‌্যে পণ্য পরিবহন করতে পারবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ। বে-টার্মিনাল থেকে রেল, সড়ক ও জলপথে পণ্য যাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিহন হবে সহজ ও সাশ্রয়ী।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সম্ভবনার এই কপাট মেলে ধরার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অবদান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। এশিয়ায় অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশের যে মজবুত অবস্থান, তার কৃতিত্বও তার। মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর, বে-টামিনাল, মেরিন ড্রাইভ, বাংলাদেশ-ভারতের রেল-সড়ক সংযোগ তথা কানেক্টিভিটি নিয়ে সরেজমিন প্রতিবেদন করতে মাঠে নামে রাইজংবিডি।

চট্টগ্রামে মেরিন ড্রাইভ ধরে পতেঙ্গা অভিমুখে এগিয়ে যাওয়ার সময় ডান পাশে দেখা গেলো বে-টার্মিনালের বিশাল সাইনবোর্ড। ঘাড় উঁচিয়ে তাকাতেই চোখে পড়ে সেনাবাহিনীর সদস্যদের ব্যস্ততা। টার্মিনাল নির্মাণের দায়িত্বে আছে সেনাবাহিনী। বে-টার্মিনাল নির্মাণ সম্পন্ন হলে উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য আরও বাড়বে। বিশেষ করে, সাত রাজ্যকে ঘিরে মাথা উচুঁ করা সম্ভবনা কাজে লাগাতে উভয় দেশের উদ্যোগ আছে। সময় বাঁচিয়ে নিরাপদে ও সাশ্রয়ী মূল‌্যে পণ্য পরিবহনের লক্ষ‌্যে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণে হাত লাগানো হয়েছে।

বর্তমানে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে পণ্যবাহী হাজার হাজার জাহাজ আসছে। আমাদানি-রপ্তানির অন্যতম প্রধান বন্দর চট্টগ্রাম। বিশাল জাহাজে অজস্র কন্টেইনার। এ দৃশ্য বাঙালির অহঙ্কার।
চট্টগ্রাম বন্দর উন্নয়ন ও গবেষণা পরিষদের সভাপতি কমোডর (অব) জুবায়ের আহমদ রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘যেকোনো সম্ভবনার সঙ্গে কিন্তু আশঙ্কারও উপস্থিতি থাকে। আজ বাংলাদেশের যে অর্থনৈতিক উত্থান তা কীভাবে নিষ্কণ্টক করা যায়, সে বিষয়টি চিহ্নিত করতেই আমাদের গবেষণা।’

এ গবেষক বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর, বে-টার্মিনাল, কর্ণফুলী নদীতে বঙ্গবন্ধু টানেল  এবং পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল (পিটিসি) ঘিরে অর্থনীতির দক্ষিণ দুয়ারে পরিণত হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম। এই বিষয়টিকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সড়ক, রেল ও নৌপথে যোগযোগ ব্যবস্থার ওপর জোর দিয়েছেন। মেরিন ড্রাইভ গিয়ে মিলবে মিরসরাই অর্থনৈতিক জোনে। পাশাপাশি ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোর সঙ্গে সংযোগ রক্ষায় এরই মধ্যে খাগড়াছড়ির রামগড়ে ফেনী নদীর ওপর বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতুর নির্মাণকাজ প্রায় সম্পন্ন। এখানে রেলসংযোগও হবে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে রামগড় মৈত্রী সেতুর দূরত্ব ১২০ কিলোমিটার।  অপর দিকে ফেনী থেকে ত্রিপুরার সাব্রুম পর্যন্ত মাত্র ২৭ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ হলেই চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য নিয়ে দিনে দিনে ত্রিপুরা ও পাশ্ববর্তী রাজ্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে।’

চলবে…

ঢাকা/ইভা/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়