ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

প্রণোদনা ঋণ অনেকেই পাচ্ছেন না, ব্যবস্থা নিন: পরিকল্পনামন্ত্রী

বিশেষ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৪১, ৩ ডিসেম্বর ২০২০  
প্রণোদনা ঋণ অনেকেই পাচ্ছেন না, ব্যবস্থা নিন: পরিকল্পনামন্ত্রী

করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র শিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ কিছু ব্যাংক দিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এছাড়া, সামাজিক নিরাপত্তারবেষ্টনির বাইরে থাকা হতদরিদ্রদের জন্য পাঠানো অর্থও পুরোটা কেন বিতরণ করা সম্ভব হয়নি, তা খতিয়ে দেখতে বলেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে কোভিড-১৯ মোকাবিলা এবং টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া প্রণোদনা প্যাকেজের দ্বিতীয় পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথির ভাষণে এ নির্দেশনা দেন পরিকল্পনামন্ত্রী। সিরিজ সভার দ্বিতীয় দিনে ‘কর্মসৃজন ও গ্রামীণ অর্থনীতি পুনরুজ্জীবন’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আবদুর রউফ তালুকদার।

সভায় প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. মাসুদুর রহমান, বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানিত ফেলো অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিপি) আবাসিক প্রতিনিধি ড. মনমোহন প্রকাশ, এফবিসিসিআইর সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সদস্য ড. শামসুল আলম। 

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দিতে সরকার অর্থ পাঠাচ্ছে, কিন্তু তার বড় একটা অংশ যাদের কাছে যাওয়ার কথা তা তাদের কাছে যাচ্ছে না বা অনেকেই সহায়তা পাচ্ছেন না। কেন যাচ্ছে না, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আমি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও অর্থ সচিবকে অনুরোধ করছি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের অর্থ ছিল, অর্থ দিয়েছি। যদি কোনো ব্যাংক কথা বা আইন না মানে, তাহলে প্রয়োজনে ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রণোদনার পর প্রণোদনা, এটা সমস্যা সমাধানে স্থায়ী ব্যবস্থা হতে পারে না। নিজের পায়ে দাঁড়ানোর সক্ষমতা অর্জনে উদ্যোগ নিতে হবে। এজন্য প্রণোদনা ভর্তুকি কমিয়ে যদি পলিসি সাপোর্ট বেশি দেওয়া হয় ও বিদ্যমান ব্যবস্থার সংস্কার করা হয়, তাহলে বেশি রিটার্ন আসবে। আমাদের উদারতার মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে।’

এমএ মান্নান বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কৌশলের মূল বার্তাটি হচ্ছে স্বাবলম্বী হওয়া। আমাদের অনেক অর্জন আছে। আরও কাজ করতে হবে আমাদের। আমাদের সবাইকে সার্বিকভাবে নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে। তবে সবচেয়ে বড় সমস্যাটা হলো মিস টার্গেটিং। এর ফলে আমরা সার্বিকভাবে রিটার্ন কম পাচ্ছি। আমাদের এ প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘দেশের এসএমই খাতে টাকা যাচ্ছে না, কিন্তু কেন? কারণ, অধিকাংশ উদ্যোক্তার ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ নেই। তারা পারিবারিকভাবে ব্যবসা পরিচালনা করেন। তারা ব্যাংকে যান না। তাদেরকে ব্যাংকের আওতায় আনতে উদ্যোগ নিতে হবে। তা না হলে প্রণোদনা কাজে আসবে না।’

তিনি বলেন, ‘অনেকেই আশঙ্কা করেছিল যে, করোনায় আমাদের অবস্থা আশঙ্কাজনকভাবে খারাপ হবে। কিন্তু আমরা ভালো লড়াই করেছি। ফলে অনেক তাড়াতাড়ি উঠে দাঁড়িয়েছি।’

রেমিট্যান্স প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘করোনাকালেও রেমিট্যান্স অনেক বেড়েছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।’

এডিবির আবাসিক প্রতিনিধি মনমোহন প্রকাশ বলেন, ‘করোনাভাইরাসের প্রথম ধাক্কা বাংলাদেশ দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলা করেছে। এ থেকে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে, সেটা কাজে লাগিয়ে আরও দক্ষতার সঙ্গে দ্বিতীয় ধাক্কাও মোকাবিলা করতে পারবে।’

তিনি কৃষিজাত পণ্যের ন্যায্যমূল‌্যের দিকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘সাপ্লাই চেইনে কোথাও সমস্যা আছে। সেদিকে সরকারের নজর দেওয়া উচিত।’

কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন এডিবির আবাসিক প্রতিনিধি।

ঢাকা/হাসনাত/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়