ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

কৃষিপণ‌্যের দাম বেঁধে দিচ্ছে সরকার, চলবে নিয়মিত তদারকি

আসাদ আল মাহমুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৫৩, ৯ ডিসেম্বর ২০২০   আপডেট: ১৯:০৯, ৯ ডিসেম্বর ২০২০
কৃষিপণ‌্যের দাম বেঁধে দিচ্ছে সরকার, চলবে নিয়মিত তদারকি

বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতে কৃষিপণ্যের দাম নির্ধারণের পরিকল্পনা করছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে কৃষিপণ্যের দাম মনিটরিংয়ের লক্ষ‌্যে কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে পণ‌্য বিক্রি হচ্ছে কি না, তা মনিটরিং করবে তদারদিক দল।  

সংশ্লিষ্ট্র সূত্রে জানা গেছে, মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম‌্য ঠেকাতে সরকারের কৃষি বিপণন অধিদপ্তর  কাজ করছে। শুরুতে  চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজসহ অন্তত ২২টি পণ্যের মূল্য বেঁধে দেবে সরকার।  এজন্য প্রান্তিক কৃষকপর্যায়ে পণ্যের উৎপাদন খরচ সংগ্রহ করছে অধিদপ্তর। আগামী মার্চ-এপ্রিল থেকে এই কার্যক্রম শুরু হবে।

উৎপাদন বেশি হলে কৃষক বাজারে পণ্যের দাম পায় না। অথচ কৃষকের সেই পণ্যই মধ্যস্বত্বভোগীরা ভোক্তার কাছে কয়েকগুণ বেশি দামে বিক্রি করেন। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে কৃষিপণ‌্যের মূল্য যাচাই-বাছাই করবে কমিশন। সেই লক্ষ‌্যে বাজার মনিটরিং করে যেসব পণ্যের মূল্য তালিকা সংরক্ষণ করা হচ্ছে। বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকায় পণ্যবহনকারী পরিবহন  খরচের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এই বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করে মূল্য নির্ধারণ করা হবে। 

ইতোমধ্যেই অনেক পণ্যের প্রাথমিক উৎপাদন খরচ নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছেন কর্মকর্তারা। ওই প্রতিবেদন অধিদপ্তর থেকে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদনের পর কৃষি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক হবে।

সূত্র আরও জানায়, চাল, ডাল, ভোজ্য তেল, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, আলু, শিম, মুলা, মিষ্টি কুমড়া, মুরগি, ডিম, গরুর মাংসসহ ৪৫টি পণ্যের যৌক্তিক পাইকারি ও খুচরা দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।  পণ্যের প্রতিদিনের খুচরা ও পাইকারি দাম সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে।   

এ বিষয়ে কৃষি অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন,‘যুক্তরাজ্য, চীন, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে কৃষি পণ্য মূল্য কমিশন রয়েছে। তারা পর্যালোচনা করে মূল্য বেঁধে দেয়। বাজারে পণ্য উদ্বৃত্ত হলে সরকারের পক্ষ থেকে কিনে সুবিধাজনক সময়ে  বিক্রি করা হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভারতে মূল্য কমিশন গঠন করা হয়েছে ১৯৬৫ সালে। তারা কৃষিপণ্যের জন্য পাঁচটি আলাদা  প্রতিবেদন  সরকারের কাছে জমা দেয়। আমরা ভারতসহ বিভিন্ন দেশের বাজারমূল‌্য ও সরকারের কার্যক্রম বিশ্লেষণ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবো।’ 

কৃষি অর্থনীতিবিদ  জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সমস্যা সঠিকভাবে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে না পারলে বাজারজাতকরণ সমস্যার সমাধান কঠিন হবে। এ জন্য একটি  কমিশন গঠন করা প্রয়োজন। এতে কৃষিপণ্যের মূল্য নির্ধারণ করা যাবে। এ ছাড়া বিভিন্ন  এলাকায় কোল্ড স্টোরেজ স্থাপন করতে হবে। ভারতে ২২/২৩টি কৃষিপণ্যের দাম নির্ধারিত হয়। আমাদের দেশে  দাম নির্ধারণ করলে কৃষক ও ভোক্তার উভয়ের জন্য  ভালো হবে।’

কৃষি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ  বলেন,‘কৃষিপণ্যগুলোর মূল্য বেঁধে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছি।  মূল্য বেঁধে দেওয়ার পর  সেটা মানা হচ্ছে কি না, তা কঠোরভাবে মনিটরিং করা হবে। দৈনন্দিন মূল্য তালিকা বাজারে দেখানো হবে।’ সেই আলোকেই কেনা-কাটা করতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।   

আসাদ/এনই

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়