ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

‘ভাস্কর্যবিরোধিতার নেপথ‌্যে বিশৃঙ্খলা তৈরি’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৩৩, ১৩ ডিসেম্বর ২০২০   আপডেট: ১৫:৪৪, ১৩ ডিসেম্বর ২০২০
‘ভাস্কর্যবিরোধিতার নেপথ‌্যে বিশৃঙ্খলা তৈরি’

দেশে বিশৃঙ্খলা তৈরির জন্য রাজনৈতিক উদ্দেশ‌্যে হেফাজতে ইসলাম ভাস্কর্যের বিরোধিতা করছে বলে দাবি করেছে হক্কানি আলেম সমাজ। ভাস্কর্য নিয়ে হেফাজত ইসলাম যে বক্তব্য দিয়েছে, তার মধ্যে একটি বিশেষ উদ্দেশ্য আছে বলেও মনে করছে সংগঠনটি।

রোববার (১৩ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এক সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত আলেমরা এসব কথা বলেন। ‘হক্কানী আলেম সমাজ’ এর ব্যানারে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আলেমরা বলেন, ‘হেফাজতে ইসলাম সমাজের মানুষকে একটি বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলতে এ ভাস্কর্যবিরোধী আন্দোলন করছে।  মুসলিম বিশ্বের প্রতিটি দেশেই ভাস্কর্য রয়েছে আর বাংলাদেশে ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি হিসেবে বহু বছর ধরেই ভাস্কর্য রয়েছে।’

‘হেফাজত আগে কখনো ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে কথা বলেনি।  আজ বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা করা মানে কোনো অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ‌্য হাসিলের জন্য এ আন্দোলন করছে।’

অধ্যক্ষ মাওলানা মো. আব্দুল হাকিম চৌধুরী বলেন, ভাস্কর্য জায়েজ-এই কথা আমি বলছি না। কিন্তু বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা তো ইসলাম সমর্থন করে না।  মামুনুল হকের পিতা আল্লামা শায়খুল হাদিসকে নিয়ে আমরা কওমি স্বীকৃতির জন্য আন্দোলন করেছিলাম। বঙ্গবন্ধু কন্যা আমাদের স্বীকৃতি দিয়েছেন। আমরা তাকে কওমি জননী বললাম।  জননীর সঙ্গে সন্তানের সম্পর্ক হবে মধুর।

‘আমাকে কিছু বললেও সংবাদ সম্মেলন করে, রাস্তায় দাঁড়িয়ে মায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে পারি না। আজকে হেফাজতে ইসলাম ইসলামের হেফাজতকারী হয়ে এ রকম করছে’, বলেন তিনি।

মাওলানা ইলিয়াস ইব্রাহিম বিক্রমপুরী বলেন, ‘বাংলাদেশেও বহু আগে থেকেই অনেক ভাস্কর্য আছে। জিয়ারও ভাস্কর্য আছে। কিন্তু এই ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার কথা কেউ কখনো বলেনি বা বাধাও দেয়নি। হঠাৎ করে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিরোধিতা করে কেউ কেউ সমাজে ফেতনা- ফাসাদ তৈরি করতে চাচ্ছে।’

‘যারা ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে ফতোয়া দিচ্ছে, তারা মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের বিধর্মী এবং কাফের বলেছিল। এক সময় মানুষের চাঁদে যাওয়া বিশ্বাস করতে এমনকি টেলিভিশন দেখাকেও কেউ কেউ বাধা দিয়েছিল।’

তিনি বলেন, ‘ভাস্কর্যের মতো এক সময় ছবি এবং ইংরেজি শিক্ষাকেও হারাম বলা হয়েছিল। এমনকি পবিত্র হজ্জে যাওয়ার জন্য ছবি তোলা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছিল, যা সবই পরে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সঠিক বলেই প্রতীয়মান হয়েছে।’

সংগঠনের নেতারা বলেন, ভাস্কর্যের কয়েকটি দিক আছে। ভাস্কর্যের সাংস্কৃতিক, ধার্মিক এবং রাজনৈতিক দিক আছে।  আমরা আমাদের ছোট বাচ্চাদের পুতুল কিনে দেই।  সেটা কিন্তু ভাস্কর্যের অংশবিশেষ। আমাদের প্রিয়জনদের ছবি আমরা ঘরে টানিয়ে রাখি, সেটাও ভাস্কর্যের অংশ।

এ সময় মুফতি সোলায়মান বিন কাশেম, ক্বারি হাফিজুল হক প্রমুখ বক্তব্য দেন।

 

 পারভেজ/সাইফ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়