ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

দুর্যোগ মোকাবিলায় টিআইবির ১২ সুপারিশ

নিউজ ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:০৫, ২৫ ডিসেম্বর ২০২০   আপডেট: ১৬:০৭, ২৫ ডিসেম্বর ২০২০
দুর্যোগ মোকাবিলায় টিআইবির ১২ সুপারিশ

প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার সক্ষমতা ও প্রস্তুতিতে যথেষ্ট অগ্রগতি হলেও বাংলাদেশের আত্মতুষ্টির সময় আসেনি বলে মনে করছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। কারণ, ক্রমবর্ধমান প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং বিদ্যমান সুশাসনের ঘাটতির কারণে এখনও বছরে জাতীয় আয়ের প্রায় ২ দশমিক ২ শতাংশ ক্ষতি হয়। এসব ঘাটতি নিরসন করা হলে জাতীয় আয়ের বিশাল ক্ষতি কমানো সম্ভব। তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় ১২ দফা সুপারিশ করেছে সংস্থাটি।

বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) ‘দুর্যোগ মোকাবিলায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়: ঘূর্ণিঝড় আম্ফানসহ সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব সুপারিশ করা হয়।

টিআইবির সুপারিশগুলো হলো—

১. সতর্কবার্তা প্রদান পদ্ধতি হালনাগাদ করে সাধারণ জনগণের বোধগম্য ভাষায় প্রচার করা।

২.ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলগুলোকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে যথাসময়ে পূর্বাভাস ও সতর্কবার্তা দেওয়া।

৩. বেশি বিপদাপন্ন পরিবার ও এলাকাকে প্রাধান্য দিয়ে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম স্বচ্ছতার সঙ্গে পরিচালনা করা।

৪. ত্রাণ ও পুনর্বাসন সংক্রান্ত তথ্য জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে তথ্য বাতায়নের মাধ্যেমে সবার জন্য উন্মুক্ত করা।

৫. আপৎকালীন পরিস্থিতি ও দুর্যোগের ঝুঁকি বিবেচনায় স্থানীয় পর্যায়ের কমিটি, স্বেচ্ছাসেবক দল ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনের কার্যকর অংশগ্রহণে দুর্যোগ মোকাবিলার প্রস্তুতি নেওয়া।

৬. শিশু, বৃদ্ধ, নারী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ সুবিধাসংবলিত ও এলাকাভিত্তিক আশ্রয়কেন্দ্র নিশ্চিত করা।

৭. আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা বিবেচনা করে আশ্রয়কেন্দ্রে পর্যাপ্ত খাদ্য, পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও জরুরি চিকিৎসাসেবার প্রস্তুতি গ্রহণ এবং তা সরবরাহ নিশ্চিত করা।

৮. স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে সম্পৃক্ত করে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর নেতৃত্বাধীন অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতিতে দুর্যোগ সহনশীল এবং টেকসই অবকাঠামো নির্মাণ, সংস্কার ও পুনর্নির্মাণ।

৯. প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতাসহ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কার্যক্রমে দুর্নীতি, অনিয়ম এবং অপচয় বন্ধে জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা।

১০. অনিয়ম-দুর্নীতির স্বচ্ছ তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও ফৌজদারি ব্যবস্থার মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।

১১. দুর্যোগের কারণে বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোর জীবিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, নতুন জীবিকার সুযোগ সৃষ্টি এবং দুর্যোগ মোকাবিলায় তাদের সক্ষমতা তৈরি করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা।

১২. প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা, বিশেষ করে নেদারল্যান্ডসের মতো দেশের পানি ব্যবস্থাপনার অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে উপকূলীয় অঞ্চলকে সুরক্ষার জন্য একটি মহাপরিকল্পনা নেওয়া।

সংবাদ সম্মেলনে ভার্চুয়ালি অংশ নেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, উপদেষ্টা ও নির্বাহী ব্যবস্থাপনা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের এবং গবেষণা ও পলিসি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসান। প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসন ইউনিটের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. নেওয়াজুল মওলা এবং জলবায়ু অর্থায়নে পলিসি ইন্টিগ্রিটি প্রজেক্টের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার কাজী আবু সালেহ। গবেষক দলের অন‌্য সদস্যরা হলেন—জলবায়ু অর্থায়নে পলিসি ইন্টিগ্রিটি প্রজেক্টের ম্যানেজার মো. মাহ্ফুজুল হক, জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসন ইউনিটের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. রাজু আহমেদ মাসুম এবং সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার মু. জাকির হোসেন খান। সঞ্চালনা করেন আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক শেখ মনজুর-ই-আলম।

ঢাকা/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়